হযরত সাঈদ ইবনে যায়েদ (রাঃ ) ও তাঁহার স্ত্রী ফাতেমা (রাঃ ) অর্থাৎ হযরত ওমর (রা:) এর বোনের কষ্ট সহ্য করা – শেষ পর্ব
হযরত ওমর (রাঃ)এর গোলাম হযরত আসলাম (রাঃ) বলেন, একবার হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, তোমরা কি আমার ইসলাম গ্রহণের ঘটনা শুনিতে চাও? আমরা বলিলাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, আমি রাসূল (সাঃ)-এর বিরোধিতায় সর্বাপেক্ষা কঠোর ছিলাম। একদিন কোরাইশের এক ব্যক্তি প্রচণ্ড গরমের সময় মক্কার কোন এক পথে আমাকে চলিতে দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিল, হে ইবনে খাত্তাব, কোথায় যাইতেছ? আমি বলিলাম, এই ব্যক্তির অর্থাৎ হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)কে কতল করিবার উদ্দেশ্যে যাইতেছি। সে বলিল, হে ইবনে খাত্তাব, মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর এই দ্বীন তো তোমার ঘরেও প্রবেশ করিয়াছে, আর তুমি কিনা এমন কথা বলিতেছ! আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, তাহা কিরূপে ? সে বলিল, তোমরা বোন তাঁহার নিকট গিয়াছে এবং তাঁহার দ্বীন গ্রহণ করিয়াছে।
হযরত ওমর (রাঃ) বলেন, আমি রাগান্বিত হইয়া ফিরিয়া চলিলাম এবং বোনের দরজায় আসিয়া করাঘাত করিলাম। তখনকার সময় রাসূল (সাঃ) এই নিয়ম করিয়াছিলেন যে, কোন গরীব লোক যাহার চলার মত কোন ব্যবস্থা নাই ইসলাম গ্রহণ করিলে তাহাকে বা তাহার ন্যায় এক দুইজনকে কোন ধনী ব্যক্তির সহিত সংযুক্ত করিয়া দিতেন যাহাতে সে তাহাদের উপর খরচ করে। হযরত
ওমর (রাঃ) বলেন, আমার বোন জামাইয়ের ঘরেও এরূপ দুই ব্যক্তি ছিল আমি যখন দরজায় করাঘাত করিলাম তখন ভিতর হইতে জিজ্ঞাসা করা হইল, কে? আমি বলিলাম, ওমর ইবনে খাত্তাব।তাহাদের হাতে একখানা কিতাব কোরআন শরীফ ছিল যাহা তাহারা পড়িতেছিল। আমার আওয়াজ শুনিয়া তাহারা ঘরের ভিতর আত্মগোপন করিল, কিন্তু কিতাবখানা রাখিয়া গেল। তারপর আমার বোন দরজা খুলিলে আমি বলিলাম, ওরে আপন জনের দুশমন!
তুই বেদ্বীন হইয়া গিয়াছিস! তারপর একটা কিছু উঠাইয়া তাহার মাথার উপর মারিতে উদ্যত হইলে সে কাঁদিয়া ফেলিল এবং বলিল, হে ইবনে খাত্তা, তোমার যাহা ইচ্ছা হয় করিতে পার, আমি ইসলাম গ্রহণ করিয়াছি। তাহার এই কথা শুনিয়া আমি ভিতরে যাইয়া চৌকির উপর বসিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, এইখানে এই কিতাব কিসের? আমার বোন বলিল, হে ইবনে খাত্তাব, তুমি উহা স্পর্শ করিও না, কারণ তুমি তো ফরয গোসল কর না, পবিত্রতা হাসিল কর না। এই কিতাব শুধু পবিত্র লোকেরাই স্পর্শ করিতে পারে। কিন্তু আমি বরাবর অনুরোধ করার পর সে আমাকে উহা দিল। অতঃপর বর্ণনা উল্লেখ করিয়াছেন। (বাযযাব)