অতি গরিব এক অন্ধ। তার ভারি দুঃখ—তার ঘরবাড়ি নেই, টাকা-পয়সা নেই, ছেলেপিলে নেই, আর সে চোখে দেখতে পায় না। মনের দুঃখে অনেক কষ্টে তার দিন কাটে।
একদিন স্বর্গ থেকে দেবদূত এসে বললেন, “ওরে অন্ধ, তুই আর কাঁদিস নে, আমি তোকে বর দিতে এসেছি। তুই কী বর চাস আমায় বল। একটিমাত্র বর তুই পাবি, সুতরাং ভালো করে ভেবে-চিন্তে বলিস।”
অন্ধ কী বর চাইবে ভেবেই পায় না। একবার বলতে চায়, “আমার চোখে দৃষ্টি এনে দাও”—আবার ভাবে, “শুধু দৃষ্টি দিয়ে করব কী, বলি টাকাপয়সা দাও কিংবা ঘরবাড়ি দাও।” আবার তার মনে হয়, “টাকাপয়সা, ঘরবাড়িই বা কার জন্য চাই—আমার ছেলেপিলে কেউ নেই। আর দু’দিন বাদেই যদি মরে যাই, তাহলে এ-সব চেয়েই বা লাভ কী? আর সব পেয়েও যদি মনের সুখটুকু না পাই, তাহলে তো সবই বৃথা।”
তার ভাবনা দেখে দেবদূত বললেন, “আচ্ছা, তুই এখন না বলতে পারিস, নাহয় আমি কাল আবার আসব, তখন বলিস। এর মধ্যে ভালো করে ভেবে রাখ।”
অন্ধ বেচারার আর সারারাত ঘুমই হল না। ভোরবেলা দেবদূত আবার ফিরে এসে বললেন, “আমি এসেছি—এখন কী বর চাস বল।”
তখন অন্ধের বুদ্ধিটা হঠাৎ কেমন খুলে গেল। সে লাফিয়ে উঠে বলল, “আমায় খালি এই বর দিন যে আমি যেন হাসতে হাসতে দেখে যেতে পারি যে আমার নাতি-নাতনিরা চৌতলা বাড়িতে সোনার পালঙ্কে বসে আমার চারিদিকে খেলা করছে।”
দেবদূত তার বর চাওয়ার বাহাদুরি দেখে হেসে বললেন, “আচ্ছা, তাই হোক।”
এক বরে অন্ধের ছেলেপিলে, ঘরবাড়ি, টাকাপয়সা, চোখের দৃষ্টি, অনেক বয়স আর মনের সুখ—সবই চেয়ে নেওয়া হল।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।