হযরত ফোজায়েল (রঃ)- পর্ব ৪

হযরত ফোজায়েল (রঃ) – পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

হযরত সুফিয়ান সওরী (রঃ) এক রাতে হযরত ফোজায়েল (রঃ) এর বাড়িতে অবস্থান করেন। বলাবাহুল্য, ধর্ম আলোচনায় মধ্য দিয়ে রাত শেষ হয়। পরদিন সকালে বিদায় নেবার প্রাক্কালে তিনি বলেন, রাতটি আমাদের জন্য খুবই শুভ ও কল্যাণ প্রসূ হল। ফোজায়েল (রঃ) এ কথায় প্রতিবাদ করে বললেন, না, তা নয়। বরং রাতটি খুব অশুভ হয়ে গেল।

কেন?

আপনি সারারাত আমাকে তোষামদ করার ভঙ্গিতে কথাবার্তা বলেছেন। আর আমিও উত্তর দিতে গিয়ে আপনাকে খুশী করার চেষ্টা করেছি। অর্থাৎ, আমরা আলাপ-আলোচনায় মত্ত ছিলাম

ঠিকই। কিন্তু তার মধ্যে আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা জানানো বা এবাদাত-আনুগত্যের কিছু ছিল না। কাজেই এ রাতটা আমাদের জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনেনি।

এত সূক্ষ্ম ভাবনা ফোজায়েল (রঃ)-এর মত সাধকের পক্ষেই সম্ভব। এক লোক তার সঙ্গে দেখা করতে এল। তিনি তার আগমনের হেতু জানতে চাইলেন। লোকটি বলল, আপনার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও আপনার অমূল্য কথাবার্তা শুনে সন্তোষ লাভের জন্য এসেছি।

হযরত ফোজায়েল (রঃ) বললেন, আল্লাহ্‌র কসম, তোমার কথাটি পশুত্বের ভাব ছাড়া আর কিছু নয়। বস্তুত তুমি আমাকে মিথ্যা দিয়ে প্রতারিত করলে। আর আমিও তোমাকে তাই করব। অতএব তুমি বিদায় হও।

এই আত্ম-মগ্ন সাধক রোগাক্রান্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতেন এই কারণে যে, তাহলে তাঁকে আর জামাতে নামাজ আদায় বা জনসমাজে যেতে হবে না। দুটি কাজই গণসংযোগ বটে; আর তা আল্লার ধ্যানে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। প্রকৃত ধ্যান তাকেই বলে, যাতে হৃদয় ও চোখ শুধু আল্লাহতেই নিবন্ধ থাকে। এবাদতে যদি অন্যের দিকে দৃষ্টি যায় অথবা মনে অন্য কিছু খেয়াল আসে, তাহলে তা প্রকৃত উপাসনা নয়।

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত ফোজায়েল (রঃ) – পর্ব ৫ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।