হজরত মুসা (আঃ) এর বিবাহ ও যৌবন-২য় পর্ব

হজরত মুসা(আঃ) এর বিবাহ ও যৌবন-১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

তুমি গত দিন এক কার্য করেছ আজ আবার সেরুপ কাজে প্রবৃত্ত হতে যাচ্ছ। তোমার জীবনের কোন নিরাপত্তা আছে কি? ছামেরী হজরত মুসা(আঃ) এর কথায় ভাবল সে হয়ত গত দিনের কিবতী হত্যার অভিযোগ টা তার উপর বর্তাবে। তাই সে নিজের রক্ষার জন্য হজরত মুসা (আঃ) কে অনুযোগ করে বলল, তুমি গত দিনে একজন কিবতী কে হত্যা করেছ। আজকে আবার আমাদের ঝগড়ার সুযোগে আর একজন কিবতীকে হত্যা করতে এখানে এসেছ। একথা শুনে কিবতী শুনে হজরত মুসা (আঃ) কে বলল তুমি গত দিনের হত্যা কান্ড ঘটিয়েছ? তোমাকে পুলিশ অনেক খোঁজ করেও পায়নি। আজকে আবার হত্যা ষড়যন্ত্র নিয়ে এখানে এসেছ? আচ্ছা! তোমাকে দেখাচ্ছি। এই বলে ফেরাউনের দরবারের দিকে দৌড় দিল।

 হজরত মুসা (আঃ) ভাবলেন ফেরাউন তার পালক পিতা হলেও  বিচারের ক্ষেত্রে তাকে আদৌ রেহাই দেব না। যেমন উচিৎ বিচারে তার  মাকেও ছাড় দেয়নি। তাই তাকে কঠোর শাস্তি দিতে দ্বিধা বোধ করবে না। এই ভেবে তিনি রাস্তার এক গলি ধরে সম্মুখে অগ্রসর হতে লাগলেন। এমন সময় জনৈক ব্যক্তি এসে তাকে বলল, হে ফেরাউন পালকপুত্র! আমি তোমাকে চিনি, তুমি একজন বনি ইসরাইল গোত্রের মুসলমান। আমিও একজন মুসলমান, তবে আমি ফেরাউনের দরবারে চাকুরি অবস্থায় আছি। আমি কিছুক্ষণ পুর্বে দেখে এসেছি তোমার বিরুদ্ধে ফেরাউনের দরবারে এক হত্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। সে মর্মে ফেরাউন তোমার খুঁজে বের করার জন্য চারিচিকে লোক প্রেরণ করেছে। অতএব তুমি নিজের নিরাপত্তার জন্য এখন থেকে দ্রুত কেটে পড়। এই বলে লোকটি চলে গেল। হজরত মুসা (আঃ) আগন্তুকের খবর শুনে চিন্তা যুক্ত হলেন হলেন এবং দ্রুত পথ অতিক্রম করতে লাগলেন। কোথায় যাবেন তার কোন সঠিক সিধান্ত ছিল না। তবে তিনি মনে মনে ভাবলেন বর্তমান অবস্থায় তার মিশর ত্যাগ করা উচিৎ। তাই তিনি সোজা পথ চলতে লাগলেন।

তিন দিন পথ চলর পরে তিনি এক ময়দানে গিয়ে পৌঁছালেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত ক্লান্ত শ্রান্ত। তাই তিনি একটি কুপের অদূরে পাহাড়ের নিচে বসে বিশ্রাম করতে লাগলেন। এমন সময় তিনি দেখলেন দুইটি যুবতী মেয়ে মেষ নিয়ে পানির কুপের নিকট দাঁড়িয়ে আছেন। তখন তিনি অগ্রসর হয়ে তাদের নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কারা? এখানে কেন দাঁড়িয়ে আছ? মেয়েরা উত্তর দিল আমরা আমরা আল্লাহার নবী হযরত শোয়ায়ের (আঃ) এর মেয়ে।

আমরা এখান থেকে আমাদের মেষগুলোকে পানি পান করার জন্য এসেছি। কিন্তু কুপটি ভারী পাথর দিয়ে ঢাকা তাই চৌকিদারের অপেক্ষা করছি। উনি এসে পাথর সরিয়ে  দিলে আমরা আমদের মেষগুলো কে পানি পান করাব। হজরত মুসা (আঃ) বললেন আমি পাথর সরিয়ে দেই। তোমরা তাহলে সহজে আপনি পান করাতে পারবে। মেয়েরা বলল, পাথর টা অনেক ভারি যা স্বাভাবিক ভাবে অনেক লোক একত্রে এসে নাড়া চাড়া করে থাকে। ওটা আপনি একাকী কিভাবে সরিয়ে দেবেন? তখন হজরত মুসা (আঃ) কুপের কাছে গিয়ে পাথরটি একাকী সরিয়ে ফেললেন। তখন মেয়েরা অনেক খুশি হয়ে মেষ গুলোকে পানি পান করাল। অতপর হজরত মুসা (আঃ) কে তারা কিছু টাকা দিতে চাইল। হজরত মুসা (আঃ) তা নিতে অস্বীকার করলেন,এবং মেয়েদের চলে যেতে বললেন। মেয়েরা অত্যন্ত খুশি হয়ে দ্রুত পথ অতিক্রম করতে লাগলেন।

একটু পরেই তারা গিয়ে তাদের বৃদ্ধ পিতার নিকট যুবকের বদান্যতার কথা আলোচনা করল। এমন কি তারা তাদের পিতার নিকট অনুরোধ করে বলল, বাবা! এই ছেলেটি কে তুমি আমাদের বাড়ি রেখ দাও। সে অত্যান্ত শক্তিশালী ও ন্যায় পরায়ণ। তাকে তুমি রেখে দিলে সে নিয়মিত মেষ চরাবে এবং বাইরের যাবতীয় কাজ কর্ম করতে পারবে। আমরা তাহলে অধিক সময় তোমার কাছে থাকতে পারব। হযরত শোয়ায়েব (আঃ) এর বড় মেয়ে ছফুরাকে বললেন, তুমি যাও আমার কথা বলে ছেলেটিকে এখানে নিয়ে আস। তখন ছফুরা দূরত সেখানে পৌঁছে দেখল, ছেলেটি তখন পর্যন্ত সেখানে বসে আছে।

সূত্রঃ কুর আনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

হজরত মুসা(আঃ) এর বিবাহ ও যৌবন-৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।