অপদেবতা◄

আমাদের গ্রামের বাড়িতে কোন একটা অনুষ্ঠান উপলক্ষে একবার অনেক আত্মীয়স্বজন এসেছিলো।। অনুষ্ঠানটি হয় রাতে বেলা।। অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে অনেক রাত হয়ে যায়, ফলে যাদের বাড়ি দূরে তারা সবাই ঠিক করে যে আজ এখানেই থাকবে।। মামার বাড়িতে মোট ৫ টা ঘর আর একটা বাংলো ঘর।। বাংলো ঘরটা তেমন একটা ব্যাবহার করা হয় নাহ।। বাংলো ঘরের ডান পাশে কিছুটা দূরে গোয়াল ঘর।। যেহেতু, অনেকেই রাতে থাকবে, তাই ঘরের অভাব শর্ট পড়ে গেলো।। তাই মামামামি সিদ্ধান্ত নিলো তারা তাদের ঘরটা ছেড়ে বাংলো ঘরে চলে যাবে।। রাতটা সেখানেই কাটাবে।।

তখন রাত প্রায় ২টা।। মামার টয়লেট চাপায় তিনি জেগে উঠেন।। উনি দরজা খুলে বাইরে উঠোনে একটু দূরেই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিচ্ছিলেন।। এমন সময় তিনি একটা শব্দ শুনতে পান।। তিনি এদিক ওদিক তাকান।। হটাৎ টার দৃষ্টি যায় গোয়াল ঘরের দিকে।। তিনি দেখতে পান গোয়াল ঘর থেকে তাদের সাদা রঙের গরুটা কিভাবে যেনও বের হয়ে পড়েছে।। মামার তখন মনে পড়ে গোয়াল ঘর সন্ধার পর সবসময় তালা লাগানো থাকে।। গরুটা বের হয়ে সোজা হাঁটতে শুরু করে দেয়।। গোয়াল ঘরের ঠিক পিছনেই একটা বড় আকারের ঝোপ।। অনেকটা জঙ্গলের মত।। মামা গরুটার পিছু নেয়।।

এদিকে মামার দেড়ি দেখে মামির ও ঘুম ছুটে যায়।। তিনি বাইরে এসে দাঁড়ান এবং দেখতে পান মামা হাঁটছে আর তার সামনে একটা সাদা কিছু।। মামি ভয় পেয়ে চিৎকার করে মামাকে ডাক দেন।। কিন্তু মামা মামির ডাক শুনতে পেয়েও না থেমে উল্টো হাঁটতে থাকেন।। মামি ভয় পেয়ে ছুটে গিয়ে মামাকে থামান।। মামা তখন কেমন যেনও একটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন।। তিনি বার বার বলতে থাকেন, “আমাদের গরুটা চলে যাচ্ছে।। আমাদের গরুটা চলে যাচ্ছে।।” কিন্তু মামি বলেন ঐটা আমাদের গরু না, তারপর তাকে জোর করে ঘরে নিয়ে আসেন।। সকালে মামামামি ২জনই গোয়াল ঘোরের তালা পরীক্ষা করে দেখেন তালা দেয়াই আছে।। আর সবকটা গরুই ঠিকঠাক মতন নিজ নিজ জায়গায় আছে।। মামি তখন মামাকে বলেন, গতকাল রাতে তাকে “নিশা” (আমাদের গ্রামে অপদেবতা বলে পরিচিত) ডাকছিল।। তিনি (মামি) যদি তখন না উঠতেন ঘুম থেকে আর মামাকে না থামাতেন, তাহলে গরু রূপি “নিশা” মামাকে বনের ভেতর নিয়ে মেরে মাটিতে গলা অব্দি পুঁতে রাখতো।।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!