হযরত ইউসা (আঃ) এর জন্ম নবুয়াত প্রাপ্তি ও ধর্ম প্রচার-১ম পর্ব
হযরত মুসা (আঃ) জীবিতাবস্থায়ই হযরত ইউসা (আঃ) কে তাঁর স্থালাবর্তী হিসেবে নির্বাচিত করে গিয়েছিলেন। হযরত মুসা (আঃ)-এর ভাগিনা হতেন। হযরত ইউসা (আঃ) বনী ইসরাইলদের কোন এক গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। ইতিহাসবিদগণ তাঁকে হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর গোত্রের লোক বলে চিহ্নিত করেন। তাঁর বংশ পরস্পরা সম্পর্কে ইতিহাসবিদগণের অভিমত হল যে, তাঁর পিতার নাম নুন। নুনের পিতার নাম ফরাহীম। ফরাহীম ছিলেন হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর পুত্র।
হযরত ইউসা (আঃ)-এর প্রতি আল্লাহ্র তরফ হতে নির্দেশ আসল তিনি যেন বনি ইসরাঈলদেরকে তীহ ময়দানে হতে বের করে তাঁদেরকে নিয়ে মিসরে গমন করেন। আল্লাহ্ পাকের হুকুম অনুযায়ী তিনি বনি ইসরাঈলদেরকে নিয়ে মিসর যাত্রা করলেন। পথিমধ্যে তিনি তাঁর পূর্ববিজিত দেশ সিরিয়ায় উপস্থিত হলেন। সিরিয়ায় পৌঁছে তিনি প্রথমে তথাকার ধর্মদ্রোহী অধিবাসীগণকে নির্মূল করে তাঁর অনুগত ও বাধ্যগত লোকগণকে স্বীয় ধর্মে দীক্ষিত করে তথায় শান্তি ও শৃংখলা স্থাপন করে দিলেন।
অতঃপর হযরত ইউসা (আঃ) বনি ইসরাঈলদেরকে নিয়ে ইল্লিয়া নামক নগরে গিয়ে পৌঁছলেন। তথাকার সমস্ত লোকই ছিল কাফির ও মুশরিক। তারা অত্যন্ত সাহসী ও শক্তিশালী যোদ্ধা ছিল। ইসরাঈলগণ তথায় পৌঁছা মাত্রই ইল্লিয়াবাসীগণ তাঁদের উপর হামলা করল। প্রথমাবস্থায় বনি ইসরাঈলগণ খুবই ঘবড়ায়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হযরত ইউসা (আঃ) এর ঈমান ও মনোবলের কাছে ইল্লিয়াবাসীগণ আত্নসর্ম্পণ করতে বাধ্য হল।
অতঃপর হযরত ইউসা (আঃ) খাঁটি ধর্মের পতাকা উত্তোলন করতঃ তথা হতে তিনি বনি ইসরাঈলদেরসহ বেলকা নামক রাজ্যে পৌঁছলেন। বেলকায় হযরত ইউসা (আঃ)-এর আগমনের সংবাদ পেয়ে বিরাট এক বাহিনী নিয়ে বীর বিক্রমে তাঁদেরকে বাঁধা প্রদান করল। উভয় পক্ষে ঘোরতর যুদ্ধ হল। যুদ্ধে বেলকার বহু সৈন্য প্রাণ হারাল। বাকী সৈন্যগণ পালিয়ে গেল।
উক্ত বেলকা রাজ্যে একজন সুবিখ্যাত দরবেশ ছিলেন। তাঁর নাম ছিল বালাম বাউর। তিনি একজন আল্লাহ্র অলী ছিলেন। তাঁর যে দোয়া আল্লাহ্র দরবারে কবুল হয়ে যেত।
রাজা বালাক হযরত ইউসা (আঃ) এর সাথে পরাজয় বরণ করে আর কোন উপায় না পেয়ে অবশেষে বালাম বাউরের শরনাপন্ন হল। সে তাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, আপনি আমার দেশের একজন পরম ধার্মিক সাধু পুরুষ। বিদেশী শত্রু এসে আমার দেশে আধিপত্য বিস্তার করতেছে। এ দেশ রক্ষা ও এর মান সম্মান বজায় রাখার দায়িত্ব আপনারও রয়েছে।
সুতরাং দেশের এ বিপদ মুহূর্তে আপনার সাহায্য করা একান্ত প্রয়োজন। আপনার পক্ষে যা সম্ভব আপনি আমাকে সে ধরনের সাহায্য করুন। আল্লাহ্র দরবারে আপনি দোয়া করুন যেন, আমরা ইউশার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়লাভ করতে পারি এবং তাঁকে আমাদের দেশ হতে তাড়িয়ে দিতে পারি।
হযরত ইউসা (আঃ) এর জন্ম নবুয়াত প্রাপ্তি ও ধর্ম প্রচার-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন