হযরত আবু হাশেম মক্কী (রঃ)-শেষ পর্ব
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এমন এক যুগে উপনীত, যখন সে কাজের চেয়ে কথায় এবং আমলের চেয়ে বিদ্যায় বেশী সন্তুষ্ট। অতএব বলতে হয়, সর্বোৎকৃষ্ট সময়ে অর্থাৎ রাসূলে কারীমের উম্মতের যুগে জন্মগ্রহণ করেও সে নিকৃষ্ট লোক হিসাবে গণ্য।
তাঁকে প্রায়ই বলতে শোনা যেত, যে আল্লাহর ওপর খুশি। সে কখনও মানুষের কাছে কোন কিছুর প্রত্যাশা করে না।
একদিন তিনি চলেছেন এক কসাইখানার সামনে দিয়ে। তাঁকে দেখে কসাই বলল, ভাল মাল আছে নিয়ে যান। তিনি বললেন, আমার কাছে পয়সা নেই। কসাই বলল, তাতে কী, ধার নিয়ে যান। পয়সা হলে দেবেন। হযরত হাশেম (রঃ) বললেন, তার চেয়ে বরং প্রবৃত্তির কাছে কিছু সময় ধার ধার চেয়ে নেওয়া ভালো। কসাই এবার কড়া ভাষায় বলল, তাই তো পাঁজরের হাড় ক’খানা গোনা যায়। হযরত হাশেম (রঃ) তার উত্তরে বললেন, তবুও দেহে যতটুকু গোশত আছে, তাতে কবরের কীটগুলোর অনেক দিন চলবে।
এই মহান সাধক সম্বন্ধে একজন জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছেন, তিনি হজ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে বাগদাদে গিয়ে শুনলেন যে, আবু হাশেম (রঃ) তখন ঘুমিয়ে আছেন। কিছুক্ষণ পরে ঘুম থেকে জেগে তাঁকে দেখে বললেন, খুব ভালোই হয়েছে। আমি এমাত্র নবী কারীম (সাঃ)-কে স্বপ্নে দেখলাম। তিনি আপনার সম্বন্ধে কিছু কথা বলেছেন। আপনি আপনার মায়ের হক আদায় করুন। তাঁর সেবাই নিযুক্ত হোন। আপনার জন্য হজ্জ আদায় অপেক্ষা মায়ের সেবা ও হক আদায় সেবা-পরিচর্যা করুন। তাঁর দোয়া লাভ করুন।
উক্ত জ্ঞানী ব্যক্তি বলেন, অতঃপর আর মক্কা শরীফে না গিয়ে তাঁর পরামর্শ মতো দেশে ফিরে বৃদ্ধা জননীর সেবায় আত্মনিয়োগ করলাম।
স্বপ্নের মধ্য দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আবু হাশেম (রঃ)-কে যে মহামূল্য নির্দেশ দান করেন, তাতে তাঁর হৃদয়ের পবিত্রতা ও নবি-প্রীতির পরিচয় পাওয়া যায়।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া