হযরত দাউদ (আঃ) এর পুত্রের দূরদর্শিতা-১ম পর্ব
আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ ক্রমে হযরত দাউদ (আঃ) নিয়মিত রাজকার্য পরিচালনা আরম্ভ করলেন এবং বিচারের ক্ষেত্রে জটিল বিষয় নিজেই ফয়সালা করতেন।
একদিন দুই বিবাদকারী এসে রাজ দরবারে হাজির হল। একজন বলল, হুজুর! এ লোকটির ছাগলের পাল এসে আমার ক্ষেতের সমুদয় ফসল খেয়ে ফেলেছে। এখন আমার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে দিন। হযরত দাউদ (আঃ) তাঁর কর্মচারীর দ্বারা ছাগল ও ফসলের মূল্য নির্ধারন করলেন। তাতে দেখা গেল ছাগলের দামের চেয়ে অধিক এসেছে। তখন হযরত দাউদ (আঃ) ক্ষেতওয়ালাকে ছাগল গুলো দিয়ে বললেন, তোমার ফসলের বিনিময়ে এই ছাগল গুলোকে নিয়ে যাও। আজ থেকে এ গুলা তোমার। হযরত দাউদ (আঃ) এর রায় শুনে উভয় পক্ষ বিদায় হল। ছগলওয়ালা রায় শুনে কাঁদতে কাঁদতে দরবার থেকে বের হয়ে গেল। দরজায় হযরত দাউদ (আঃ) এর সাত বছর এর পুত্র শাহজাদা ছোলায়মানের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হল। শাহজাদা ছোলায়মান একটি লোককে কাঁদতে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, হে বুড়ো! তুমি কাঁদছ কেন? লোকটি বলল, শাহজাদা সে কথা বলে আর লাভ নেই। স্বয়ং খলিফা আমাদের একটি মামলার রায় দিয়েছেন, যে রায়ে আমি রাস্তার ফকির হয়ে গেছি। তাই কোন উপায় না দেখে আল্লাহর দরবারে কাঁদছি। শাহাজাদা ছোলায়মান জিঙ্গেস করলেন, তোমার মামলার বিষয়টি কি ছিল? আমার এক পাল ছাগল আমার প্রতিবেশীর ক্ষেতে ঢুকে তাঁর ফসল খেয়ে ফেলেছে। খলিফা এ জন্য আমার সব ছাগল তাকে দিয়ে দিয়েছেন। এখন আমার অবস্থা খুবই বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ আমার আর কোন আয় রোজগার এর ব্যবস্থা নেই। ছাগল এর দুধ বিক্রয় করে আমার জীবিকা নির্বাহ হত। শাহাজাদা ছোলায়মান পিতার রায় শুনে ছাগলওয়ালা কে বললেন, তুমি পুনারায় খলিফার দরবারে গিয়ে বলল, হুজুর! আমার মামলার বিষয়টা আর একটু ভেবে চিন্তে রায় দিলে বেঁচে যেতাম। না হয় আমার পরিবারের বেঁচে থাকার কোন উপায় থাকবে না। লোকটি শাহজাদার পরামর্শ অনুসারে খলিফার দরবারে পৌঁছে অনরুপ আরজ করল। খলিফা তখন তাকে জিজ্ঞেস করল তোমাকে এ কথা কে শিখিয়ে দিয়েছে। লোকটি বলল, শাহজাদা ছোলায়মান। তখন খলিফা শাহাজাদা কে দরবারে ঢেকে পাঠাল। ছোলায়মান পিতার নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলে, তুমি ছাগলওয়ালা কে পুনরায় বিচারের জন্য আমার নিকট প্রেরণ করছে। ছোলায়মান উত্তর দিলেন, হ্যাঁ পাঠিয়েছি।
হযরত দাউদ (আঃ) এর পুত্রের দূরদর্শিতা-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন