বনু কোরাইযার ঘটনা – পর্ব ৩
বনু কোরাইযার ঘটনা – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তাহার কওমের লোকেরা তাহাকে ঘিরিয়া চলিতেছিল এবং বনু কোরাইযার ব্যাপারে তাহাকে বলিতেছিল যে, হে আবু আমর, ইহারা তোমারই বন্ধু ও মিত্র, বিপদ-আপদে কাজে আসে, তাহাদের সম্পর্কে তোমার ভালভাবেই জানা আছে।
হযরত সা’দ (রাঃ) সকলের কথা শুনিতে থাকিলেন এবং চুপ করিয়া রহিলেন, তাহাদের কোন কথার উত্তরেও দিলেন না, তাহাদের প্রতি ভ্রুক্ষেপও করিলেন না। তারপর যখন বনু কোরাইযার এলাকার নিকটবর্তী হইলেন তখন নিজের কওমকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, আমার জন্য এখন সেই সময় আসিয়াছে যে, আমি আল্লাহর ব্যাপারে কাহারো তিরস্কারের পরওয়া না করি।
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) বর্ণনা করিয়াছেন যে, যখন হযরত সা’দ (রাঃ) দৃষ্টিগোচর হইলেন তখন রাসূল (সাঃ) বলিলেন, তোমরা দাঁড়াইয়া তোমাদের সাইয়েদ সর্দারকে সতর্কতার সহিত সওয়ারী হইতে নামাও। হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, আমাদের সাইয়েদ তো আল্লাহ তায়ালা।
রাসূল (সাঃ) বলিলেন, তাহাকে নামাইয়া লও। সকলে তাহাকে (সওয়ারী হইতে) নামাইলেন। রাসূল (সাঃ) বলিলেন, ইহাদের বনু কোরাইযার ব্যাপারে ফয়সালা কর। হযরত সা’দ (রাঃ) বলিলেন, আমি এই ফয়সালা করিতেছি যে, যেহেতু তাহারা বিশ্বাসঘতকতা করিয়াছে সেহেতু তাহাদের মধ্যে যুদ্ধ করিতে সক্ষম লোকদেরকে হত্যা করা হউক, তাহাদের সন্তানদেরকে বন্ধী করা হউক এবং তাহাদের যাবতীয় মালামাল মুসলমানদের মধ্যে বন্টন করিয়া দেওয়া হউক।
রাসূল (সাঃ) বলিলেন, তুমি তাহাদের ব্যাপারে আল্লাহ ও তাঁহার রাসূল (সাঃ) এর ফয়সালা অনুযায়ী ফয়সালা করিয়াছে। তারপর হযরত সা’দ (রাঃ) দোয়া করিলেন, আয় আল্লাহ, আপনি যদি আপনার নবীর সহিত কোরাইশের কোন যুদ্ধ বাকি রাখিয়া থাকেন তবে আমাকে উহাতে অংশগ্রহণের জন্য বাকি রাখুন; আর যদি আপনার নবীর সহিত কোরাইশের যুদ্ধ শেষ করিয়া দিয়া থাকেন তবে আমাকে মওত দান করিয়া উঠাইয়া লইয়া যান
এই দোয়া করিতেই তাহার ক্ষতস্থান হইতে পুনরায় রক্তক্ষরণ আরম্ভ হইল। অথচ তাহার সেই ক্ষতস্থান শুকাইয়া কানের রিংএর ন্যায় ছোট দেখাইতেছিল। রাসূল (সাঃ) তাহার জন্য যে তাঁবু টানাইয়া দিয়াছিলেন, তিনি সেই তাঁবুতে চলিয়া আসিলেন।
সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা