মুসলমানগণকে সাদরে গ্রহণ খৃষ্টান রাজা নাজ্জাশীর-৩য় পর্ব
মুসলমানগণকে সাদরে গ্রহণ খৃষ্টান রাজা নাজ্জাশীর-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তাদের সঙ্গে কথা-বার্তা, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে বনী হাশেমের সাথেও অনুরূপ ব্যবহার করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা মুহাম্মাদকে আমাদের হাতে কতল করার জন্য সোপর্দ না করবে। এ চুক্তিনামায় আরবের সমস্ত গোত্রের সর্দারগণ স্বাক্ষরিত করে কা’বাগৃহে লটকিয়ে দেয়া হয়েছে। নবুয়তের সপ্তম বছরে মোহররমের প্রথম তারিখে তা লিখিত হয়েছে। লেখক ছিল মানসুর বিন একরামা। এ আহাদ নামা লিখার অল্পদিন পরেই মুনসুরের হাত অবশ হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য যারা এ চুক্তিনামায় শরীক ছিল এবং একমত ছিল তাদের সকলের উপর আল্লাহর অভিশাপ নাজিল হয়েছে। তাদের মধ্যে কারও ঈমান নছিব হয় নি। এ ঘটনার পর বনী হাশেম ও সমস্ত মুসলমান পর্যন্ত গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল। পাহাড়ের একটি গুহায় কাফেরগণ তাদেরকে অবরোধ করল।
রাসূল (সাঃ)-এর চাচা আবু তালেবও ভ্রাতুষ্পুত্রের সঙ্গে সে গুহায় চলে যান। ঐ গুহাকে আবু তালেব উপত্যকা বা শেয়াবে আবী তালেব বলা হয়। সেখানে তিন বছর পর্যন্ত কালাতিপাত করেন। এই তিন বছরের মধ্যে মুসলমানগণের সেই দুরাবস্থা হয়েছিল তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। দুধের শিশুগণ যখন মায়ের স্তনে দুধের অভাবে চিৎকার করে উঠত তখন গুহার বাইরে পর্বতমালায় প্রতিধ্বনি উঠত। ইবন ছায়াদ তাবাকাতে বর্ণনা করেন, শিশুদের আর্তনাদে কাফেরের হৃদয় ও কেঁদে উঠত। আর পাষাণ হৃদয় কাফেরগণ ঐ ক্রন্দন শুনে আনন্দ উপভোগ করত। হযরত ছায়াদ বিন আক্কাস বলেছেন, এক রাত্রে ক্ষুধার জ্বালায় অস্থির হয়ে এক টুকরা শুকনো চামড়া ধুইয়ে আগুনে ভেজে পানিতে মিশ্রণ করতঃ ভক্ষণ করলাম। মরু এলাকায় এক প্রকার বৃক্ষ তালহ নামে পরিচিত ঐ গাছের পাতা খেয়ে ক্ষুধা নিবৃত্তি করতে হত। একবার হাকীম বিন হেজাম তাঁর ফুফু খাদীজা (রাঃ)-এর নিকট চুপে চুপে কিছু খাদ্য প্রেরণ করলেন কিন্তু পথে আবু জাহেলের সাক্ষাৎ হলে পরে সে তা কেড়ে নিল। এভাবে অনেক কাফের ব্যক্তি নিজ নিজ আত্মীয়-স্বজনের জন্য কিছু পাঠাবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হত।
মুসলমানগণকে সাদরে গ্রহণ খৃষ্টান রাজা নাজ্জাশীর-শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন