রাজস্বের উৎস

রাজস্বের উৎস হযরত ওমর (রাঃ) এর পূর্বে পাঁচ ধরনের ছিল, যেমন জিযিয়া, যাকাত, ভূমিকর, গনিত বা যুদ্ধলব্ধ দ্রব্যাদি এবং রাষ্ট্রেীয় ভুমির আয়।  খলিফা হযরত ওমর ফারুখ (রাঃ) উপরের কয়েকটি কর ছাড়াও আরও কয়েকটি কর প্রথা চালু করেছিলেন।  খারাজ ছিল রাজস্বের খুবই গুরত্বপূর্ণ উৎস।  মুসলিম সাম্রাজ্যের প্রচুর বৃদ্ধি লাভ করে হযরত ওমর (রাঃ) এর আমলে।

 বিজিত  এলাকা থেকে যে ভূমি রাজস্ব বা খাজনা আদায় করত এটাই খারাজ বা ভূমির কর হিসাবে পরিচিত ছিল।  বিজিত এলাকার মুসলমানদেরকে ভূসম্পতির ক্রয় করতে নিষেধ করে দেয়া হয়েছিল।  ভূমি করের পরিমাণ নির্ধারণ করা হত জমির গুনগত মান, সেচের সুযোগ-সুবিধা এবং উৎপাদনের পরিমাণ ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে কর ধার্য করা হত। 

মুসলমানদের নিকট হতে কেবল যাকাত আদায় কর হত।  এর আওতা হতে কোন মুসলমান মুক্ত ছিলেন না।  ভেড়া,উট, ছাগল, এগুলোর জন্য যাকাত আদায় করত।  হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আমলে ঘোড়ার জন্য কোন যাকাত প্রদান করতে হত না।  হযরত ওমর (রাঃ) এর আমলে ঘোড়ার তেজারত লাভজনক ছিল প্রচুর।  এ কারণে হযরত ওমর (রাঃ) ঘোড়ার জন্য যাকাত নির্ধারন করেছিলেন।  অমুসলমানদের নিকট হতে আদায় করা হত জি্যিয়া। 

পূর্বেও প্রচলিত ছিল এ কর।  হযরত ওমর (রাঃ) করের হার সামান্য কিছুটা  পরিবর্তন করলেন।  হযরত ওমর (রাঃ) পারসিক এবং রোমানদের আর্থিকের দিকে বিচেচনা করে সকল ধনী লোকের উপর চার মধ্যবিত্তের উপর দুই এবং অল্প আয়ের লোকদের উপর এক দিনার হিসাবে এ কর নির্ধারণ করলেন।  যুদ্ধলব্ধ বা গণিমত দ্রব্যাদীর এক-পঞ্চামাংশ কোষাগার  জমা রেখে অবশিষ্ট মুসলিম সৈন্যবাহিনীর মাঝে ভাগ করে দিতেন। 

সাম্রাজ্যের জন্য জমাকৃত এ অংশকে খুমস বলা হত।  হযরত ওমর (রাঃ) এর আত্নীয়-স্বজন এবং মুসলিম সৈন্যদলের সাজ-সরঞ্জামের তা ব্যয় কর হত।  আল-ফে ছিল রাজস্ব আদায়ের একটি উৎস।  সকল জমি মুসলমানদের হস্তগত হয় তাই আল ফে নামে অভিহিত হয় এ জমি।  রাষ্ট্র ছিল এ সব  সম্পতির স্বত্বাধিকারী।  রাষ্ট্রের প্রচুর আয় হত আল-ফে জমি হতে।  উশর নামে একটি নতুন করে কর নির্ধারিত করলেন হযরত ওমর (রাঃ)।  সম্পূর্ণভাবে   নতুন ব্যাবস্থা হল এ উশর। 

বিদেশী বণিকেরা কোন প্রকার বাণিজ্য-শুল্ক প্রদান করত না ইসলামের প্রাথমিক আমলে।  শতকরা দশ ভাগ পরিমাণে বাণিজ্য শুল্ক দিতে হতে মুসলমান ব্যাবসায়ীদেরকে তাঁদের পণ্য শুল্ক করের সম্পর্কে হযরত ওমর (রাঃ) এর কাছে বলা হলে তিনি বিদেশী বণিকদের কাছ হতে বাণিজ্য শুল্ক কর গ্রহণ করলেন।  হযরত ওমর (রাঃ) বায়তুল মালের পুনর্গঠন অন্যতম কৃতিত্ব  রাখেন।  হযরত ওমর (রাঃ) এর আগে বায়তুল মালের অস্তিত্ব থাকলেও তা তখন নিয়মিত প্রতিষ্ঠান বল পরিগণিত হত না।  হযরত আবু বকর (রাঃ) এর আমলে একটি কোষাগার মদীনাতে থাকলেও রাষ্ট্রের অন্য কোন জায়গায় এর কোন শাখা ছিল না।  ওয়ালিদ বিন হিশামের পরার্শক্রমে খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) একটি কেন্দ্রীয় কোষাগার প্রতিষ্ঠা করলেন এবং পর এসব প্রদেশে একটি করে কোষাগার স্থাপণ করলেন।  সাম্রাজ্যের রাজস্ব সংগৃহীত হয়ে বায়তুল মালে জমা করা হত।  বায়তুল মাল জনগণের সম্পত্তি ছিল তাতে খলিফার কোন অধিকার ছিল না।  হযরত ওমর (রাঃ) ছিলেন বায়তুল মালের রক্ষক।  সাম্রাজ্যের শাসন কাজের খরচ এবং সামরিক খাতে ব্যয়ের পর যে অর্থ জমা থাকত সাম্রাজ্যের মুসলমানদের মাঝে তা ভাগ করে দেয়া হত। 

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।