হযরত হাবীব আজমীর দান
বর্ণিত আছে যে, হযরত হাবীব আজমী চার দফায় চল্লিশ হাজার দেরহামের বিনিময়ে আল্লাহ পাকের নিকট হতে নিজের নফস কিনে নিয়েছিলেন। দশ হাজার দেরহাম পেশ করে বললেন, হে আল্লাহ! এই অর্থের বিনিময়ে আমি আমার নফস তোমার নিকট হতে কিনে নিলাম।
অতঃপর আরো দশ হাজার দেরহাম বের করে বললেন, ” এলাহী”! তুমি যদি আমার ঐ ক্রয় মঞ্জুর করে থাক তবে এর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ আরো দশ হাজার দান করলাম। এবার আরো দশ হাজার বের করে বললেন, ” হে পরওয়ারদিগার। তুমি যদি আমার প্রথম ও দ্বিতীয় বারের দেরহাম কবূল করে না থাক তবে অনুগ্রহ পূর্বক এ দশ হাজার কবুল করে নাও। সর্ব শেষে আরো দশ হাজার বের করে বললেন, ” হে আল্লাহ! যদি তুমি আমার তৃতীয় বারের অর্থ কবূল করে থাক তবে তাঁর শুকরিয়া স্বরূপ এ দশ হাজার কবূল কর।”
বর্ণিত আছে যে, একবার দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে হযরত হাবীব আজমী কিছু শস্য কিনে ফকীর মিসকিনদের মধ্যে বিতরণ করে দিলেন। কিন্তু তাঁর নিকট ঐ শষ্যের মূল্য পরিশোধ করার মত কোন অর্থ ছিল না। শস্য বিতারণ শেষে তিনি নিজের টাকার শূন্য থলিটির মুখ সেলাই করে মাথার নিচে রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর শস্য-বিক্রেতারা এসে টাকা চাইলে তিনি শীর হতে সেই থলেটি বের করে দেখলেন ওটা টাকায় পরিপূর্ণ। থলি খুলে গুনে দেখলেন তাতে পাওনাদারদের পাওনা পরিমাণ অর্থ আছে। অতঃপর তিনি হিসাব করে সকলের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিলেন।
হযরত হাবীব আজমীর আরেকটি ঘটনা এরুপঃ হযরতের স্ত্রী রুটি তৈরির আয়োজন করছিলেন। তিনি আগুন আনতে পাশের বাড়িতে গেলে এক ভিক্ষুক এসে কিছু খাবার চাইল। হযরত হাবীব রুটি তৈরির জন্য রক্ষিত সমুদয় আটা ফকিরকে দান করে দিলেন। স্ত্রী আগুন নিয়ে ফিরে এসে দেখলেন যথাস্থানে আটা নেই। স্বামীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, এক ফকীরকে দান করে দিয়েছি। স্ত্রী বললেন, সুবহানাল্লাহ!
আমাদের নিজের জন্যও তো কিছু রাখা প্রয়োজন ছিল। ইত্যবসরে কোথা হতে এক ব্যক্তি বড় পাত্রে বেশ কিছু গোস্ত ও রুটি এনে বলল, এগুলো হযরত হাবীবের পরিবারের জন্য হাদিয়া। হযরত হাবীব আজমী স্ত্রীকে বললেন, দেখ, আমরা দান করেছি আটা, আর তা কত দ্রুত রুটি হয়ে ফেরৎ আসল। সাথে গোস্তও এল এবং তোমাকেও কোন প্রকার ঝামেলা করত হল না।