ভারতের মুম্বাইয়ের এক দানশীল শেঠ এর কবরে একটি ভয়ানক সাপ, শেঠ এর জিহবা কামড়ে বাইরে বের করার জন্য টানছিল
ভারতের মুম্বাই শহরে একজন শ্রদ্ধেয় শেঠ ছিলেন । তার ব্যবসা ছিল বেশ ব্যপক । অর্থসম্পদ ছিল অঢেল অফুরন্ত । তিনি যে ব্যবসা শুরু করতেন ওতেই লাভবান হতেন । তিনি ছিলেন বেশ দানশীল । এতিমদের, বিদবাধের অর্থ সাহায্য করতেন । অনেকের জন্য মাসিক ভাতারও ব্যবস্থা করেছিলেন । সরকারের বিভিন্ন খয়রাতি কর্মসূচি বাস্তবায়নেও আর্থিক সহায়তা ছিল । হঠাৎ একদিন এই শেঠ মৃত্যুমুখে পতিত হলেন । হাজার হাজার মানুষ তার জানাযায় অংশগ্রহন করলেন । বহু লোক তার জন্য বিলাপ করে কাঁদছিল । আমিও সেই শেঠ এর জানাযায় অংশ নিয়েছিলাম । তার জানাযায় এত বিপুল সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহন দেখে আমি তার প্রতি ঈর্ষাবোধ করছিলাম । জানাযা নামাজ শুরুর যখন আয়োজন করা হচ্ছিল হঠাৎ দেখা গেল, অসম্ভব সুন্দর চেহারায় দীর্ঘাঙ্গি একজন লোক গেরুয়া রং-এর পোশাক পরিধান করে জানাযার নামাজে অংশগ্রহনের জন্য উপস্থিত হল ।
মরহুম শেঠ এর জন্য তার বিলাপধ্বনি অন্য সবার বিলাপকে ছাড়িয়ে যাচ্ছিল । কিন্তু তাকে কেউ আগে কখন দেখেনি । সবাই মনে করলো, হয়তো শেঠ এর বিশেষ কোন বন্ধু হবে । অজ্ঞাত পরিচয় লোকটি মৃত শেঠকে দাফনের জন্য কবরে নেমেছিলেন । কবরে মাটি চাপা চাপা দেওয়ার কাজ শেষ হবার পর হঠাৎ অচেনা লোকটি চিৎকার করে বললো সর্বনাশ হয়ে গেছে । আমার একটি ব্যাগ কবরে পড়ে গেছে । সেই ব্যাগে আছে ১০ হাজার টাকা । আপনারা কবরের মাটি সরিয়ে আমার ব্যাগটি উদ্ধার করে দিন । জানাযা পরার সময়ও ব্যাগটি আমার পকেটে ছিল । এইমাত্র কবর দেওয়া শেষ হয়েছে, এখন কবর খননে অসুবিধা নেই । তাছাড়া ১০ হাজার টাকা তো অনেক টাকা । এসব ভেবে কয়েকজন কবরের মাটি সরালেন । আমি কবরের খুব কাছে ছিলাম এবং সবার তৎপরতা প্রত্যক্ষ করছিলাম । মাটি সরানোর কাজেও অংশ নিছিলাম । কবেরর মাটি সরিয়ে একটি তক্তা সরাতেই ভিতর থেকে লেলিহান আগুন এর শিখা বের হল । যারা কবরের মাটি সরাচ্ছিল তারা চিৎকার দিয়ে দূরে সরে গেল ।
কেউ কেউ বেহুশ হয়ে গেল । কবরের ভিতর তাকিয়ে যে ভয়াবহ দৃশ্য দেখা গেল, সে দৃশ্য স্থির থাকা কারো প্রতি সম্ভব ছিল না । আমি নিজের চোখে কবরের ভিতর যে দৃশ্য দেখেছি আল্লাহ যেন কোন শত্রুকেও ওরকম ভয়ানক দৃশ্য দেখার দুর্ভাগ্য না দেন । আমি দেখলাম, একটি বিরাট সাপ শেঠ এর দেহের নিন্মাংশে পেচিয়ে আছে । শেঠ বসে আছেন । তার জিব্বা বেরিয়ে আছে । দেহের নিন্মাংশে পেচিয়ে থাকা সাপ শেঠ এর জিব্বা কামড়ে ধরে বাইরের দিকে টানছে । আর হুংকার দিচ্ছে । সাপটি হুংকার দেওয়ার সময় সাপটির মুখ থেকে আগুনের শিখা বের হচ্ছে । সেই আগুনের শিখাই শেঠ এর মুখমণ্ডল কাল হয়ে যাচ্ছে । তাছাড়া কিছুক্ষণ পর পর কবরে আগুন জ্বলে উঠছে, সেই আগুনে শেঠ এর পুরা দেহ ঝলসে যাচ্ছে । চিন্তা করলাম, এরকম ভয়াবহ দৃশ্য চোখে দেখে সাহায্য করা যাচ্ছে না । যাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে তার কেমন লাগছে । কি কঠিন অবস্থা ।
কবর কি এভাবে খোলা রাখা যাবে ? কয়েকজন সাহসী লোক এগিয়ে গিয়ে তক্তা দিয়ে লাশ ঢেকে দিল । তারপর তড়িঘড়ি মাটি চাপা দিয়ে দিল । ঘরে ফিরার পর আমি কয়েকদিন যাবত কথা বলতে পারিনি । কবরের আযাবের ভয়াবহতা নিজের চোখে দেখেছিলাম । একজন বুজুর্গের কাছ থেকে পানি পড়া পান করে আমি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছিলাম । বিস্ময়ের কথা হচ্ছে, শেঠ এর জন্য বিলাপ করা লোকটিকে কথাও খুঁজে পাওয়া যাইনি । কি রকম পাপের কারনে সেথকে ওরকম শাস্তি দেওয়া হচ্ছিল সেটা মহান আল্লাহ জানেন । অন্য কেউ জানে না । পড়ে জানা গেল, সে হারাম কামাই করে খয়রাত করত ।