হযরত আদম(আঃ) এর পার্থিব জীবন-২য় পর্ব
হযরত আদম(আঃ) এর পার্থিব জীবন-১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
হযরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়াকে আল্লাহ তায়ালা স্থায়ীভাবে সিংহলে বসবাসের হুকুম দেন। তাঁরা আল্লাহ তায়ালার হুকুম অনুসারে সেখানে বসবাস করতে আরম্ভ করেন। সেখানে তাঁদের সন্তান-সন্ততি জন্ম দেয়। আল্লাহ তায়ালার বিধান হিসেবে বিবি হাওয়া একত্রে দুটি সন্তান প্রসাব করতেন। একটি ছেলে অপরটি মেয়ে। এ পদ্ধতির রহস্য ছিল, এক জোড়ের ছেলে অপর জোড়ের মেয়ের সাথে এবং অপর জোড়ের মেয়ে প্রথম জোড়ের ছেলের সাথে বিবাহ সম্পাদন করা হত।
হযরত আদম (আঃ)-এর প্রথমে যে জোড়া সন্তান জন্ম হয় তাঁর ছেলের নাম কাবিল ও মেয়ের নাম রাখা হয় একলিমা। একলিমা ছিল খুব সুন্দরী ও রূপসী। দ্বিতীয় বার হযরত আদম (আঃ)-এর যে সন্তান জন্ম নেয় তাঁর ছেলের নাম রাখা হয় হাবিল ও মেয়ের নাম রাখা হয় সাজা। দ্বিতীয় বারের কন্যাটি তেমন সুন্দরী ছিল না। এভাবে প্রতি বছর বিবি হাওয়া এক জোড়া করে সন্তান জন্ম দিতে আরম্ভ করেন। ইতিহাস সূত্রে যতদূর জানা যায় তাতে বিবি হাওয়া সর্বমোট ১৮০ জোড়া সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন বলে কথিত আছে।
প্রথম ও দ্বিতীয় জোড়ের সন্তানেরা যখন বড় হয় তখন আল্লাহ তায়ালা তাঁর বিধান অনুসারে তাঁদের বিবাহ সম্পাদন করার জন্য তাগিদ দেন। তখন হযরত আদম (আঃ) প্রথম দুই জোড়ের সন্তানদেরকে ডেকে আল্লাহ তায়ালার বিধান অনুসারে বিবাহের প্রস্তাব করেন। এক্ষেত্রে সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান কাবিল আপত্তি করে বলল, আমার বোন একলিমাকে আমি বিবাহ করব। তখন হযরত আদম (আঃ) বললেন, এটি আল্লাহ তায়ালার বিধান নয়। কাবিল বলল, এটি আল্লাহ তায়ালার বিধান নয় তাঁর প্রমাণ কি ? তখন হযরত আদম (আঃ) বললেন, তুমি এবং হাবিল দুজনে দুটি কুরবানী করে মিনার পাহাড়ের উপর রেখে আস। যার কুরবানী আল্লাহ কবুল করবেন সে একলিমাকে বিবাহ করবে।
হযরত আদম (আঃ)-এর যুগে সত্য-মিথ্যা, ভাল-মন্দ অবগতির জন্য আল্লাহ তায়ালা এ ধরণের একটি মোজেজা হযরত আদম (আঃ)-কে দান করেছিলেন। অন্যান্য নবীগণের যুগেও এ জাতীয় অনেক ব্যবস্থা চালু ছিল। যা দ্বারা সরাসরি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অজানা বিষয় সম্বন্ধে জ্ঞাত হওয়া সম্ভব ছিল এবং উচিৎ বিচারের রায় পাওয়া যেত। যেমন- হযরত নূহ (আঃ)-এর যুগে ছিল ‘জাহাজ’। জাহাজের উপর হাত রাখলে যদি জাহাজ স্থির থাকত তবে বুঝা যেত বাদী সত্যবাদী, আর যদি নড়ে উঠত রবে বুঝা যেত বাদী মিথ্যাবাদী।
হযরত দাউদ (আঃ-এর যুগে ছিল “ লোহার শিকল” এর ব্যবস্থা। এটা আসমানে ঝুলন্ত থাকত। বিবাদমান ব্যক্তিদের মধ্যে যে শিকল ধরত সে যদি সত্যবাদী হত তা হলে শিকল তাঁর হাত জড়িয়ে ধরত। আর যদি মিথ্যাবাদী হত তবে শিকল তাঁকে ধরত না। হযরত সোলায়মান (আঃ)-এর যুগে ছিল ‘গর্তের বিচার’। বিবাদমান ব্যক্তিদের মধ্যে যার পা গর্তে আটকে যেত সে ছিল অন্যায়কারী আর যার পা গর্তে আটকাত না সে ছিল সত্যবাদী।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী
হযরত আদম(আঃ) এর পার্থিব জীবন-৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন