বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) – পর্ব ৩
বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রূহানী জগতের খাঁটি প্রতজ্ঞাদা সুফী সাধক হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ আবু ছালে মুসা জঙ্গী-দোস্ত (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ আবু আবদুল্লাহ আলজিবিল্লী (রঃ) ইবনে আবদুল্লাহ সানী (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ ইয়াহইয়া যাহেদ (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ মোহাম্মদ (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ দাউদ (রঃ) ইবনে আবদুল্লাহ সানী (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ মুসালজুন (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ দাউদ (রঃ) আবদুল্লাহ আর মাহাস (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ হাসানুল মুসান্না (রঃ) ইবনে আমীরুল মুমেনীন হযরত ইবনে আবু তালিব কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু অর্থাৎ বেলায়েত জগতের সম্রাটের একাদশ ঔরসে সত্যের সেনানী সূফী সাধক হযরত বড়পীর ছাহেব (রঃ) আবির্ভূত হন।
মাতৃবংশঃ গাওসুল আযম বড়পীর সাহেবের (রঃ) মাতা হযরত সাইয়্যেদা উম্মুল খায়ের আমাতুল জাবদর ফাতেমা বিনতে হযরত সাইয়্যেদ আবদুল্লাহ ছাওমার্দ যাহেদ (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ আবু জামাল (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ মোহাম্মদ (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ মাহমুদ (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ আবুল আতা আবদুল্লাহ ইবনে সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন ঈসা (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ আবু আলাউদ্দীন
মোহাম্মাদুল জাউয়াদ (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ আলীউররেয়া (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদ মুসা আল কাশেম (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদুনা ইমাম জাফর সাদেক (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদুনা ইমাম যাকের (রঃ) ইবনে সাইয়্যেদেনা যাইনুল আবেদীন (রঃ) সাইয়্যেদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহুর অষ্টাদেশ ঔরসে জন্ম গ্রহণ করেন। ঐতিহাসিকগণ বলেন, উপরোক্ত উভয় নসবনামার প্ররিপ্রেক্ষিতে তিনি হাসানী এবং হুসাইনী সাইয়্যেদ।
জন্মঃ ইতিহাস পাঠে জানা যায়, হযরত গাওসুল আযম মহিউদ্দীন আবদুল জিলানী (রঃ) চারশত সত্তর মতান্তরে চারশত একাত্তর হিজরী সনের পবিত্র রমজান মাসের পহেলা কিংবা ২১শে প্রসিদ্ধ জিলান শহরে সুবিখ্যাত সাইয়্যেদ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে জানা যায় প্রসিদ্ধ জিলান শহরটি পারস্য রাজ্যের অধীন পবিত্র ইরাক প্রদেশের অন্তর্গত একটি ক্ষুদ্র শহর যারা ইতিহাসের পাতায় সীলান নামেও পরিচিত। প্রিয় পাঠক পাঠিকার সুপ্ত হৃদয়ে প্রশ্ন হতে পারে যে হযরত আবদুল কাদের জিলানী সাহেবের (রঃ) নামের শেষে কেন জিলানী সংযোগ করা হল জবাবে বলা যেতে পারে যে জিলানের সহিত সম্বন্ধযুক্ত বলে তাকে বাগদাদ হতে ওয়াসেতের পথে একদিনের পথ। কোন কোন ইতিহাসে বেত্তারা বলেন ৪০০ মাইল দূরে অবস্থিত।
নামকরণঃ ইসলামী জ্ঞানবীদদের দৃষ্টিকোণ থেকে জানা যায়, আওলীয়াকূলের শিরমণি সুফী সাধক হযরত গাওসুল আযম আবদুল কাদের জিলানী সাহেবের (রঃ) শুভ জন্মের কিছু সময় পরই নিখিল বিশ্বের ত্রানকর্তা সুপারিশের কাণ্ডারী নবীয়ে দোজাহান হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) স্বীয় প্রধান সাহাবায়ে কেরামের সাথে লয়ে সূফী সাধক সাইয়্যেদ আবু সালেহ মূসার বাসগৃহে তাশরীফ আনলেন এবং সাইয়্যেদ আবু সালেহকে লক্ষ্য করে অদৃশ্য জগত হতে বললেন, হে আবু সালেহ! এ পার্থিব জগতে তুমিই অধিক ভাগ্যবান। যেহেতু তোমার গৃহে আওলীয়াকূলের শিরমণি রূহানী জগতের খাঁটি প্রজ্ঞাদাতা আল্লাহর ওলী আজ জন্মগ্রহণ করেছেন। তোমার ভাগ্যবান শিশুদের নাম রাখ মাহবুবে সোবহীনা। সে পার্থিব জগতের মানুষের কাছে আবদুল কাদের নামে অর্থাৎ মহাশক্তিমান আল্লাহ তায়ালার বান্দা নামে। আমি খাস করে তোমার শিশুর জন্য দোয়া করছি। তোমার শিশু যেন জগতে মাঝে সুনাম সুখ্যাতি ছড়ায়ে অমর কীর্তি স্থাপন পূর্বক চিরস্মরণীয় হয়। এহেন কথা শুনে কার হৃদয়ে আনন্দ না হয়। তদ্রুপই সত্যের সৈনিক সূফী সাধক সালেহ (রঃ) এই বিস্ময়কর অদৃশ্য বাণী শ্রবণ করে অতি মাত্রায় আনন্দিত হলেন এবং তখনই দুই রাকাত শোকরানার নামাজ আদায় করলেন। অতঃপর মহা করুণাময় আঁধার আল্লাহ জাল্লা শানহুর শাহী দরবারে অনেকক্ষণ যাবৎ মোনাজাত করলেন।
ফাযায়েলে গাওসিয়্যাহ নামক কিতাবে ইসলামের বীর সেনানী হযরত আলী (রঃ) হতে একটি রেওয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, সাইয়্যেদুর মুরসালিন হযরত মোহাম্মদ (রঃ) তার জীবনকালে মাহবুবে সোবহানী আওলীয়াকুলের শিরমণি হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) সন্বন্ধে এরূপ দোয়া করেছিলেনঃ হে পরওয়ারদিগার আপনি আমার সেই নায়েবের প্রতি রহমত বর্ষিত করুন, যে আমার পরে ধরাধামে আবির্ভূত হবে সেই সাধক কূলের শিরমণি আমার হাদীসসমূহ বর্ণনা করে আমার দ্বীন শরীয়তের পথে পরিচালিত করবে।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) – পর্ব ৪ পড়তে এখানে ক্লিক করুন