দাওয়াতের দ্বিতীয় সভা

প্রথম সভা তো আবদুল ওযযা আবূ লাহাবের জন্য পন্ড হয়ে যায়। এবার রাসূলুল্লাহ (সাঃ) দ্বিতীয় সুযোগের অপেক্ষায় রইলেন। তিনি দ্বিতীয় দফা নিকটাত্নীয়দের দাওয়াত দেন। এ পালা তিনি আগত মেহমানদের সামনে বলতে শুরু করলেন- কোন জাতির প্রতিনিধি স্বীয় লোকদের সাথে কখনও মিথ্যা বলেন না।

আল্লাহর কসম! ধরে নাও যদি মিথ্যা বলতাম তবে সকলের সাথে মিথ্যা বললেও তোমাদের সাথে মিথ্যা বলতাম না। সবাইকে ধোকা দিলেও তোমাদেরকে ধোকা দিতাম না। সেই সত্তার কসম। যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, আল্লাহ আমাকে তোমাদের প্রতি রাসূল করে প্রেরণ করেছেন। সমগ্র আরবে এমন কোন লোক সম্পর্কে আমি জানি না, যিনি এ অপেক্ষা উত্তম ধর্মমত নিয়ে তার জাতির কাছে এসেছে। আমি তো তোমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের দিকে আহ্বান করি। এখন বল, তোমাদের মধ্য হতে কে এ বিষয়ে আমার সাহায্যকারী এবং স্থলাভিষিক্ত হবে।


উল্লিখিত রূপ আহ্বান জানিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নীরব হয়ে যান এবং উপস্থিত স্বীয় স্বজনের চেহারার দিকে দৃষ্টি দিয়ে দেখতে থাকেন। যাতে অনুধাবন করতে পারেন-কার মন আল্লাহর দ্বীনের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। কার অন্তর ইসলাম গ্রহণের জন্য প্রশস্ত হয়েছে এবং আগত মেহমানদের মধ্য হতে কে তাঁর প্রতিনিধি হবে।


কিন্তু যেসব আত্নীয় স্বজনকে তিনি নিমন্ত্রণ করেছেন, তাদের কেউই তাঁর আহ্বানে দেয়নি। বরং অভ্যাগতদের কেউ কেউ তাঁর প্রতি অগ্নি দৃষ্টিতে দেখতে থাকল। যারা মুখ ফিরিয়ে নিল, তাদের মধ্য হতে এক বালক-যে এখনও প্রাপ্তবয়ষ্ক হয় নি- উঠে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বলল- ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি আপনার সাহায্যকারী হব, আপনার হাত শক্তিশালী করব। অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক বালকের উক্তি শুনে উপস্থিতদের অনেকে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। কেউ কেউ আবূ তালিবের প্রতি বিদ্রুপের দৃষ্টিতে তাকাতে লাগল। কেননা, আলোচ্য বালক আবূ তালিবের পুত্র আলী।


দ্বিতীয় মজলিসও এভাবেই ভেঙ্গে যায়। উপস্থিত মেহমানদের কেউই হুযুর (সাঃ)-এর আহ্বানে সাড়া দেয়নি। কিন্তু এতদসত্ত্বেও তিনি কোন প্রকার হতাশ বা নিরাশ হননি। তিনি প্রকাশ্যে মানুষকে ইসলামের দিকে আহ্বান জানাতে থাকেন।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।