নমরুদের গজবী মৃত্যু-পর্ব ৪

নমরুদের গজবী মৃত্যু-পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

হযরত ইব্রাহীম (আঃ) নমরুদের কথায় অগ্নিশর্মা হয়ে উঠলেন কঠোর ভাষায় বললেন, হে আল্লাহ্‌র গজবি বান্ধা! তুই আমাকে ধন-সম্পদ ও রাজ্যের প্রলোভন দেখাচ্ছিস। তুই, জানিস না যে, আমি আল্লাহ্‌র নবী। নবীদের দোয়া কখনই বিফল হয় না। এতএব তুই সাবধান হয়ে যা । তিন দিনের মধ্যে আল্লাহ্‌র গজব এসে তোর সমস্ত অহংকার চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দেবে। এই বলে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) সেখান থেকে দ্রুত বিদায় হলেন।

হযরত ইব্রাহীম (আঃ) নিজ বিশ্রামাগারে গিয়ে অজু করে দু’রাকাত নামাজ আদায় করলেন এবং নমরুদের ধ্বংসের জন্য দোয়া করলেন। নবীর মোনাজাত শেষ না হতেই সেখানে হযরত জিব্রাইল (আঃ) অবর্তীণ হয়ে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে জানালেন, আল্লাহ আপনার দোয়া কবুল করেছেন। তবে কি ধারণের গজব আপনি কামনা করেন তা আমাকে বলে দিন । হযরত ইব্রাহীম (আঃ) বললেন আল্লাহ্‌ তা’য়ালার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সৃষ্টি মশক দিয়ে নমরুদের মহাপরাক্রমশালী সৈন্যদেরকে খতম করার আজ্ঞা প্রার্থনা করছি  হযরত জিব্রাইল (আঃ) এ কথার উত্তরে বললেন, আল্লাহ্‌ তা’য়ালা এ বিষয়ে আপনার মতামতের গুরুত্ব দিয়ে কাজ সমাধা করার জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আমি আগামী পরশু দিন মশককুলকে দাওয়াত দিব। তবে ওখানে সংখ্যায় কত মশার প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন। নবী বললেন, সে বিষয় আমার কোন জ্ঞান নেই। তবে এক একটি মশা একজন ব্যাক্তির জন্য অপরিহার্য বলে আমি মনে করি ।

হযরত জিব্রাইল (আঃ) বললেন, জনসংখ্যার ভিত্তিতে যদি প্রেরণ করতে হয় তবে ষাট লক্ষ মশক সেখানে প্রেরণ করতে হবে। যা হোক সে বিষয় আমি নমরুদের সৈন্য সংখ্যা অনুসারে বরাদ্ধ করে দিব। এ বিষয়ে আপনার ভাবনার প্রয়োজন নেই। আপনি গিয়ে বিশ্রাম গ্রহণ করুন। এবং নমরুদকে পরশু দিনের কথা বলে দিন।

হযরত ইব্রাহীম (আঃ) জিব্রাইল (আঃ)- এর কথায় আশ্বস্ত হলেন এবং নমরুদকে খবর পাঠিয়ে দিলেন যেন সে তাঁর ফৌজ নিয়ে পরশু দিন ময়দানে উপস্থিত থাকে। নমরুদ নবীর খরর পেয়ে তাঁর উজির হামানকে ময়দানে পাঠিয়ে দিল এবং রণসজ্জার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে যা বাকি ছিল তা তড়িৎ সমাধা করার জন্য জোর তাকিদ দিল। মহারাজার জরুরি নির্দেশ পেয়ে প্রধান সেনাপতি যুদ্ধের ধরন জানার জন্য নমরুদের দরবারে উপস্তিত হল এবং নমরুদের নিকট জিজ্ঞাসা করল ইব্রাহীম (আঃ)-এর পক্ষে কারা যুদ্ধ করবে এবং কিভাবে সে যুদ্ধ চলবে ? নমরুদ বলল, বিষয়টি আমিও বিস্তারিত ভাবে জানি না, তবে ইব্রাহীমের কথা অনুসারে যতটুকু ধারণা করছি তাতে মনে হয় কোন মানুষ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তোমাদের মোকাবেলা হবে না। মশা মাছি জাতীয় কোন প্রাণীর প্রাদুর্ভাব হতে পারে। এ বিষয় তোমারা আগামী পরশু দিন ভোর থেকে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে ময়দান কাঁপিয়ে তুলবে। যাতে করে ক্ষুদ্র প্রাণীরা ভয়ে আর কাছে আসতে না পারে। পরবর্তী পর্যায়ে যদি ওগুলো একান্ত কাছে এসে যায় তাহলে দুই হাতে চড় মেরে ওগুলোকে খতম করে দিবে। কোন ভারি অস্ত্রের আর প্রয়োজন হবে না। মশার কি শক্তি আছে, তা তোমাদেরকে বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই আমাদের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কোন কারণ নেই। আমার মনে হয় আধ ঘন্টার মধ্যে যুদ্ধের কাজ শেষ করে তোমরা সকলে নিরাপদে দরবারে এসে পৌঁছে যাবে। সেনাবাহিনী প্রধান নমরুদের কথা শুনে নিশ্চিন্ত মনে হাসি দিয়ে বিদায় হল।

সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

নমরুদের গজবী মৃত্যু-পর্ব ৫ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।