জোলেখার প্রেম-পর্ব ১
জোলেখা দীর্ঘ সময় অপলক ইউসুফ (আঃ) এর প্রতি তাকিয়ে থাকলেন। পরে তাঁকে উৎকৃষ্ট বিছানা করে দিলেন এবং ভাল খাবার ব্যবস্থা করলেন। তাঁর আরামের জন্য অন্যান্য যা কিছুর প্রয়োজন ছিল অতিসত্ত্বর তার ব্যবস্থা করলেন। জোলেখা নিজে সর্বদা দাস দাসী দ্বারা পরিবৃত্ত থাকতেন। সকল কাজকর্ম তার হুকুমে পরিচালিত হত। রাজা বাদশারা যেভাবে জীবন যাপন করেন, জোলেখাও সেই একই মানে জীবন যাপন করতেন। কোন কিছুর সমস্যা বা অপূর্ণতা তার মহলে ছিল না। তিনি অধিকাংশ সময় ঘুমিয়ে কাটাতেন আর দেবতার পূজা অর্চনা করতেন এবং বাকি সময় দাসীদের নিয়ে খেলাধুলা ও ভ্রমণ করতেন।
কিন্তু ইউসুফ (আঃ) তার মহলে আগমনের পরে তিনি আর ভ্রমণে বের হন নাই এবং দিবাভাগে ঘুমিয়ে কাটান নাই। অধিকাংশ সময় ইউসুফ (আঃ) এর নিকটে থাকতেন এবং তাঁর যা কিছু প্রয়োজন নিজ হাতে করতেন। এক্ষেত্রে কোন দাস-দসী ব্যবহার করতেন না। মহলের ভিতরে তাঁকে নানা ধরনের খেলা ধুলার ব্যবস্থা করে দিলেন। আনন্দ ও চিত্ত বিনোদনের বিভিন্ন উপকরণাদী সংগ্রহ করে দিলেন।
এমনকি একটি চারণ ভূমি তৈরি করে সেখানে কিছু মেষ সংগ্রহ করে দিলেন যাতে ইউসুফ (আঃ) মেষের সাথে ছুটাছুটি করতে পারেন। এক কথায় ইউসুফ (আঃ) এর মন যেন কোনক্রমে উদাশীন না থাকে এবং সর্বদা যেন পরিতৃপ্ত থাকে তার জন্য সকল প্রয়োজনীয় উপাদানাদের সমাবেশ সেখানে করা হল।
ইউসুফ (আঃ) যদিও তখন নবুওয়াতী লাভ করেন নাই তবুও তাঁর মধ্যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, ধর্মানুরাগ কঠিনভাবে বিরাজমান ছিল। তিনি জোলেখার প্রতি সরাসরি তাকাতেন না। তার সাথে গল্প গুজব করে সময় কাটাতেন না। অতি প্রয়োজনীয় কথাবার্তা ছাড়া কোন কথা বলতেন না। জোলেখার চেয়ে বরং দাস-দাসীদের সঙ্গে অধিক মিলতেন এবং অধিক কথাবার্তা বলতেন।
এভাবে একাধারে সাত বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল। এর মধ্যে জোলেখা হযরত ইউসুফ (আঃ) কে প্রম নিবেদন করতে কত শত রকম ফন্দি-ফিকির করেছেন তার কোন হিসেব নেই। তিনি হযরত ইউসুফ (আঃ) এর মন আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে যে সব কার্যকালাপ করেছেন তার বর্ণনা দিতে গিয়ে ঐতিহাসিকগণ বিরাট গ্রন্থ প্রণয়ন করেছেন।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী