তালুত ও জালুতের কাহিনী-২য় পর্ব

তালুত ও জালুতের কাহিনী-১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

 হযরত শামুয়েল (আঃ) বললেন, তাবুত নামক আশ্চার্য সিন্দুকটি আজ শত্রু কবলিত অবস্থায় আছে। তোমরা কেউ তা উদ্ধার করতে সক্ষম নও। তালুত যদি আল্লাহ তায়ালার মননীত বাদশা হয়ে থাকে তাহলে সে আজ দিনের মধ্যে সেটি উদ্ধা করে আনতে সক্ষম হবে। আর যদি আল্লাহ তায়ালার মননীত না হয় তবে সে সিন্দুক টি উদ্ধার করতে পারবে না। মেনে রেখ তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আজ দিনের ভিতরে সিন্দুক টি উদ্ধার করতে পার তাহলে আমি তাকে বাদশা বলে ঘোসনা দিব। বনি ইসরাইলরা একথা শুনে নির্বাক হয়ে গেল।

  কারণ তাবুক নামের সিন্দুক টি এমেলেকেদের রাজা জালুতের গুদামে রক্ষিত বলে সকলের জানা  ছিল।  সেটা উদ্ধার করা স্বাভিক কথা নয়। তাই সকলে থির হয়ে বসে রইল। কার মুখ থেকে কোন কথা বের হল না।   

হযরত শামুয়েল (আঃ) তালুত কে ডেকে বললেন, তুমি সোজা পূর্ব দিকে মরভুমিতে চলে যাও। সেখানে গাড়ি বহনকারীর সাথে সাক্ষাৎ পাবে। তুমি গাড়িতে উঠে তাকে গাড়ি এদিকে চালিয়ে নিয়ে আসতে বলবে।  তালুত নবীর কথা অনুসারে  তাৎক্ষনিক পূর্ব দিকের মরুভূমির মাঝে গিয়ে দেখেন, দু,জন মানুষ একটি গাড়ি টেনে নিয়ে আসছে। গাড়ির  উপর একটি বাক্স, তখন তিনি গাড়ির উপর গিয়ে বসলেন এবং

চালকদেরকে গাড়ি এদিকে চালনোর আদেশ দিলেন। চালকরা তখনই  গাড়ি ঘুরিয়ে এদিকে চালাতে আরম্ভ করল। অল্প সময়ের মধ্যে তালুত সিন্দুক নিয়ে নবীর কাছে পৌঁছে গেল। তখন নবী বনি ইসরাইলদেরকে ডেকে তা দেখাল এবং তালুতের বাদশাহীর স্বীকৃতি দিতে বললেন, বনি ইসরাইলরা তখন বাধ্য হয়ে তালুতের নেতৃত্ব স্বীকার করে নিল। তালুত তখন বনি ইসরাইলকে জালুতের বিরুধে যুদ্ধ যাত্রার জন্য তড়িৎ প্রস্তুতি নিতে বললেন।

হযরত শামুয়েল (আঃ) একটি লোহার বর্ম তালুত কে দান করে বললেন, এ বর্ম যার শরীরে মানাবে এবং মাপে খাঁটবে জালুত তার হাতে নিহত হবে।  অতপর তালুত সে বর্মটি পড়লেন এবং দেখা তার শরীরে বর্মটি উপযুক্ত ভাবে মানিয়েছে।  তখন নবী তাকে বলল, এখন যুদ্ধ যাত্রা আরম্ব কর। 

তালুত  হযরত শামুয়েল (আঃ) এর নিকট থেকে বিদায় নিয়ে যুদ্ধ যাত্রা আরম্ভ করলেন। তার সাথে প্রায় আশি হাজার বনি ইসরাইল সৈন্য  এগিয়ে চলল, ওদিকে জালুতের গুপ্তচরেরা তালুতের আক্রমণের কথা জালুত কে জানিয়ে দিল। তারা এ খবর জানতে পেরে তড়িৎ রণসজ্জায় সজ্জিত হল। তালুত সৈন্যদেরকে নিয়ে পথ চলতে আরম্ভ করলেন।

 পথিমধ্য এক সময় সমস্ত সৈন্যদের থামিয়ে বললেন, আল্লাহ তায়ালা কিছুক্ষণের মধ্য তোমাদের একটা নদীর সম্মুখীন করাবেন। তখন তোমরা নদীর পানি কেউ পান করবে না। যদি একান্ত পান করতে ইচ্ছা কর তাহলে মাত্র এক অঞ্জলি পান কর।  তাহলে আমার তাবেদার হিসাবে বলবৎ থাকবে। আবার যদি তোমারা অধিক পানি পান কর আর আমার তাবেদারদের অন্তভুক্ত থাকবে না। নাফারমানদের অন্তভুক্ত হবে। এ কথা বলে আবার পুনরায় পথ চলতে আরম্ভ করলেন। কিছু দূর অগ্রসর হওয়ার পর তারা এক জঙ্গল এর ভিতরে প্রবেশ করে এক নদীর সম্মুখীন হন। নদীর আপনি অত্যন্ত স্বচ্ছ ও পরিষ্কার।

 সেখানে সৈন্যদের নিয়ে তালুত কিছু সময় বিশ্রাম নিলেন। এ সময় বনি ইসরাইল এর সৈন্যরা অধিকাংশ পেট ভরে পানি পান করল। কিছু সৈন্য তাদের সেনাপতির আদেশ অনুসারে এক অঞ্জলি পনি পান করল।  আবার কতকে আদৌ পানি পান করল না। তবে তাদের সংখ্যা ছিল নিত্যান্ত কম। যারা অধিক পানি পান করল তাদের অবস্থা অনেক খারাপ হল, তাদের জিহ্বা বের হয়ে গেল। পেট ফুলে গেল এবং অসহ্য যাতনায় চিৎকার করতে করতে অল্প সময়ের মধ্যে তারা মারা গেল। মোট আশি হাজার সৈন্যের পায় সকলেই অধিক পানি পান করে মৃত্যুর মুখে পতিত হল।

তালুত ও জালুতের কাহিনী-৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।