অর্দ্ধ-ভোজনে অর্দ্ধ-দক্ষিণা ‍দান

এক হোটেলে হোটেলওয়ালা ও তার কোন বন্ধুর সঙ্গে কথাবার্তা হচ্ছিল, এমন সময় দেখে যে গোপাল হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে। ওই বন্ধুটি হোটেলের বন্ধুকে বলল, ওই লোকটাকে জব্দ করতে পারবে? হোটেলওয়ালী বলল এ এমন কি?
রাস্তায় হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে গোপাল এক বন্ধুর জন্যে অপেক্ষা করছিল। হোটেলে মাংস-রান্না হচ্ছে। হঠাৎ হোটেলওয়ালা গোপালকে জব্দ করার জন্য ছুটে এসে তাকে বললে, মশাই। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মাংসের গন্ধ শুঁকছেন নিশ্চয়ই দাম দিন শিগগির। গোপাল তো অবাক। কতক্ষণ পর বিস্ময়টা কাটিয়ে উঠে বললে তোমার মাংসের গন্ধ শোঁকবার জন্যে আমি এখানে দাঁড়াইনি। দাঁড়িয়েছি, এক বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছি ওর দরকারের জন্য। রাস্তাটা তো তোমার হোটেলের ইজারা মহল নয়। রাস্তাটা সরকারের অতএব, তোমার বলার কিছু নেই।
হোটেলওয়ালা ঝাঁজের সঙ্গে বললে তা’তে কি হয়েছে? ঘ্রাণেন অর্দ্ধ-ভোজনং। গন্ধ শুঁকলেই অর্দ্ধেক খাওয়া হলো। এক ডিশ মাংসের দাম আট আনা, তার অর্দ্ধেক চার আনা আপনাকে দিতে হবে।
তখন আট আনাতেই বড় এক প্লেট মাংস পাওয়া যেত। গোপাল চার আনার একটি সিকি পকেট থেকে বার করে হোটেলওয়ালার কানের কাছে ঠং ঠং করে বাজালে বারকতক। তারপর আবর সেটিকে পকেটে রেখে দিয়ে বললে ঘ্রাণে যদি অর্দ্ধেক-খাওয়া হয়, তবে শ্রবণেও অর্দ্ধেক পাওয়া হয়েছে। পয়সার বাদ্যি শুনেছো। গন্ধ-শোঁকার সঠিক দাম পাওয়া গেছে তোমার।
কথা কাটাকাটি শুনে সেখানে যেসব পথচারী দাঁড়িয়ে ভিড় করেছিলেন, তারা হেসে উঠলো হো হো কর। হোটেলওয়ালা মুর্খের মত জবাব পেয়ে মুখটি চুর্ন করে হোটেলের ভিতর চলে গেল গোপালের উপর টক্কর দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু গোপালকে জব্দ করতে এসে নিজেই জব্দ হয়ে গেল জব্বর ভাবে।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!