হযরত ছোলায়মান (আঃ)-এর জন্ম ও রাজত্ব -১ম পর্ব
হযরত দাউদ (আঃ) এর কনিষ্ঠ ছেলের নাম হযরত ছোলায়মান (আঃ) তিনি হযরত দাউদ (আঃ) এর শেষ স্ত্রী বতশার গর্ভে জন্মগ্রহন করেন। বতশা ছিলেন আউরিয়া নামক এক যোদ্ধার স্ত্রী। আউরিয়া এক যুদ্ধ ক্ষেত্রে শহীদ হবার পরে তাঁর স্ত্রী বতশাকে হযরত দাউদ (আঃ) বিবাহ করেন। সে ঘরে হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর জন্ম।
হযরত ছোলায়মান (আঃ) কে তাঁর পিতা হযরত দাউদ (আঃ) নিজ সিংহাসনে স্থলাভিষিক্ত করেন এবং বেহেস্তের আংটি তাঁর পরিয়ে দেন। বেহেস্তের আংটি হাতে পরার সাথে সাথে হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর মধ্যে এমন শক্তিশালী অলৌকিক ক্ষমতার সমাবেশ ঘটল যা তিনি নিজেই বর্ণনা করছেন।
তিনি জাতিকে লক্ষ্য করে বলেছেন, তোমরা মনে রাখ আল্লাহ তায়ালা আমাকে পশু পাখি, জিন-পরীসহ আঠারো হাজার মাকলুকাতের ভাষা শিক্ষা আমাকে দিয়েছেন। সমগ্র পৃথিবীর যাবতীয় দৃশ্য অবলোকনের ক্ষমতা আমাকে দিয়েছেন। এছাড়া যাবতীয় প্রয়োজন মিটানোর প্রয়োজনীয়ও সব কিছু আমাকে আল্লাহ দান করেছে। কোন অভাব অপূর্ণতা আমার নেই। আল্লাহ তায়ালা আমাকে অনেক বড় করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ
হযরত ছোলায়মান (আঃ) ছিলেন এক মহারাজ যার সমকক্ষ কোন রাজা বাদশার আর্বিভাব পৃথিবীতে আর ঘটে নি। তাঁর সিংহাসন ছিল সাত মাইল লম্বা এবং সাত মাইল প্রশস্ত। তাঁর সিংহাসনের ডান পাশে থাকত এক সেনা বাহিনীর বিরাট ব্যাটেলিয়ান এবং বাম পাশে থাকত জিন পরিদের সারি বদ্ধ দল। পিছনে থাকত দৈত্য দানবদের বিরাট দল। আশে পাশে থাকত সারি বাধা পশুপক্ষীর দল। এ সিংহাসনের চারপাশে ছিল সুরম্য অট্টলিকা। বহু কক্ষ ও বহু তল বিশিষ্ঠ ছিল এ সমস্ত অট্টালিকা। এ সব অট্টলিকায় থাকতেন তাঁর স্ত্রী গণ ও দাস দাসীরা।
হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর এ বিশাল সিংহাসনটি বাতাস বহন করত। এর গতিবেগ ছিল অত্যন্ত দ্রুত। হাজার হাজার মাইল পথ নিমিষের মধ্যে অতিক্রম করে যেত ভোরে বিকালে শাহনশাহ হযরত ছোলায়মান (আঃ) সিংহাসনে বসে পৃথিবীর এক পান্ত থেকে অপর প্রান্ত বেড়াতে যেতেন। পৃথিবীর মানুষ কে তিনি তৌহিদের দাওয়াত দিতেন। তাঁর পিতার নিকট প্রেরিত জবুর কিতাব তিনি পাঠ করতেন এবং তদানুসারে তিনি রাজ্য পরিচালনা করতেন। হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর যুগে কোন অশান্তি ছিল না। মানুষ যথেষ্ট আরামে জীবন যাপন করত। অন্যায় কাজ করার প্রবৃত্তি মানুষের ছিল না বললেই চলে।
তবুও দেশে কিছু বিচারের ঘটনা ছিল। হযরত ছোলায়মান (আঃ) অধিকাংশ বিচার নিজের হাতে করতেন। হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর রাজধানীর এলাকা ছিল সত্তর মাইল ব্যাপী। সেখানে বিরাট বিরাট মহল ও প্রসাদ ছিল। যা মনি মুক্তা পান্না, জহরতের ন্যায় মূল্যবান পাথর দ্বারা তৈরি। আলো ও শিততাপের ব্যবস্থাপনা মুল্যবান পাথরের দৌলতে নিজে নিজে সমাধা হত।
হযরত ছোলায়মান (আঃ)-এর জন্ম ও রাজত্ব -২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন