হযরত শাহজালাল (রঃ ) – শেষ পর্ব
হযরত শাহজালাল (রঃ ) – পর্ব ১৯ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সারা দুনিয়ায় নেমে এল ঘোর অন্ধকার। সকলের চোখেই সরষে ফুল ফুটল। শিষ্য সাগরেদরা এমন কান্না শুরু করল দেখলে মনে হত যেন তাদের আপনজন পিতামাতা দুনিয়া থেকে বিদায় নিচ্ছে। দেশ-বিদেশ থেকে দলে দলে মানুষ এসে শেষ বারের মত দেখা করতে লাগল সিলেট বাসীরা হযরত শাহজালাল (রঃ) কে পেয়ে ধন্য হয়েছিল। তারা পেয়েছিল তার মাধ্যমে সঠিক পথের সন্ধান। দেশের মানুষরা নামের পূর্বে লিখিত শ্রী সেখানে আজ তারা শিখতে সক্ষম হল নামের শুরুতে মোহাম্মদ। সামাজিক জীবনেও তাঁর অবদান অপরিসীম। সেহেতু এক বাক্যে বলা যেতে পারে হযরত শাহাজালাল (রঃ) ছিলেন সিলেটের নবজীবনের জন্মদাতা। তাইতো তাঁর মৃত্যুর শোক সংবাদ শুনে সিলেটের সকল স্তরের মানুষের অন্তরে শোকের ঝড় বইল। ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায় যে তিনি ১৩৪৫ খৃস্টাব্দে সিলেটে শুভ পদার্পণ করেন। তবে তাঁর জন্ম ও মৃত্যু সম্পর্কে দুটি মত পাওয়া যায়। কোন কোন ঐতিহাসিক বলেন, তিনি ১৩১৮ খৃঃ জন্ম গ্রহণ করেন এবং ৬২ বছর বয়সে ১৩৮০ খৃস্টাব্দে ইহধাম ত্যাগ করেন। দ্বিতীয় মত প্রকাশে কোন ঐতিহাসিক বলেন, ওলিয়ে বলেন, ওলিয়ে কামেল হযরত শাহজালাল (রঃ) ১৩২২ খৃঃ জন্ম গ্রহণ করেন। এবং ৬২ বছর বয়সে ১৩৮৪ খৃস্টাব্দে দুনিয়া থেকে চির বিদায় নেন।
তবে একথার ঐতিহাসিক যে একমত, তাতে কোন সন্দেহ নাই সেটা হল এই যে তিনি দুনিয়ার মাঝে ৬২ বছর বেঁচে থেকে জিলহজ্জ মাসের ৩০ তারিখে রোজ শুক্রবার ইহধাম ত্যাগ করেন।
সে যাই হোক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে বান্দার উপর সন্তুষ্ট থাকেন তাঁর প্রতিটি কাজই সুফল জনক হয়ে থাকে যার প্রত্যক্ষ উদাহরণ আমরা আমাদের সর্বজন শ্রদ্ধেয় হযরত শাহাজালাল (রঃ) এর জীবনে দেখতে পাই। পবিত্র জুময়ার নামাজ বাদ ৫ সহস্রাধিক মানুষ জামায়েত হয়ে তাঁর নামাজে জানাজা আদায় করেন। যুগে যুগে সে সকল মহাত্মা মনীষীর আবির্ভাব হয়েছে তাঁরা এই পাপসক্ত পৃথিবীকে পাপ মুক্ত করে মানুষের চির অমর হয়ে আছেন। মহাসাধক হযরত শাহাজালাল (রঃ) ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। তাইতো আজো গোঁটা পৃথিবীর আনাচে কানাচে থেকে অসংখ্য মানুষ হযরত শাহাজালাল (রঃ) এর মাজার জিয়াত করার উদ্দেশ্যে সিলেটে আগমন করেন। আল্লাহ তাঁর উপর রহমত বর্ষন করুক। আমীন।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া