ধর্মান্তরের ঝগড়া
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তেকালের পরে কিছু কিছু এলাকায় ধর্মান্তরের ঝড় বইতে আরম্ভ করল। যারা ঈমানে খুবই দুর্বল ছিল তাঁদের অন্তরে ঈমানের জ্যোতি ধীরে ধীরে নিভে যেতে আরম্ভ করল। ধর্মান্তরের ফিতনার কারণগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো। পূর্বের লোকেরা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত ছিল। আর সে ইসলাম ঐ ধরনের ঝগড়া বন্ধ করে সকলকে এক সম্প্রদায়ে মিলিত করে দিয়েছিল। তাঁদের অনেক বছর একত্রিত থাকার অভ্যাস ছিল না। এ কারণে তাঁরা এ একত্রিত জাতিতে তাঁদের ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্য বাধা মনে করে তা ভেঙে বের হয়ে যেতে চিন্তা করল।
ইসলামি সাম্রাজ্যের অর্থ বিভাগের জন্য পবিত্র কুরআন যাকাত কে প্রকৃত ভিত্তি হিসাবে নির্ধারণ করেছে। ইসলামের বিধান মতে যাকাত বড় লোকদের কাছ হতে গ্রহন করে অভাবীদের মাঝে বিতরণ করে। এ মূল উদ্দেশ্য হল মানুষের অর্থনৈতিক সমতা ঠিক করে রাখা। কিন্তু আরবের লোকরা এটিকে একটি বোঝা মনে করে তা হতে মুক্তি হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করলেন। এ ঝগড়ার সমাধার জন্য হযরত আবু বকর (রাঃ) এর হস্তেক্ষেপ দরকার ছিল। তিনি সাহাবাদের সাথে বুদ্ধি করলেন। তখন কিছু কিছু সাহাবী বলেন, আমাদের ইসলামের অবস্থান খুবই অসহনীয়। এ জন্য আমি বলছি যে, যারা যাকাত দিতে চাচ্ছে না তাঁদের সাথে আমাদের খুবই ভাল আচারণ করতে হবে। অথচ হযরত আবু বকর (রাঃ) বলেন, কোন একজন ব্যক্তি যদি একটি ছাগলের বাচ্চা, যা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে দেয়া হত, তা দিতে রাজি না হলে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, আমি তাঁর বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করব। হযরত উসামা (রাঃ) কে আব্বাস এবং যাবয়ান গোত্রগুলোর সাথে যুদ্ধ করার জন্য প্রেরণ করেছেন। সে গোত্রগুলো যুদ্ধে হেরে গেলে মুসলিম মুজাহিদদের ঘোড়ার জন্য চারণভুমিগুলো ওয়াকফ করে দেয়া হবে। মুজাহিদরা এ সব দল প্রেরণের পূর্বে মুরতাদদের নামে একটি সাধারণ বার্তা প্রেরণ করেন হযরত আবু বকর (রাঃ)।
তিনি বলেন যে, তাঁরা যেন ধর্মান্তরের এ ফিতনা থেকে বিরত থাকে এবং মুসলমানদের সাথে ইসলামি ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে মিলিত হয়। তখন তিনি তাঁদের সাথে ওয়াদা করেন এ বলে যে, তাঁরা যদি আমার এ আহ্বান রক্ষা করে তা হলে তাঁদের প্রতিশোধ নেয়া হবে না। তাঁরপর হযরত বাবু বকর (রাঃ) মুজাহিদ বাহিনীর সেনাপ্রধানের নামে নিম্নে উল্লেখিত আদেশনামা জারি করেন।
তিনি বলেন, আমি ইসলামের মুজাহিদদের নির্দেশ দিচ্ছি যে, সব সময় তাঁরা যেন আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করেন। তাঁরা যেন আল্লাহর আদেশ-নিষেধ, নিয়ম কানুন পালন করতে যেন ভুল না করে। আবু বকর (রাঃ) এ কথা বললেন যে,তাঁদের সাথে যুদ্ধে যাওয়ার পূর্বে তাঁদের নিকট ইসলামের পবিত্র বাণী পৌঁছিয়ে তাঁদের উপর পূর্ণ প্রমাণ উত্থাপন করতে হবে।
তাঁদেরকে হটকারিতা ও ঝগড়া-বিবাদ থেকে থামিয়ে রাখবেন বাহিনীর প্রধান। আর দুশমনদের বাসস্থানে আকস্মিক ভাবে ঢুকবে না।