হযরত আবুল আব্বাস সাইয়ারী (রঃ) – শেষ পর্ব
শোনা যায়, লোকে তাঁকে জবরিয়া সম্প্রদায়ের লোক মনে করত। কেননা, তিনি এই মত পোষণ করতেন যে, লওহে মাহফুজে যার ব্যাপারে যা কিছু লেখা আছে তার কোন পরিবর্তন নেই। দাস তাতে সম্পূর্ণরূপে আবদ্ধ এ ধরণের বিশ্বাস পোষণ করার ফলে তাঁকে বহু অত্যাচার ও নিগ্রহ সহ্য করতে হয়েছে।
তিনি বলেন-
১. তোমাদের নামে যে গুনাহ লওহে মাহফুজে লেখা আছে, তা থেকে কিভাবে নিস্তার পাবে?
২. তাঁর রুজি কোথা থেকে আসে এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যিনি কারণ ছাড়াই রুজির হ্রাস-বৃদ্ধি করেন, রুজিদাতা সেই মহান প্রভুর তরফ হতে।
৩. লোভ-লালসার আঁধার মানুষের মোশাহাদার আলোতে আড়ালস্বরূপ।
৪. জ্ঞান-বুদ্ধি-বিবেচনার স্তূপ দূরে ফেলে রিক্তহস্ত হয়ে যাবার নাম মারেফাত।
৫. আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নাম অন্তরে না আসার নাম তওহীদ বা একত্ব।
৬. আল্লাহর কাছে আপনি কী আশা করেন? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যে আশা তিনি পূরণ করেন তা-ই।
৭. মুরীদ রিয়াজত কিভাবে করবে? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শরীয়তের অনুশাসন মেনে চলবে। নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকবে। আর পুণ্যবানদের অবলম্বন করবে।
৮. দান দুপ্রকার। যথাঃ (ক) কারামত ও (খ) এস্তেদরাজ। তোমার যে বস্তু আল্লাহর দরবারে গৃহীত হবে তা হল কারামত। আর যে গৃহীত হাবে না তা এস্তেদরাজ।
৯. কুরআনের আয়াত ছাড়া যদি অন্য কিছু পাঠ দ্বারা নামাজ আদায় হত, তা হলে নিম্নোক্ত কবিতার দ্বারা তা হত। যথা, বহু দিন ধরে এই আশা নিয়ে আছি, যেন কোন স্বধীন লোককে জীবনে দেখতে সক্ষম হই।
মৃত্যুর অব্যহতি পূর্বে হযরত বাউল আব্বাস (রঃ) তাঁর শিষ্যদের অসিয়ত করলেন, তোমরা আমার মৃত্যুর পর রাসূল (সাঃ)-এর পবিত্র চুল দুগাছি আমার মুখের ভেতর রেখে দিও। শিষ্যগণ তাঁর এ নির্দেশ পালন করেন।
তাঁর পবিত্র মাজার মার্ভ শহরে অবস্থিত। জনগণ তাঁর মাজার পাক যিয়ারত করে আল্লাহর দরবারে মনস্কামনা পূর্ণ হওয়ার আশায় প্রার্থনা জানায়।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
হযরত আবুল আব্বাস সাইয়ারী (রঃ) – প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন