অধরা মাধুরী—- কাজল ঘোষ

স্বপ্নেরা নাকি স্বপ্নেই থাকে। এটা যেমন একটা কথা। আবার স্বপ্নেরা জাগায়। ঘুম ভাঙায়, এটও একটা কথা। স্বপ্ন দেখা অনেক বেশি জরুরি। নাশতার টেবিলে এটাই বারবার আওড়াচ্ছে আবীর।

পত্রিকায় চোখ বুলাতে বুলাতে মনে পড়লো ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে যাচ্ছে। ছোট একটা চাকরি। তাতে কি? সময় বেঁধে ছুটতে হয়। তবুও ভালো যে, অফিসে স্যুট-টাই পড়ার বাধা-ধরা নিয়ম নেই। সবাইকে স্যার স্যার করতে হয় না। বসিং বলে যে বিষয়টি আজকাল খুব বেশি প্রচলন তারও খুব একটা দরকার হয় না। তাই বলে শনি থেকে বৃহস্পতি এমনকি শুক্রবারেও অফিসের ঘানি টানতে হয়। এই হচ্ছে যন্ত্রণা। ভালো লাগা, মন্দ লাগা সবই ওই অফিসকেন্দ্রিক।
খুঁজে খুঁজে কাজের ফর্দ বানানো। একেক সপ্তাহে একেক আয়োজন। কখনও বক্তৃতা, কখনও বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, কখনও নতুন কোনো বিষয়ের সঙ্গে পরিচিতিমূলক অনুষ্ঠান।
বছরের নির্ধারিত দিবসে ব্যানার করে লোকবল নিয়ে লোক দেখানো শহীদ মিনার আর বুদ্ধিজীবীদের মাজারে যাওয়া। পরদিন পত্রিকায় ছবি ছাপা হলো কি না তা দেখা। এগুলোর পেপার কাটিং নিয়ে বসের টেবিলে দেয়। এই সব লোকদেখানো কাজ নিয়েই বেশি সময় কাটে। ফি বছর এ নিয়ে চলে খিস্তি-খেউর। নিজের বিরুদ্ধে নিজেই যুদ্ধ করছে আবীর। প্রতিনিয়ত একই কাজ আর ভালো লাগছে না আবীরের। কি করবে ছাইপাশ করা ছাড়া, এখন অন্য কিছু করার বয়েসও নেই।
আবীর এখন এই চক্রেরই অংশ হয়ে গেছে। প্রথম প্রথম অস্বাভাবিক লাগতো। এটা কি ধরনের ব্যাপার-সেপার। সবকিছু প্রথম প্রথম উল্টো মনে হতো। সারা বছর ভাষা নিয়ে কারো কোনো ভাবনা নেই। আর ফেব্র“য়ারি এলেই শুরু হয় মাতামাতি। রাত বারোটায় শহীদ মিনারে নামে মানুষের ঢল। এটা বড্ড অস্বাভাবিক নয় কি? সারা বছর জগাখিচুরি ভাষায় কথা বলা। আর ওই ফেব্র“য়ারি এলেই পত্রিকা-
টেলিভিশন সব যেন হুমরি খেয়ে পড়ে। বিশ্রি রকমের মায়া কান্নার প্রতিযোগিতা চলে পুরো মাস। আর সারা বছর শহীদদের অবমাননা আর একদিনই লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতার কথা মনে করা।
আবীরের হঠাৎ মনে পড়ে নওয়াজেশ আলী খানের কথা। এই নওয়াজেশ আলী টেলিভিশনের নন। তিনি এই দেশের প্রতিথযশা একজন আলোকচিত্রী। যিনি প্রকৃতি নিয়ে অনেক অসাধারণ কাজ করেছেন। একবার অফিসের কাজে স্যারের কাছে গেলে হিরোসিমা-নাগাশাকির গল্প শোনার সুযোগ হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এটমবোমায় ধ্বংসপ্রায় এই শহরে এখন কেবলই স্মৃতি। কিন্তু সেদিনের বোমায় যারা পঙ্গু হয়েছেন বিষাক্ত বোমায় তারা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় লোকজন সরে দাঁড়ায়। শ্রদ্ধা জানায় অবনত মস্তিষ্কে। কিন্তু আমাদের এখানে নয় মাস যুদ্ধ শেষে যারা লড়তে গিয়ে পঙ্গু হয়েছেন তাদের অবস্থা ভেবে কষ্ট হয় আবীরের।

 

ঘড়ির কাঁটায় এগারোটা।
ফতুয়া, প্যান্ট আর স্যান্ডেল। এই পোশাকই আবীরের বরাবরের সঙ্গী। তীব্র শীতেও পায়ে স্যান্ডেল নিয়েই পথ চলা তার অভ্যাস। যদিও বন্ধুদের নানা ধমক-ধামক থাকেই। এটা আঁতলামি। কবি কবি ভাব আর কি। এমন খুনশুঁটি চলতেই থাকে।
কোনো কিছুতেই গা করে না আবীর। পা জুতো-মুজোয় কিভাবে ঠেসে মানুষ পথ চলে এটাই তার কাছে এক ধরনের বিস্ময়। যদিও ছোটবেলা বইতে পড়েছে জাপানিরা নাকি মেয়েদের পা ছোট রাখতে লোহার জুতো পড়ার অভ্যেস করে।
দরোজা লাগাতে হঠাৎ মনে পরে আবীরের আজ না আষাঢ়। আষাঢ়ষ্য দিবসের শুরু। কবিগুরুর ঝরঝর মুখর বাদলদিনে আজ কদম হাতে ছুটতে হবে। শ্রীকান্তের আজ এই বৃষ্টির কান্না শুনে মনে পড়লো তোমায়। কি মনে করে আবারও পড়ার রুমে গিয়ে কানাডুলি থেকে সঞ্চয়িতাটা নিয়ে নিল।
বাসে বসে ভিড়ের মধ্যেও বই পড়ার অভ্যেস বহুদিনের। নগরীর যানজটের সৌন্দর্য যেমন এতে অনেক আকর্ষণীয় মনে হয়। তেমনি সময়টা এক ধরনের ভালোলাগাতে কেটে যায়। শুধু একটা সমস্যা হয় পাশের যাত্রীকে নিয়ে। যদি পাশের যাত্রীটি বইয়ের দিকে চোখ রাখে তখনই হয় উটকো ঝামেলা। কারণ, আবীর বইয়ের পাতা শেষ করে উল্টাতে গিয়ে বারবারই মনে হয় পাশের যাত্রীটি কি শেষ করেছে। নাকি আরও কিছু সময় পরে পাতা উল্টালে শেষ হবে। বেশির ভাগ সময় দৃষ্টি দিয়ে এটা অনুমান করার চেষ্টা করে আবীর।
বাসে ওঠার সময়ই খেয়াল হলো আকাশটা কেমন কালো। আষাঢ় বুঝি আসতে বাকি নেই। কিছুদূর চলতেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। হঠাৎ আরেকটা বদ অভ্যাসের কথা মনে পড়লো আবীরের। ওটা হলো ছাতা ব্যবহার না করা। কারণ ছাতা নিয়ে বের হলেই হারিয়ে ফেলে আবীর।
মতিঝিল থেকে অফিসের দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার।

শাহবাগ মোড়েই নামতে হবে আবীরকে।
রমনা পেড়িয়ে গাড়ি এগুচ্ছে। হঠাৎ এক ভদ্র মহিলার চিৎকার- যানজটে আটকে থাকা বাসের জানালা দিয়ে কে একজন মহিলার চেইন টান দিয়েছে। সঙ্গেই সঙ্গেই অন্য যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে মহিলার চারপাশে। সবার একই প্রশ্ন। কিভাবে নিলো? আপনি কি খেয়াল করতে পারেননি। আরও একটু ঢেকে রাখলেই এমনটি হতো না।
অতি উৎসাহী অনেক যাত্রী রাস্তায় নেমে পুলিশকে জানানোর জন্য পীড়াপিড়ি করতে লাগলো। এত কিছুর পর যাত্রীটিকে দেখে নির্ভিকারই মনে হলো। লোকজনের ভিড় কমলে আবীর কাছে গিয়ে জানতে চাইলো আপনার অনেক টাকার ক্ষতি হলো। মহিলা বিরস বদনে বললো- আরে ভাই এইডাতো দশ ট্যাহার চেইন।
ভিড়মি খাওয়ার অবস্থা আবীরের। অ- তাই নাকি। ভাই আমিতো চিৎকার দিয়েছিলাম গলায় ব্যথা পাচ্চিলাম এই কারণে। মহিলাটি গলার ছিলে যাওয়া অংশ দেখাতে চাইলে আবীর পিছিয়ে আসে। হঠাৎ আবীরের ছিঁচকে চোরের জন্য একটু খারাপই লাগলো। বেচারা যদি ধরা পরতো এই নকল চেইনের জন্য গণধোলাইয়ে মারা পরতো। একবার কোনো এক বিকালে রমনার আশপাশ দিয়ে হাঁটাহাঁটি করে এদের সঙ্গে দেখা করতে হবে। অন্তত এটা বলার জন্য- এই নকল চেইনের জন্য কেন জীবন খোয়াবেন। তারচে রমনা পার্কের গেটে পান-বিড়ির দোকান দিলেও চলে।
রাস্তার মোড়ে কদমফুল পেলে একগুচ্ছ কিনতে হবে।
– এই মিয়া নামবেন না?
বিকট আওয়াজ কানের কাছে।
-আরে মিঞা নামবোইতো। এত জোরে বলার কি হলো। পাঁচ ট্যাকার ভাড়া দিয়া দশ ট্যাকার পথ চলার ধান্দা। জলদি নামেন। ফাইজলামি করেন। কতো ভদ্রলোক দেখলাম। হাতে আবার রবীন্দ্রনাথ মারাইছেন।
-এই মিঞা বেশি বাড়ছো। তোমার ভাড়া কি না দিয়া নামমু বেশি গেলে।
– নামেনতো?
কিছু যাত্রী আবীরের পক্ষে ওকালতি করতে এগিয়ে এলেও আর বচসা করার সময় নেই। সিগন্যাল ছেড়ে দিলে এরপর বহুদূর যেতে হবে। তার চেয়ে নেমে পড়াই ভালো।
তাছাড়া ভিন্ন অভিজ্ঞতাও আছে। একবার মতিঝিলে অফিস পাড়ার এক গাড়িতে ভাড়া নিয়ে বচসা করায় সব বাসের হেলপাররা মিলে এক যাত্রীকে সুযোগ মতো কয়েক ঘা বসিয়ে দিয়েছিল।
আর অকথ্য ভাষায় গালি। শালা…. গাড়িতে আর জীবনে ওটছিস তো খাইছি তরে। শালা জমিদার হইছে। আশপাশ থেকে কজন না গেলে হয়তো ওইদিন লোকটিকে নাকানি-চুবানি খেতে হতো।
নেমেই দৌড়ে সংবাদপত্র স্টলের দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়ায় আবীর। ঝুম বৃষ্টি কমতেই দৌড় লাগাবে। হাত ভর্তি কমদ নিয়ে বৃষ্টির মধ্যেই ফুল বালিকারা ছুটোছুটি করছে। নেবে কিনা একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না সে। এক মন বলছে নিয়ে নিই। অন্য মন বলছে না থাক। মনে পড়ছে, শেষবার ফুল নিয়ে অফিসে ঢুকতেই নানা কথা শুনতে হয়েছে। কে দিল? নতুন কোনো প্রেমিক নাকি? কে? কোনো প্রেমটেম নেই তবু নিত্যি এসব শুনতেই হবে। যা হোক দশ টাকা দিয়ে এক গুচ্ছ কদম নিয়ে কাকভেজা হয়ে এক সময় অফিস পৌঁছায় আবীর।

 

পুরনো ছেড়া ক্ষয়ে যাওয়া স্যান্ডেল গায়ে ফতুয়া আর ঢোলা প্যান্টে আবীর যখন অফিসে ঢুকছে তখন পেছন থেকে ডাক পড়লো- কি মিস্টার?
ফিরতেই দেখে লনের পাশে দাঁড়ানো তিন/চার সহকর্মী। যা ভেবেছিল তাই। হাতে থাকা কদমের গুচ্ছ দেখে খুনশুঁটি শুরু করে দিল।
– কার জন্য?
-কদমের শুভেচ্ছা।
– ছাদে কেউ কি অপেক্ষায় আছে, নাকি টিএসসি হয়ে এলেন?
– আপনারই দিন?
আবীরও উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেয়।
– কেন? সবকিছু কি কবিদের দখলে যাবে? আমাদের কি মন বলতে কিছু নেই?
– দেখ না খোঁচা খোঁচা দাড়ি। সেভ করার সময় পাননি। নাকি লাইলির অভাবে।
আবীর সবকিছু পাশ কাটিয়ে নিজের টেবিলে গিয়ে বসে। অনেকগুলো কাজের ফাইল ছড়ানো-ছিটানো। কি জানি কি আছে আজ কপালে। সন্ধ্যায় মিটিং।
একরকম লুকিয়ে কদমগুলো বইয়ের ফাঁকে রেখে দেয়। জরুরি কিছু কাজের নোট লিখতে হবে।
হঠাৎ টেবিলে থাকা মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা।
– দুপুরে কি সময় হবে?
কেমন যেন অস্থিরতা শুরু হয়ে গেল ভেতরে ভেতরে। বার্তাটি পাঠিয়েছে দুটেবিল পরের শর্মীলা।
এ সময়তো অফিসেই থাকে শর্মীলা। তাহলে আবার বার্তা কেন?
যদিও এ মুহূর্তে সে টেবিলে নেই। বাইরে কোথাও কাজে আছে বোধ হয়। কে আবার কি ভাবে?
তাই খোঁজ না নিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে আবীর।
বরাবরই চাপা স্বভাবের শর্মীলা। কি করতে কি করবে বোঝা যায় না। হঠাৎ তার সঙ্গে বাইরে যাবে এটা নিয়ে আবার কোন ঝামেলায় পড়বে?
আবীরের অনেক কথাই মনে হতে লাগলো।
আবারও ফোনের শব্দ। শর্মীলা ফোন দিচ্ছে। কি করবে?
ফোন ধরলো না। এক অস্থিরতায় ঠেসে ধরলো আবীরকে।
ফের ফোন। শর্মীলা…।
– হ্যালো
– মিটিং-এ নাকি।
– না
– ফোন ধরেন না কেন?
– ম্যাসেজ পাঠালাম, পাননি?
– আসলে (আমতা আমতা করে) দেখতে দেরি হয়ে গেছে?
– আমাকে পাত্তা দিচ্ছেন না? প্রয়োজন বলেই খুঁজছি।
– একটু ঝামেলায় ছিলাম।
– আমাকে কি একটু সময় দেয়া যাবে?
– কখন?
– এই দুপুরের বিরতিতেই।
– ঠিক আছে।
– মৌচাকের মোড়ে অপেক্ষায় থাকলাম।

টেবিলের কাগজপত্র গুছিয়েই ছুট দিল আবীর। বের হওয়ার সময় বলে এলো হঠাৎ জরুরি তাকে বাইরে যেতে হচ্ছে। সন্ধ্যে হয়ে যেতে পারে ফিরতে। যাওয়ার সময় কগজের প্যাকেটে করে একটি কদম ফুল নিয়ে নিল। রিকশায় চড়তেই সে বারবার প্যাকেটের দিকে খেয়াল করছে। যদি ফুলটি কোনোভাবে ভাঁজ পরে যায় তাহলে কদমের পাপড়ি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আবীরকে আবারও এক অন্যরকম ভাবনায় ফেলে দিল। রিকশায় অনেক চড়েছে। কিন্তু আজ সবকিছু কেমন যেন ভাবালুতায় ঠাসা। একবার উস্কোকুস্কো আবার হেলেদুলে বসছে। তবু যেন স্বস্থি নেই। বারবার গলা ঠেকছে। একটু পানি খেলে মন্দ হতো না। এমন নানা ভাবনা শেষে রিকশা পৌঁছে মৌচাকে।
নেমেই দেখে শর্মীলা ওপারে একটি বার্গার শপের সামনে দাঁড়িয়ে। আবীর পকেটের অবস্থা সমঝে রাস্তা পাড় হতেই শর্মীলার আবদার স্বরূপ আওয়াজ।
– আমাকে কি মানুষ মনে হয় না?
– খুবই দুঃখিত।
– রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি আর কয়েকশ জোড়া চোখ খালি তাকিয়ে দেখলো।
– আপনিই একটা মানুষ। তেলাপোকাও একটা পাখি। ফড়িংও একটা ঘোড়া। তাও আবার দেখে।
– আমি যার সেই বুঝবে আমি কি?
মুহূর্তেই ফ্যাকাশে মুখ হয়ে যায় শর্মীলার। আবীর ব্যস্ততার ভান করে চলেন কোথায় বসবেন? কি খেতে চান?
– আপনি কি ভেবেছেন এখানে খেতে আসছি? আপনি ফোন সেট ভালো চিনেন তাই আপনাকে নিয়ে একটি ফোন কিনবো। তারপর কাজ শেষ।
– কি সেট?
– খুব একটা দামি কিছু না। হাজার পাঁচেকের মধ্যে একটি ফোন সেট কিনে দেবেন।
– আমার কাছে তো অত টাকা নেই। তাছাড়া বেতনও হয়নি।
– আরে মিঞা আপনার কিনে দিতে হবে না।
– বাপের টাকায় ফোন কিনতে আসছি। আপনার কাছ থেকে ফোন নিব কেন? নিলে বিয়ের পর জামাইর কাছ থেকে নেব।
– তাই। কে জানি আপনার জামাই হয়। তার কপালেতো খারাপই আছে।
– হ, জামাই মাথায় রেখে কাঁঠাল ভাঙবো। আপনার এতো জ্বলার কি আছে?
ফোন সেট কিনে কাজ শেষ হতেই শর্মীলার ফোন-
– তুমি কোথায়?
– এখনও কাজ শেষ হয়নি?
– আমি কোথায় গিয়ে বসবো?
– সুইসসে?
অন্যমনস্ক আবীরের প্রশ্ন : কাজতো শেষ কিছু খাবেন?
– চলেন সুইসসে?
– কার সঙ্গে কথা বললেন?
– আছে একজন?
– আপনার যেতে সমস্যা আছে?
– না।
সুইসে ঢুকেই শর্মীলার চিৎকার। (একজনকে লক্ষ্য করে) তুমি আমাকে বললে কাজ শেষ হয়নি?
– তোমাকে সারপ্রাইজ দিতেই-
আবীরের বুঝতে বাকি থাকে না। তবু শর্মীলা পরিচয় করিয়ে দেয় ওর মানুষের সঙ্গে। অফিসের কাউকেই বলবেন না। আপনাকে বিশ্বাস করি বলেই পরিচয় করিয়ে দিলাম। বুঝেনতো কতো মানুষের কতো কথা। তাড়া আছে বলে আবীর বেশিক্ষণ না বসেই বিদায় নেয়।
অফিসে ঢুকতেই মনে পরে প্যাকেটে আষাঢ়ের প্রথম কদম। ততক্ষণে হাতের গরমে-ঘামে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। টেবিলে বসার আগেই তা ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেয় আবীর।
লেখক : সাংবাদিক

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!