হযরত শীস (আঃ)

হযরত শীস (আঃ) হযরত আদম (আঃ) এর সন্তানদের মধ্যে সকলের বড় এবং সকলের চেয়ে জ্ঞানে গুনে, শিক্ষা দিক্ষায় ও ধার্মিকতায় বেশি মর্যাদাবান ছিলেন। আবার এও কথিত আছে যে, হযরত শীস (আঃ) হাবিলের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর জন্মগ্রহণ করেন। হাবিল অত্যন্ত মুত্তাকী ও আল্লাহওয়ালা লোক ছিলেন। উত্তম বিনিময় হিসাবে আল্লাহ তা’আলা হযরত আদম (আঃ)-কে এ পুত্র দান করেন। হযরত শীস (আঃ) ছিলেন অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী।

স্বভাব চরিত্র পিতার অনুরূপ। তাই আদম (আঃ) তাঁকে নিজের স্থালাভিষিক্ত ঘোষণা করেন। অন্যান্য ভাইদের বেলায় দুনিয়ার বিভিন্ন কাজে তিনি শরীক থাকতেন বটে, কিন্তু নিজে কিছুই করতেন না। ফসল তোলার পর ভাইয়েরা তার অংশ ঘরে পাঠিয়ে দিতেন। ভাইদের সকলের তরিতরকারি, খাদ্য শস্য শেষ হয়ে গেলে তারা হযরত শীস (আঃ) এর কাছে থেকে ধারও নিয়ে প্রয়োজন মেটাতেন। একবার ভাইয়েরা পরামর্শ করেন যে, এ বছর আমরা শীস (আঃ) কে তার অংশ উৎপাদিত ফসলের অংশ প্রতি বছরের ন্যায় দেব না। তার ঋণ ফিরিয়ে দেব।

কেননা, সে আমাদের কোন কাজে অংশগ্রহণ করে না, অলসভাবে বসে থেকে আমাদের নিকট থেকে অংশ নেয়। এছরই আল্লাহ পাক হযরত শীস (আঃ) কে পয়গম্বরী ও কিতাব দান করেন যাতে তিনি জাতির লোকদের শরীয়ত শিক্ষা দিয়ে দ্বীন ও ঈমানের পথ দেখাতে পারেন। এরপর সকল ভাই তার প্রতি সন্তুষ্ট ও অনুগত হয়। তার ওপর ঈমান স্থাপন করে এবং উৎপন্ন ফসলের এক দশমাংশ তাঁকে প্রদান করতে থাকে।

তাদের দেয়া ফসল দিয়েই তিনি পরিবার-পরিজন ও সন্তানাদির ভরণ-পোষণ করতেন। তিনি অধিকাংশ সময় আদম (আঃ) এর নিকট থেকে জান্নাতের বিভিন্ন বস্তুর অবস্থা সম্পর্কে জানতেন এবং অবতীর্ণ ওহীর মর্মার্থ জিজ্ঞেস করতেন। কিছুদিন পর হযরত শীস (আঃ) এক পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে তিনি তার নাম আনূশ রাখেন। তিনি যৌবনপ্রাপ্ত হলে হযরত শীস ইন্তেকাল করেন। তার ইন্তিকালের পর তার পুত্র আনূশ দীর্ঘকাল পর্যন্ত পিতার দ্বীনের উপর থেকে মৃত্যুবরণ করে।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।