ছালেহ (আঃ)-এর দাওয়াতের ফলশ্রুতি

ইতিপূর্বেকার ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিগুলির ন্যায় কওমে ছামূদও তাদের নবী হযরত ছালেহ (আঃ)-কে অমান্য করে। তারা বিগত ‘আদ জাতির ন্যায় পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করতে থাকে। নবী তাদেরকে যতই দাওয়াত দিতে থাকেন, তাদের অবাধ্যতা ততই সীমা লংঘন করতে থাকে। ‘তারা বলল,

قَالُوْا يَا صَالِحُ قَدْ كُنْتَ فِيْنَا مَرْجُوًّا قَبْلَ هَذَا أَتَنْهَانَا أَن نَّعْبُدَ مَا يَعْبُدُ آبَاؤُنَا وَإِنَّنَا لَفِيْ شَكٍّ مِّمَّا تَدْعُوْنَا إِلَيْهِ مُرِيْبٍ- (هود ৬২)-

হে ছালেহ! ইতিপূর্বে আপনি আমাদের কাছে আকাংখিত ব্যক্তি ছিলেন। আপনি কি বাপ-দাদার আমল থেকে চলে আসা উপাস্যদের পূজা করা থেকে আমাদের নিষেধ করছেন? অথচ আমরা আপনার দাওয়াতের বিষয়ে যথেষ্ট সন্দিহান’ (হূদ ১১/৬২)। তারা কওমের দুর্বল ও দরিদ্র শ্রেণীর লোকদের জমা করে বলল,أَتَعْلَمُوْنَ أَنَّ صَالِحاً مُّرْسَلٌ مِّن رَّبِّهِ-  ‘তোমরা কি বিশ্বাস কর যে, ছালেহ তার প্রভুর পক্ষ হ’তে প্রেরিত ব্যক্তি’? তারা জবাব দিল, ِإِنَّابِمَا أُرْسِلَ بِهِ مُؤْمِنُوْنَ- ‘আমরা তো তাঁর আনীত বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী’। একথা শুনে দাম্ভিক নেতারা ক্ষিপ্ত হয়ে বলে উঠল, ‘তোমরা যে বিষয়ে ঈমান এনেছ, আমরা ঐসব কিছুকে অস্বীকার করি’ (আ‘রাফ ৭/৭৫)। তারা আরও বলল,

فَقَالُوا أَبَشَرًا مِّنَّا وَاحِدًا نَّتَّبِعُهُ إِنَّا إِذًا لَّفِيْ ضَلاَلٍ وَسُعُرٍ- أَؤُلْقِيَ الذِّكْرُ عَلَيْهِ مِن بَيْنِنَا بَلْ هُوَ كَذَّابٌ أَشِرٌ- (القمر ২৪-২৫)-

‘আমরা কি আমাদেরই একজনের অনুসরণ করব? তাহ’লে তো আমরা বিপথগামী ও বিকারগ্রস্ত বলে গণ্য হব’। ‘আমাদের মধ্যে কি কেবল তারই উপরে অহী নাযিল করা হয়েছে? আসলে সে একজন মহা মিথ্যাবাদী ও দাম্ভিক’ (ক্বামার ৫৪/২৪-২৫)। তারা ছালেহকে বলল, قَالُوا اطَّيَّرْنَا بِكَ وَبِمَن مَّعَكَ …-   ‘আমরা তোমাকে ও তোমার সাথে যারা আছে তাদেরকে অকল্যাণের প্রতীক মনে করি’… (নামল ২৭/৪৭)। এইভাবে সমাজের শক্তিশালী শ্রেণী তাদের নবীকে অমান্য করল এবং মূর্তিপূজা সহ নানাবিধ শিরক ও কুসংস্কারে লিপ্ত হ’ল এবং সমাজে অনর্থ সৃষ্টি করতে থাকল। আল্লাহর ভাষায়, فَاسْتَحَبُّوا الْعَمَى عَلَى الْهُدَى فَأَخَذَتْهُمْ صَاعِقَةُ الْعَذَابِ الْهُوْنِ بِمَا كَانُوْا يَكْسِبُوْنَ-  ‘তারা হেদায়াতের চাইতে অন্ধত্বকেই পসন্দ করে নিল। অতঃপর তাদের কৃতকর্মের ফলে অবমাননাকর শাস্তির গর্জন এসে তাদের পাকড়াও করল’ (ফুছছিলাত/হামীম সাজদাহ ৪১/১৭)

আরো পড়তে পারেন...

হযরত ছালেহ (আলাইহিস সালাম)

‘আদ জাতির ধ্বংসের প্রায় ৫০০ বছর পরে হযরত ছালেহ (আঃ) কওমে ছামূদ-এর প্রতি নবী হিসাবে…

কওমে ‘আদ-এর উপরে আপতিত গযব-এর বিবরণ

মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক বলেন, কওমে ‘আদ-এর অমার্জনীয় হঠকারিতার ফলে প্রাথমিক গযব হিসাবে উপর্যুপরি তিন বছর…

হূদ (আঃ)-এর দাওয়াতের ফলশ্রুতি

হযরত হূদ (আঃ) স্বীয় কওমে  ‘আদকে শিরক পরিত্যাগ করে সার্বিক জীবনে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার আহবান জানান।…