বিশ্ববিখ্যাত লোকমান হাকিমের কথা-৩য় পর্ব

বিশ্ববিখ্যাত লোকমান হাকিমের কথা-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

যা তিনি অর্জন করায় পৃথিবীর বুকে কিয়ামত পর্যন্ত প্রশংসা ভাজন হয়ে থাকবেন।

একদা লোকমান হাকিমের ছেলে পিতার নিকট এসে বলল, পিতা আমি বানিজ্যর উদ্দেশ্যে সফরে যেতে চাই।  তিনি তাকে তখন উপদেশ হিসাবে বললেন, হে বৎস তুমি কখনও আল্লাহ তায়ালার সাথে কাউকে শরীক করবে না। শরিক করা একটি জুলুমের কাজ। নিয়মিত নামাজ আদায় কর। বে-নামাজীর প্রতি আল্লাহ তায়ালা নালত করেছেন, মানুষের ভাল কাজের আদেশ দান কর এবং মন্দ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখ। অল্পে সন্তুষ্ট থাক। বিপাদে ধৈর্য ধারন কর। এগুলা মহৎ কাজের অন্তভুক্ত।

কখনও মানুষের নিকট মুখাপেক্ষী হও না। পথ চলার সময় মাটির উপর স্বদর্পে চল না। আল্লাহ তায়ালা দাম্ভিকদের পছন্দ করেন না। নিজের মুখের আওয়াজ  বিনয়ী কর। কর্কশ আওয়াজ হল গাধার আওয়াজের সমতুল্য। ছেলে লোকমান হাকিমের নছিয়ত পুঙ্খাপুঙ্খা রুপে পালন করা অঙ্গীকার করল। 

ছেলে যখন ছফরে যাত্রা করে তখন লোকমান হাকিম কিছু দিক নির্দেশনা দিয়ে বললেন, বৎস! তুমি পূর্ব দিকে কিছু পথে অগ্রসর হওয়ার পরে এক ময়দানের সম্মুখীন হবে। সে ময়দানের এক পাশে পানির একটি কূপ আছে কুপের পানি তুমি পান করবে না। পূর্বের পাশে একটা গাছ আছে, তুমি সে গাছের ছায়ায় বসবে না। আর একটু সম্মুখে অগ্রসর হলে দেখবে এক বৃদ্ধা একটি গাছের ছায়ায় বসে আছে। তুমি বৃদ্ধার কাছে তোমার পরিচয় দিবে। বৃদ্ধা তোমাকে আদর করবে। তখন সে যা বলবে তুমি সে গুলো পালন করবে। এর মধ্যে তোমার মঙ্গল নিহিত আছে। বৃদ্ধা যদি তোমার সঙ্গী হতে ইচ্ছে করে তাকে সঙ্গে নিয়ে নিও।

এর পরে তুমি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একটি সুন্দর গাঁয়ে গিয়ে উপস্থিত হবে। সেখানের মানুষরা তোমার পরিচয় পেয়ে অনেক আদর করবে, এবং সেখানে তোমাকে থাকার জন্য অনুরোধ করবে। সেখানে একজন সুন্দরী ও ধনবতি রমনী আছে। তাঁর সাথে তোমার বিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করবে। তুমি সে বিবাহে রাজি হবে না যতক্ষণ তোমার বৃদ্ধা চাচা তোমাকে আদেশ না দেয়। ওখান থেকে আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে তুমি স্থানীয় লোকের নিকট জিজ্ঞাসা করে উছাম নামের এক ধনী ব্যক্তির বাড়িত গিয়ে তুমি পৌঁছবে। তার নিকট আমার বেশ কিছু টাকা পয়সা আছে। সে টাকা তাঁর নিকট থেকে চেয়ে আনবে। তবে সেখানে রাত্রি যাপন করবে না। এর পরে সম্মুখে দেখবে সমুদ্র। অতএব আর সামনের দিকে অগ্রসর না হয়ে দেশের দিকে রওয়ানা করবে। শোন বৎস! আমার এ সমস্ত উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। 

বিশ্ববিখ্যাত লোকমান হাকিমের কথা-৪র্থ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

আরো পড়তে পারেন...

মর্শিয়া বানুর আরেক সকাল — নাহার মনিকা

এমন সকালে, এমন সকাল বেলায় মর্শিয়া বানুর মনে হয়- জীবনে বিলাসিতা না থাকা ঠিক না।…

একটা কুকুর অথবা একজন কবির গল্প—- মজাফ্‌ফর হোসেন

অবসরপ্রাপ্ত ইংরেজির অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম প্রতিদিন সন্ধ্যার আগ দিয়ে হাঁটতে বের হন। শেখেরটেক আটে…

রোমান সেনাপতি মাহানের তাঁবুতে খালিদ বিন ওয়ালিদ—আমরা সেই সে জাতি –– আবুল আসাদ

ইয়ারমুকের যুদ্ধ তখনও শুরু হয়নি। সম্রাট হেরাক্লিয়াসের প্রধান সেনাপতি মাহানের অধীনে কয়েক লক্ষ সৈন্য সম্পূর্ণ…

বিশ্ববিখ্যাত লোকমান হাকিমের কথা-৩য় পর্ব

বিশ্ববিখ্যাত লোকমান হাকিমের কথা-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

যা তিনি অর্জন করায় পৃথিবীর বুকে কিয়ামত পর্যন্ত প্রশংসা ভাজন হয়ে থাকবেন।

একদা লোকমান হাকিমের ছেলে পিতার নিকট এসে বলল, পিতা আমি বানিজ্যর উদ্দেশ্যে সফরে যেতে চাই।  তিনি তাকে তখন উপদেশ হিসাবে বললেন, হে বৎস তুমি কখনও আল্লাহ তায়ালার সাথে কাউকে শরীক করবে না। শরিক করা একটি জুলুমের কাজ। নিয়মিত নামাজ আদায় কর। বে-নামাজীর প্রতি আল্লাহ তায়ালা নালত করেছেন, মানুষের ভাল কাজের আদেশ দান কর এবং মন্দ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখ। অল্পে সন্তুষ্ট থাক। বিপাদে ধৈর্য ধারন কর। এগুলা মহৎ কাজের অন্তভুক্ত।

কখনও মানুষের নিকট মুখাপেক্ষী হও না। পথ চলার সময় মাটির উপর স্বদর্পে চল না। আল্লাহ তায়ালা দাম্ভিকদের পছন্দ করেন না। নিজের মুখের আওয়াজ  বিনয়ী কর। কর্কশ আওয়াজ হল গাধার আওয়াজের সমতুল্য। ছেলে লোকমান হাকিমের নছিয়ত পুঙ্খাপুঙ্খা রুপে পালন করা অঙ্গীকার করল। 

ছেলে যখন ছফরে যাত্রা করে তখন লোকমান হাকিম কিছু দিক নির্দেশনা দিয়ে বললেন, বৎস! তুমি পূর্ব দিকে কিছু পথে অগ্রসর হওয়ার পরে এক ময়দানের সম্মুখীন হবে। সে ময়দানের এক পাশে পানির একটি কূপ আছে কুপের পানি তুমি পান করবে না। পূর্বের পাশে একটা গাছ আছে, তুমি সে গাছের ছায়ায় বসবে না। আর একটু সম্মুখে অগ্রসর হলে দেখবে এক বৃদ্ধা একটি গাছের ছায়ায় বসে আছে। তুমি বৃদ্ধার কাছে তোমার পরিচয় দিবে। বৃদ্ধা তোমাকে আদর করবে। তখন সে যা বলবে তুমি সে গুলো পালন করবে। এর মধ্যে তোমার মঙ্গল নিহিত আছে। বৃদ্ধা যদি তোমার সঙ্গী হতে ইচ্ছে করে তাকে সঙ্গে নিয়ে নিও।

এর পরে তুমি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একটি সুন্দর গাঁয়ে গিয়ে উপস্থিত হবে। সেখানের মানুষরা তোমার পরিচয় পেয়ে অনেক আদর করবে, এবং সেখানে তোমাকে থাকার জন্য অনুরোধ করবে। সেখানে একজন সুন্দরী ও ধনবতি রমনী আছে। তাঁর সাথে তোমার বিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করবে। তুমি সে বিবাহে রাজি হবে না যতক্ষণ তোমার বৃদ্ধা চাচা তোমাকে আদেশ না দেয়। ওখান থেকে আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে তুমি স্থানীয় লোকের নিকট জিজ্ঞাসা করে উছাম নামের এক ধনী ব্যক্তির বাড়িত গিয়ে তুমি পৌঁছবে। তার নিকট আমার বেশ কিছু টাকা পয়সা আছে। সে টাকা তাঁর নিকট থেকে চেয়ে আনবে। তবে সেখানে রাত্রি যাপন করবে না। এর পরে সম্মুখে দেখবে সমুদ্র। অতএব আর সামনের দিকে অগ্রসর না হয়ে দেশের দিকে রওয়ানা করবে। শোন বৎস! আমার এ সমস্ত উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। 

বিশ্ববিখ্যাত লোকমান হাকিমের কথা-৪র্থ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

আরো পড়তে পারেন...

মুগীরা ইবন শু’বা (রা)

নাম আবু আবদিল্লাহ মুগীরা, পিতা শু’বা ইবন আবী আমের। আবু আবদিল্লাহ ছাড়াও আবু মুহাম্মাদ ও…

সাপের তওবা

একটি সাপের ঘটনা বর্ণনা করছি। আমার কাছে যারা তালীম গ্রহন করতে আসে প্রথমেই আমি কাউকে…

আবদুল্লাহ ইবন হুজাফাহ আস-সাহমী-(রা)

আবু হুজাফাহ আবদুল্লাহ নাম। পিতার নাম হুজাফাহ। কুরাইশ গোত্রের বনী সাহম শাখার সন্তান। ইসলামী দাওয়াতের…