হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ৬
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ৫ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অতএব, আমার সালাত অর্থ রহমত প্রেরণ করা। আবু বকরের প্রতি যেহেতু আপনি অতিশয় অনুরক্ত। এ নির্জনে আপনাকে নির্ভয় দিবার উদ্দেশ্যে আমি বহু পূর্ব হতে আবু বকরের স্বরে একজন ফেরেশতা সৃষ্টি করে রেখেছি। যেমন মূসার সঙ্গে কালাম করার সময় তাঁর লাঠির কথা আলোচনা করে সে দিকে তাঁর মনযোগ আকৃষ্ট করে আমার কালামের মহাভয় হতে তাঁকে মুক্তি দিয়েছি। অনুরূপভাবে আবু বকরের স্বরের প্রতি আপনার অন্তরকে আকৃষ্ট করে নির্জন এলাকায় ও আমার সাথে কথা বলার ভয় হতে আপনাকে নির্ভয় প্রদান করেছি।
অতঃপর আল্লাহ পাক রাসূল (সাঃ)-এর কলবকে পূর্বের চেয়ে অধিক পরিমাণে নূরানী করে দেন। এদিকে আরশে আজীমের নূরের দৃষ্টিতে আচ্ছন্ন করে দিল। রাসূল (সাঃ) বললেন, তখন আমি কিছুই দেখতেছিলাম না। অতঃপর কলব দ্বারা আগে-পিছে, ডানে-বামে, সমানভাবে দেখতে পেলাম। তারপর আমাকে আরও উন্নীত করা হল। পূর্বের অবস্থার পরিবর্তন ঘটল। আমার কলবকে আরও নূরানী করা হল।
তখন আল্লাহ পাক রাসূল (সাঃ) কে বললেন, আমি আপনাকে এমন একটি নূর প্রদান করেছি যা দ্বারা আপনি আমার জামালের দীদার লাভ করতে পারবেন এবং শ্রবণ শক্তি দিয়েছি যাতে আমার কালাম শ্রবণ করতে পারেন। অতঃপর রাসূল (সাঃ) আল্লাহর দীদার লাভ করলেন। আল্লাহর জামাল দেখা মাত্রই ছেজদায় পড়লেন।
আল্লাহর পক্ষ হতে এরশাদ হল, আপনি আমার নিকট প্রার্থনা করুন। রাসূল (সাঃ) আরজ করলেন, হে প্রভু! আপনি ইব্রাহিমকে খলীল, মূসাকে কলীম করেছেন, দাউদকে খোশ এলহাম এবং বিশাল সম্রাজ্য দান করেছেন, লৌহকে তাঁর জন্য নম্র এবং পর্বতমালা তাঁর হুকুমের বাধ্য করেছেন। সোলায়মানকে সমগ্র বিশ্বের বাদশাহী, জ্বীন-এনসানের এবং শয়তানের উপর আধিপত্য দান করেছেন। ঈসাকে তওরাত, ইঞ্জিল শিক্ষা দিয়েছেন। জন্মান্ধ ও শ্বেতকুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্য করার এবং মুর্দার জিন্দা করার শক্তি প্রদান করেছেন। আমাকে কি দিলেন?
এরশাদ হল, আপনাকে খলীল ও হাবীব করলাম। সমগ্র মানব জাতির প্রতি নবী করে প্রেরণ করলাম। বেহেশতের সুসংবাদ এবং দোযখের ভয় প্রদর্শক করলাম। আপনার বক্ষ সম্প্রসারণ করলাম। আপনার পৃষ্টভঙ্গকারী গুরুভার নামিয়ে দিলাম। আপনার জিকির বুলন্দ করলাম। যেখানে আমার নাম সেখানের সঙ্গে আপনার নামও থাকবে। আপনার উম্মতকে সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত করলাম। রোজ কিয়ামতে আপনার উম্মত নবীগণের সাক্ষী হবে। আপনার উম্মতের এক শ্রেণীর লোকের কালব ইঞ্জিল কিতাবের ন্যায় বিশাল জ্ঞান ভাণ্ডার হবে। আপনাকে সূরায়ে ফাতেহা দান করেছি। যা কোন নবীকে দেয়া হয়নি। আপনাকে সূরায়ে বাকারার শেষ দুটি আয়াত (আপনার রাসূল হতে শেষ পর্যন্ত) দান করেছি। আপনাকে কাওছার দান করেছি। আপনাকে নিখিল বিশ্বের আদি অন্ত (প্রারম্ভকারী ও সমাপনকারী) করেছি।
আপনি যে পর্যন্ত বেহেশতে প্রবেশ না করবেন সে পর্যন্ত সমস্ত নবীগণের জন্য বেহেশতের দ্বার রুদ্ধ থাকবে। আপনার উম্মত যে পর্যন্ত বেহেশতে প্রবেশ না করবে সে পর্যন্ত সমস্ত উম্মতের জন্য বেহেশত নিষিদ্ধ থাকবে। হাশরের দিন সমস্ত নবীগণ আপনার ঝাণ্ডার নিচে থাকবে। আপনাকে মাকামে মাহমুদ ও শাফায়াতে কোবরা দান করেছি।
আপনার উম্মতকে আরও বৈশিষ্ট্য দান করেছি। তারা কোন নেক কাজ করতে ইচ্ছা করে একটি নেকী করলে দশটি নেকী আর না করলে একটি নেকী লেখা হবে। অপরপক্ষে বদ কাজ করার ইচ্ছা করে একটি বদ করলে গুনাহ লিখতে হবে। আর না করলে একটি নেকী লেখা হবে।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন