পৃথিবীর সকল রহস্য উন্মোচিত
হযরত শায়েখ আবুল আব্বাস হাররার (রহঃ) বলেন, একবার আমি একদল মুরীদসহ হযরত আবুল আহমদ আন্দুলুসির সাথে সাক্ষাত করতে গেলাম তখন সেখানে হযরতের প্রচুর মুরীদ ও বিভিন্ন গোত্রের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। একজন গোত্রপ্রধানের অধিনে সেখানে প্রচুর লোক উপস্থিত ছিল। আমাকে দেখামাত্র হযরত শায়েখ বললেন, যখন কোন শিশু সাদা শ্লেট নিয়ে শিক্ষকের নিকট যায় তখন শিক্ষক তাতে কিছু লিখে দেন। আর যদি পূর্ব হতেই তা লেখায় পরিপূর্ণ থাকে, তবে শিক্ষক কি লিখবেন? সে ক্ষেত্রে হয়ত শিক্ষক বলবেন, তুমি বাড়িতে ফিরে যাও। অতঃপর তিনি আমার দিকে পূনর্বার তাকিয়ে বললেন, যে ব্যক্তি বিভিন্ন ঘাটের পানি পান করে, তার চিন্তা ও চেতনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি বরাবর এক স্থানের পানি পান করে তার মন মানসিকতায় কখনো দ্বৈত স্বভাব গড়ে উঠে না।
হজরত আবূ আব্বাস (রহঃ) বলেন, আমি শায়েখ আহমদের মুরীদের একজনের ঘরেই চার শ’ যুকক দেখছি যাদের সকলের বয়স ছিল অনুর্ধ পনের। তাদের সবাই ছিল আহলে কাশফ। হযরত শায়েখ একদিন স্বীয় খাদেম দ্বারা আমাকে ডাকলেন। আমি সেখানেই উপস্থিত হয়ে দেখলাম, হযরতের সামনে অনেক লোক বসে আছেন। আর তিনি তাদের উদ্দেশ্যে নসীহত করছিলেন। আমাকে দেখামাত্র তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন এবং সাথে সাথে আমিও আলমে মালাকুল বা ফেরেশতা জগতের যাবতীয় দৃশ্যাবলী দেখতে শুরু করলাম।
হযরত শায়েখকে দেখলাম, একটি কুঠার হাতে আমার শিয়রে দাঁড়িয়ে আমার দেহের সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে মাটিতে নিক্ষেপ করছেন। এভাবে আমাকে কুচি কুচি করে নিঃশেষ করার পর পূনরায়ঐ ক্ষুদ্র অংশ সমূহকে সংযোজন করে আমাকে পূর্নাঙ্গ মানব রুপে দান করার পর আমাকে বললেন, এখন তুমি যাবতীয় প্রার্থিব বস্তুর প্রভাব মুক্ত হয়েছে।
সুতরাং এবার তুমি নিজ শহরে চলে যাও। অতঃপর যখন আমি হযরতের দরবার হতে বের হলাম তখন আমি অনুভব করলাম, গোটা আসমান ও জমিন এবং উহার মধ্যস্থত যাবতীয় বস্তুর রহস্য আমার চোখের সামনে উন্মোচিত হয়ে উঠেছে।