রিসালাত – পর্ব ৩
রিসালাত – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তৃতীয় যে ব্যক্তিকে জীবিত করেছিলেন সে ছিল এক ট্যাক্স আদায়কারীর পুত্র তার মৃত্যুর হলে হযরত ঈসা (আঃ) তার জন্য দোয়া করেছিলেন। আল্লাহ তাকে পুনরায় জীবিত করে দিয়েছিলেন।
তার দ্বারা জীবিতদের মধ্যে চতুর্থ ব্যক্তি হলেন হযরত নূহ (আঃ)-এর পুত্র সাম। হযরত ঈসা (আঃ) তার কবরের পার্শ্বে এসে ইসমে আযম পাঠান্তে তার জন্য দোয়া করলেন। সাম কবর হতে বের হয়ে আসলেন। তার মাথার অর্ধেক চুল পাকা ছিল। অথচ তার সময়ে আশ্চর্য হয়ে তার চুল পাকার কারণ জিজ্ঞেস করলেন, তিনি বলেন যে, কিয়ামতের ভয়ে তার চুল পেকে গিয়েছে।
চতুর্থ নিদর্শন হল লোকেরা কি খেয়েছে বা কি খাবে এবং কি সঞ্চয় করবে তা বলে দিতে পারতেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে-
وَأُنَبِّئُكُم بِمَا تَأْكُلُونَ وَمَا تَدَّخِرُونَ فِي بُيُوتِكُمْ
অর্থঃ তোমরা যা আহার কর এবং তোমাদের ঘরে যা সঞ্চয় রাখ আমি সে সম্পর্কে তোমাদেরকে খবর দিতে পারি। (সূরা আলে-ইমরান)
হযরত ঈসা (আঃ) শিশুদেরকে বলে দিতে পারতেন, যে তাদের গৃহে কি রান্না হয়েছে। তাদের পরিবারের লোকজনের মধ্যে কে কি খাদ্য আহার করেছে আর কে কি খাদ্য সঞ্চয় করে রাখছে। তাদের মা-বাবা খাদ্য গোপন করে রেখেছিল। এ সম্পর্কে কেউ জানে না। তারা কি করে জানে? তাই তাদের মা-বাবারা আশ্চর্য হয়ে যেত। তারা বুঝতে পারল যে, কেউ তাদের এ গোপন সংবাদটি অবগত করাচ্ছে। তাই জিজ্ঞেস করল, এ খাদ্য সম্পর্কে তোমাদেরকে কে অবগত করিয়েছে? শিশুরা বলল, হযরত ঈসা (আঃ) ইবনে মারইয়াম (আঃ) অবগত করিয়েছেন। তারা
শিশুদেরকে বলল, তোমরা কখনও তার কাছে যাবে না। কেননা তিনি যাদুকর। তারা শিশুদেরকে বন্দী করে রাখল যেন তাঁর কাছে গমন করতে না পারে। ফলে শিশুরা পরের দিন ঈসা (আঃ)-এর কাছে আর কেউ আসল না পরের দিন শিশুদেরকে না পেয়ে তিনি তাদের খোঁজে বের হলেন। শিশুদের পিতা-মাতা ও অভিভাবকদেরকে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা জবাব দিল যে, শিশুরা কোথায় গিয়েছে তারা তা অবগত নয়। হযরত ঈসা (আঃ) ঘর তালাবদ্ধ দেখলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ ঘরে কারা অবস্থান করছে? জবাবে তারা বলল এ ঘরে শুকর রয়েছে। হযরত ঈসা (আঃ) বলেন, তারা এরূপই হয়ে যাবে। এ বলে তিনি ফিরে আসলেন। পরে শিশুদের মা-বাবা ও অভিভাবকরা গৃহের দরজা খোলার পর দেখতে পেল যে ঘরে অবস্থিত সকল শিশুদের শুকরে পরিণত হয়ে গিয়েছে।
কোন কওমের কাছে নবী বা রাসূল প্রেরণে আল্লাহ তায়ালার সাধারণ নিয়ম হল যে, যখন কোন কওমকে হিদায়াত এবং তাদের দ্বীনি ও দুনিয়াবী সফলতার জন্য কোন নবী বা রাসূল পাঠাতে চান তখন দেখেন যে, এ কওমের লোকেরা কোন বিষয়ে নিজেদেরকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী মনে মোজেজার সামনে তখন সর্বপ্রকার অভিজ্ঞতা ও অহংকার ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। তাদের সব ধরণের আষ্ফালন ধূলিস্মাত হয়ে যায়।