মিশরের বিখ্যাত কারী আবদুল বাছেতের মুখে শোনা কোরআনের প্রভাবের একটি অসাধারণ কাহিনী
১৯৭৮ সালে কিছুদিন আমি আমেরিকায় ছিলাম। সে সময় মিসরের বিখ্যাত কারী আবদুল বাছেতের সাথে কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সুযোগ হয়েছিল। কোথাও ইংরেজীতে কোথাও উর্দূতে আমিও কিছু কিছু কথা বলেছিলাম। এক অনুষ্ঠানে একজন লোক কারী সাহেবকে প্রশ্ন করেছিলেন কারী সাহেব আপনি এতো চমৎকার করে কোরআন তেলাওয়াত করেন আপনি কি কখনো কোরআনের মু’জেযা লক্ষ্য করেছেন? কারী সাহেব বললেন, হা আমি কোরআনের অনেক মু’জেযা দেখেছি।
একটি ঘটনার কথা বলছি। শুনে আপনারাও অবাক হবেন। সে সময় মিশরের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জামাল আবদুন নাসের। একবার তিনি রাশিয়া সফরে যান। সরকারী কাজ শেষে রাশিয়ার কমিউনিস্টরা প্রেসিডেন্ট নাসেরকে বললেন, আপানি আমাদের মতো কমিউনিস্ট হয়ে যান আমাদের লাল বই পড়ুন আমরা মিশরের প্রযুক্তি দিয়ে ভরে দেব। নাসের নিশ্চয়ই কোনো জবাব দিয়ে ইসলামের উপর তার অটল বিশ্বাসের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তার মনে হলো নাস্তিকদের সামনে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব আমি সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারিনি। দু’বছর পর পুনরায় প্রেসিডেন্ট নাসের রাশিয়া সফরে যান।
এবার আমাকেও সাথে নিয়ে গিয়েছিলেন। সরকারী কর্মসূচী শেষে হালকা মেজাজে কথা বলার সময় প্রেসিডেন্ট নাসের আমাকে দেখিয়ে বললেন, ইনি আপনাদের কিছু পড়ে শোনাবে। ওরা জানতে চাইলো কি পড়বে। নাসের বললেন, কোরানের কিছু অংশ শোনাবে। তারপর প্রেসিডেন্ট আমাকে ইঙ্গিত করলেন, ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) কোরআনের সূরা ত্ব-হার কিছু অংশ পড়া শুনে মুসলমান হয়েছিলেন।
আমি সূরা ত্ব-হার দু’ রুকু পাঠ করলাম। চোখ মেলে দেখি সামনে বসা কমিউনিস্টদের মধ্যে পাঁচ ছয়জন অঝোর ধারায় কাঁদছেন। প্রেসিডেন্ট নাসের কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করায় তারা বললেন, আপনার সাথী কি পড়েছে আমরা বুঝতে পারিনি কিন্তু তার পঠিত কথাগুলো আমাদের মন মোমের মতো গলিয়ে দিয়েছে।