হযরত দাউদ (আঃ)-এর ইন্তেকাল-২য় পর্ব
হযরত দাউদ (আঃ) সিন্দুকের রক্ষিত বস্তুসমূহের রহস্য উদঘাটন জন্য ছোলায়মান (আঃ) কে ধন্যবাদ দিলেন এবং তাকে তাঁর উত্তরাধিকারী বলে ঘোষণা দিলেন। অতপর ছোলায়মান (আঃ) কে নিজ আসনে বসিয়ে এক বিদায়ী বক্তৃতায় সকলের নিকট থেকে ন্যায়-অন্যায় ও ভুল-ক্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলেন। অতপর তাদের কে শেষ হেদায়াতের জন্য তওবা করলেন। সর্বশেষে তিনি সিন্দুকের রক্ষিত আংটি হযরত ছোলায়মান (আঃ) কে পরিয়ে দিলেন। এটি হল বেহেস্তের আংটি। এটি যার হাতে থাকবে সে যা চায় তা অর্জন করতে পারবে এবং যে পাথরটি আছে তাতে দৃষ্টি করলে সারা পৃথিবীর মধ্যে সেখানের ইচ্ছা সেখানের অবস্থা দেখতে পারবে। এ ছাড়া আংটির গুনে সারা পৃথিবীর সকল প্রানী তাঁর বসে থাকবে। এমন কি বাতাস আগুন পর্যন্ত তাঁর তাবেদার হবে।
কিন্তু যদি কেউ এ আংটি অবৈধভাবে হরণ করে নেয় তবে সে ও তাঁর পরিবার বর্গ অপদস্ত হয়ে মৃত্যু করবে। স্বিতীয় জনিস টি হল চাবুক। এটিতে যে কোন অন্যায় দমনে প্ররণ করলে অন্যায়কারি যতবেশি শক্তিশালী হউক না কেন, তাদেরকে ধরাশায়ী করে বেশি সময় লাগবে না। যদি ক্ষুদ্র যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রেরণ করা কর হয় তবে এ চাবুকের বরকতে সেখানে আর লক্ষ চাবুক জমায়েত হয়ে কাজ করবে। প্রয়োজন বোধে একটি মারাক্তক রুপ নিতে বিলম্ব করবে না। ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে চাবুক নিজে কাজ করে যাবে। আরও অনেক গুন চাবুকের মধ্যে নিহিত আছে। যা প্রয়োজনীয়ও সময় প্রকাশ পাবে।
হযরত দাউদ (আঃ) আংটি পরিধান করিয়ে দিবার পরে চাবুক টি তাঁর হাতে দিলেন। সব শেয়ে হযরত দাউদ (আঃ) বললেন, চিঠির মধ্যে যে পাঁচটি জিনিসের কথা উল্লেখ কর হয়েছে। উহার উদ্দেশ্য হল আল্লাহ তায়ালার খেলাফি ও রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে উক্ত পাঁচটি গুনাগুন দ্বারা বিচার করে এবং উহার আশ্রয় নিয়ে সর্বক্ষেত্রে অগ্রসর হতে হবে। উক্ত গুনাগুনের আশ্রায় ছাড়া প্রবৃত্তির আশ্রয় নিলে খলিফা নিজের ধ্বংস নিজে ডেকে আনবে। এ ইঙ্গিত প্রদানের জন্য উক্ত বিষয় সমুহ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এ কথা বলে তিনি মোনাজাত করেন।
হযরত দাউদ (আঃ) এর বয়স যখন একশত বিশ বছর। তখন একদা হযরত আজরাইল (আঃ) এসে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করেন। হযরত আজরাইল (আঃ) প্রথমে তাকে ছালাম দিলেন। অতপত নিজ পরিচয় প্রদান করেন। হযরত দাউদ (আঃ) তখন আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করেন। হযরত আজরাইল বললেন, আমি আপনার জান কবজ করতে এসেছি। হযরত দাউদ (আঃ) তখন বললেন, ঠিক আছে ভাই আজ্রাইল! আপনি একটু সময় অপেক্ষা করুন আমি অজু করে দুরাকাত নামাজ আদায় করে আসি। হযরত আজরাইল বললেন, নির্দিষ্ঠ সময়ের পূর্বে যদি নামাজ আদায় করতে পারেন তবে চেষ্টা করুন। হযরত দাউদ (আঃ) তখন তাড়াতাড়ি অজু সমাধা করে নামাজ ডাঁড়াতে থাকেন এমন সময় হযরত আজরাইল (আঃ) তাঁর জান কবজ করে দিলেন।
মৃত্যুর ক্ষেত্রে মুহুর্তকাল সময় দেয়ার সুযোগ নেই। এমন কি নবীদের ক্ষেত্রে নয়। উহা কাটায় কাটায় নির্ধারিত সময় সম্পন্ন হবে। পবিত্র কোরআনে তাঁর উল্লেখ রয়েছে।