হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – শেষ পর্ব

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

সর্বশেষ কয়েকশত সিংহ, বাঘ ও সর্পকে তাঁর সিংহাসনের নিচে এসে কাতার বন্দি হতে বলে। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তাঁর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সকল সৈন্য, সেবক ও হিংস্র প্রাণীদেরকে সিংহাসনে আহরণের আদেশ দিলেন।  সমুনধন কে বসিয়ে বাতাসকে সিংহাসন নিয়ে রওয়ানা করার হুকুম দিলেন।  বাতাস শাহেন শাহের হুকুমে সঙ্গে সঙ্গে সিংহাসন নিয়ে রওয়ানা করল।  বিদ্যুৎ বেগে সে পথ অতিক্রম করতে লাগল।  কয়েক হাজার মাইল দূরত্বের পথ সে অল্প সময়ের মধ্যে অতিক্রম করে ছাইদুন নগরের পাচীরের নিকট এসে দাঁড়ায়। ওদিকে হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর আগমের খবর মূর্তিরা বিভিন্ন সংকেত দিয়ে জীন বাদশকে জানিয়ে দিল।

এমন কি মহা বিপদ সংকেত হিসাবে যুদ্ধ নাকড়া নিজে নিজে বেজে উঠল। তখন জীন বাদশার সৈন্যরা বুঝে নিল, তাদের এক মহাবিপদ এসে উপস্থিত হয়েছে। রাজার নির্দেশে তারা অতি সত্বর যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে প্রাচীরের নিকট এসে দেখল, আকাশে ভাসমান এক বিশাল রাজ্য।  লক্ষ লক্ষ যোদ্ধা ও সৈন্য দ্বারা সে ভাসমান রাজ্যটি পরিপূন্য। এছাড়া সিংহ, বাঘ ও সর্পের সীমাহীন কাতার।  নতুন ধরেনর প্রস্তুতি নিয়ে কে তাদের আক্রমণ করতে আসল। জীন সৈন্যরা কিছুই বুঝতে পারল না। তবে শত্রুর আয়োজন দেখে তারা ভীষণ ভীতু হয়ে পড়ল। তারা যখন জীন বাদশাকে খবর দিল। জীন বাদশার পরাক্রমশালী শত্রুর খবর শুনে রাজ্যের সকল জীন পরি এনে উন্মুক্ত ময়দানে জমায়েত করল এবং নিজ যুদ্ধ পরিচালক হিসাবে সম্মুখে এগিয়ে এল।    

হযরত ছোলায়মান (আঃ) প্রথমে দুর্বল সৈন্য, পরিদেরকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে অগ্রসর হতে আদেশ দিলেন।  দীর্ঘ সময় দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হল।  কিন্তু হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যোদ্ধা পরীরা বিজয় লাভ করতে সক্ষম হল না।  তখন তিনি দৈত্যদেরকে পাঠিয়ে দিলেন।  এবার যুদ্ধের অবস্থা কিছুটা ভাল দেখা গেল। হঠাৎ দৈত্যদের সেনাপতি নিহত হল।  তখন বাকি দৈত্যরা ময়দান  ছেড়ে পলায়ন করল। শেষবারে হযরত ছোলায়মান (আঃ) মানব সৈন্যকে ময়দানে প্রেরণ করলেন। এবার জীনের বাদশার সৈন্যদেরকে সমূলে বিনাশ করে দিল।  তখন জিনেদের বাদশাহ হযরত ছোলায়মান (আঃ)কে  মল্লযুদ্ধে অংশ নিবার জন্য আহবান জানাল।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) তখন বাতাস কে নির্দেশ দিলেন বাতাস ময়দানে বালু ঊড়িয়ে বাদশা ও তাঁর সঙ্গীদের অন্ধ করে দিল।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) সে সময় সিংহ ছেড়ে দিলেন তারা বাদশাহ ও তাঁর সঙ্গীদের অন্ধ অবস্থায় পেয়ে ছিড়ে কামড়ে আহার সম্পন্ন করল।  বাকি প্রায় বিশ হাজার জীন, পরী, দৈত্য ও দেও এসে হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নিকট আত্নসমার্পণ করল।  এদের মধ্যে বাদশার কন্যা শাহাজাদীও ছিল।   

হযরত ছোলায়মান (আঃ) তখন সকল আত্নসমার্পণকারীকে দাস-দাসীর অন্তভুক্ত করে নিলেন এবং শাহাজাদিকে বিবাহ করে নিলেন।  আর সমুনধনকে তাঁর প্রণয়ীনি পরীর সাথে শাদী করিয়ে দিতে আদেশ দিলেন।   

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

আরো পড়তে পারেন...

গাধার সংগীতচর্চা

এক গাঁয়ে এক ধোপার ছিল একটা গাধা। তার নাম অদ্ভূত। দিনভর গাধা ধোপার কাপড়ের বোঝা…

গাধা ও ব্যবসায়ী

এক লবণের ব্যবসায়ী সস্তায় পেয়ে একদিন বাজার থেকে প্রচুর লবণ কিনল। বোঝা বইবার জন্য ব্যবসায়ীর…

পায়রা ও পিঁপড়া

একদিন এক পিঁপড়ে পিপাসায় কাতর হয়ে নদীতে জল পান করতে গেল। এমন সময় আচমকা বাসাতের…

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – শেষ পর্ব

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

সর্বশেষ কয়েকশত সিংহ, বাঘ ও সর্পকে তাঁর সিংহাসনের নিচে এসে কাতার বন্দি হতে বলে। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তাঁর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সকল সৈন্য, সেবক ও হিংস্র প্রাণীদেরকে সিংহাসনে আহরণের আদেশ দিলেন।  সমুনধন কে বসিয়ে বাতাসকে সিংহাসন নিয়ে রওয়ানা করার হুকুম দিলেন।  বাতাস শাহেন শাহের হুকুমে সঙ্গে সঙ্গে সিংহাসন নিয়ে রওয়ানা করল।  বিদ্যুৎ বেগে সে পথ অতিক্রম করতে লাগল।  কয়েক হাজার মাইল দূরত্বের পথ সে অল্প সময়ের মধ্যে অতিক্রম করে ছাইদুন নগরের পাচীরের নিকট এসে দাঁড়ায়। ওদিকে হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর আগমের খবর মূর্তিরা বিভিন্ন সংকেত দিয়ে জীন বাদশকে জানিয়ে দিল।

এমন কি মহা বিপদ সংকেত হিসাবে যুদ্ধ নাকড়া নিজে নিজে বেজে উঠল। তখন জীন বাদশার সৈন্যরা বুঝে নিল, তাদের এক মহাবিপদ এসে উপস্থিত হয়েছে। রাজার নির্দেশে তারা অতি সত্বর যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে প্রাচীরের নিকট এসে দেখল, আকাশে ভাসমান এক বিশাল রাজ্য।  লক্ষ লক্ষ যোদ্ধা ও সৈন্য দ্বারা সে ভাসমান রাজ্যটি পরিপূন্য। এছাড়া সিংহ, বাঘ ও সর্পের সীমাহীন কাতার।  নতুন ধরেনর প্রস্তুতি নিয়ে কে তাদের আক্রমণ করতে আসল। জীন সৈন্যরা কিছুই বুঝতে পারল না। তবে শত্রুর আয়োজন দেখে তারা ভীষণ ভীতু হয়ে পড়ল। তারা যখন জীন বাদশাকে খবর দিল। জীন বাদশার পরাক্রমশালী শত্রুর খবর শুনে রাজ্যের সকল জীন পরি এনে উন্মুক্ত ময়দানে জমায়েত করল এবং নিজ যুদ্ধ পরিচালক হিসাবে সম্মুখে এগিয়ে এল।    

হযরত ছোলায়মান (আঃ) প্রথমে দুর্বল সৈন্য, পরিদেরকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে অগ্রসর হতে আদেশ দিলেন।  দীর্ঘ সময় দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হল।  কিন্তু হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যোদ্ধা পরীরা বিজয় লাভ করতে সক্ষম হল না।  তখন তিনি দৈত্যদেরকে পাঠিয়ে দিলেন।  এবার যুদ্ধের অবস্থা কিছুটা ভাল দেখা গেল। হঠাৎ দৈত্যদের সেনাপতি নিহত হল।  তখন বাকি দৈত্যরা ময়দান  ছেড়ে পলায়ন করল। শেষবারে হযরত ছোলায়মান (আঃ) মানব সৈন্যকে ময়দানে প্রেরণ করলেন। এবার জীনের বাদশার সৈন্যদেরকে সমূলে বিনাশ করে দিল।  তখন জিনেদের বাদশাহ হযরত ছোলায়মান (আঃ)কে  মল্লযুদ্ধে অংশ নিবার জন্য আহবান জানাল।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) তখন বাতাস কে নির্দেশ দিলেন বাতাস ময়দানে বালু ঊড়িয়ে বাদশা ও তাঁর সঙ্গীদের অন্ধ করে দিল।  হযরত ছোলায়মান (আঃ) সে সময় সিংহ ছেড়ে দিলেন তারা বাদশাহ ও তাঁর সঙ্গীদের অন্ধ অবস্থায় পেয়ে ছিড়ে কামড়ে আহার সম্পন্ন করল।  বাকি প্রায় বিশ হাজার জীন, পরী, দৈত্য ও দেও এসে হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নিকট আত্নসমার্পণ করল।  এদের মধ্যে বাদশার কন্যা শাহাজাদীও ছিল।   

হযরত ছোলায়মান (আঃ) তখন সকল আত্নসমার্পণকারীকে দাস-দাসীর অন্তভুক্ত করে নিলেন এবং শাহাজাদিকে বিবাহ করে নিলেন।  আর সমুনধনকে তাঁর প্রণয়ীনি পরীর সাথে শাদী করিয়ে দিতে আদেশ দিলেন।   

হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুদ্ধ যাত্রা – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

আরো পড়তে পারেন...

মুগীরা ইবন শু’বা (রা)

নাম আবু আবদিল্লাহ মুগীরা, পিতা শু’বা ইবন আবী আমের। আবু আবদিল্লাহ ছাড়াও আবু মুহাম্মাদ ও…

সাপের তওবা

একটি সাপের ঘটনা বর্ণনা করছি। আমার কাছে যারা তালীম গ্রহন করতে আসে প্রথমেই আমি কাউকে…

আবদুল্লাহ ইবন হুজাফাহ আস-সাহমী-(রা)

আবু হুজাফাহ আবদুল্লাহ নাম। পিতার নাম হুজাফাহ। কুরাইশ গোত্রের বনী সাহম শাখার সন্তান। ইসলামী দাওয়াতের…