বীরে-রুমা
রাসূল (সাঃ) তাবুক অভিযানের প্রস্তুতির ঘোষনা দিলেন। মক্কা ও অন্যান্য আরব গোত্রসমূহেও ঘোষনা দিলেন এ অভিযানে অংশগ্রহণের জন্য। ইসলামী ফৌজের সংগঠন ও ব্যয় নির্বাহের সাহায্যের আবেদন জানালেন। সাহাবীরা ব্যাপকভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। হযরত আবু বকর তাঁর সকল অর্থ রাসূলের হাতে তুলে দিলেন। হযরত উমর তাঁর মোট অর্থের অর্ধেক নিয়ে হাজির হলেন।
আর এ যুদ্ধের এক তৃতীয়াংশ সৈন্যের যাবতীয় ব্যয়ভার উসমান নিজ কাঁধে তুলে নিলেন। তিনি সাড়ে নয় শ’ উট ও পঞ্চাশটি ঘোড়া সরবরাহ করেন। ইবন ইসহাক বলেন, তাবুকের বাহিনীর পেছেনে হযরত উসমান এত বিপুল অর্থ ব্যয় করেন যে, তাঁর সবপরিমাণ আর কেউ ব্যয় করতে পারেনি। কোন কোন বর্ণনায় এসেছে, তাবুকের প্রস্তুতির জন্য উসমান (রাঃ) কোচরে করে এক হাজার দীনার নিয়ে এসে রাসূলুল্লাহর (সাঃ) কোলে ঢেলে দেন।
ইসলামের জন্য হযরত উসমানের অবদান মুসলিম জাতি কোনদিন ভুলতে পারবে না। ইসলামের সেই সংকটকালে আল্লাহর রাস্তায় তিনি যেভাবে খরচ করেছেন, অন্য কোন ধনাঢ্য মুসলমানের মধ্যে তার কোন নজির নাই। তিনি বিস্তর অর্থের বিনিময়ে ইয়াহুদী মালিকানাধীন ‘বীরে-রুমা’ কূপটি খরিদ করে মদীনার মুসলমানদের ওয়াকফ করেন। বিনিময়ে রাসুল (সাঃ) তাঁকে জান্নাতের অঙ্গিকার করেন।
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! যিনি একদিন ‘বীরে-রুমা’ খরিদ করে মদীনাবাসির পানির কষ্ট দুর করেছিলেন, তাঁর বাড়িতেই সেই কূপের পানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ঘেরাও অবস্থায় একদিন তিনি জানালা দিয়ে মাথা বের করে মদীনাবাসিদের স্মরণ করে দিয়েছিলেন, রাসুলুল্লাহর (সাঃ) নির্দেশে আমিই ‘বীরে-রুমা’ খরিদ করে সর্ব সাধারনের জন্য ওয়াকফ করেছি।
আজ সেই কূপের পানি থেকেই তোমরা আমাকে বঞ্ছিত করছো। আমি আজ পানির অভাবে ময়লা পানি দিয়ে ইফতারী করছি।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, প্রত্যেক নবীরই বন্ধু থাকে, জান্নাতে আমার বন্ধু হবে উসমান। হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সময়ে মুসলমানরা আবু বকর, উমর ও উসমানকে সকলের থেকে অধিক মর্যাদাবান মনে করতেন।