সিলেট , বাংলাদেশের এই পূণ্যভূমিতে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ১৫০ টিরও বেশী। এত এত ঘটনা রয়েছে এসব চা বাগানকে কেন্দ্র করে যে বলে শেষ করা যাবেনা । যারা ঐসব চা বাগানে বাস করেন, তারা তো এসব ঘটনা জানেনই ,যারা বিভিন্ন জেলা হতে চা বাগানে চাকুরীর সুবাদে যান , তারাও এসব ঘটনা শুনে থাকেন , অনেক অভিজ্ঞতাও হয় তাদের সাথে । বলা হয়ে থাকে যে, চা বাগানে চাকুরী করলে এসব ঘটনার সাথে এডজাষ্ট করে নিতে না পারলে হয় আপনি পাগল হয়ে যাবেন , আর নয়তো আপনাকে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চলে আসতে হবে । এক চা বাগানে প্রায়ই রাতের বেলা একটা মেয়েকে চা পাতা তুলতে দেখা যায় । মেয়েটা অল্প বয়সী , খুবই সুন্দরী এবং মায়াবী চেহারার । ঐ চা বাগানে যারা কাজ করে , তারা প্রায় সবাই মেয়েটাকে দেখে । কিন্তু মেয়েটার কাছে যাওয়ার সাহস কারোরই হয় না । চা বাগানে যারা পাহারা দেয় , তাদেরকে চৌকিদার বলে । এক নতুন চৌকিদারের দায়িত্ব পড়লো ঐ চা বাগানে এক রাতে পাহারা দেয়ার জন্য । গভীর রাতে টর্চের আলোয় চৌকিদার দেখলো , মেয়েটা চা পাতা তুলছে । চৌকিদার এগিয়ে গেলো মেয়েটার কাছে । ধমক দিয়ে বললো ,” এই ,এত রাতে এইখানে কি?”
মেয়েটার চোখমুখ শক্ত হয়ে গেল । হিসহিস কন্ঠে চৌকিদারকে বললো ,” এটা আমারচা বাগান । এখানে আমার যা খুশি , তাই করবো । কেউ আমাকে বাধা দিতে পারবেনা ।” মেয়েটার চেহারা বদলাতে লাগলো । কিশোরী মেয়ে থেকে সে একটা বিভত্স বৃদ্ধাতে পরিনত হলো । গালে বসন্তের দাগ । মুখ থেকে লালা পড়ছে । চৌকিদার এই রূপ দেখেই অজ্ঞান হয়ে পড়লো । কিছুদিন পর প্রচন্ড কষ্ট ভোগ করে চৌকিদার টা মারা যায় । এক ছেলে রাতের বেলা একা চা বাগানের ভিতর দিয়ে আসছিলো । হঠাত্ সে লক্ষ্য করে যে, একটা কালো কুকুর বাম পাশ থেকে তাকে পাশ কাটাতে চাইছে । ছেলেটা এই ব্যাপার টা জানতো যে , সে যদি এটাকে বাম পাশ থেকে যেতে দেয় , তাহলে তার ভয়াবহ বিপদ হতে পারে । সে এও বুঝতে পেরেছিলো যে মোটেও কোন কুকুর নয় । তাই সে কিছুতেই ওটাকে যেতে দিলোনা । বাড়ির কাছাকাছি আসার পর একটা ভয়ানক গোঙানির শব্দ পেয়া ছেলেটা পিছনে তাকিয়ে দেখলো , কুকুরটা দুই পায়ে ভর দিয়ে দাড়িয়েঐ গোঙানির শব্দ করছে । যেন ব্যর্থ আক্রোশে ফুঁসছিলো । ছেলেটার চোখের সামনে ঐটা হঠাত্ মিলিয়ে যায় এবং ছেলেটাও এই ব্যাপার দেখে অজ্ঞান হয়েপড়ে ।
এরপর টানা ১৫দিন ছেলেটা কালাজ্বরে ভুগেছিলো । ১০৪ ডিগ্রি জ্বর । কুকুরটা কে পাশ কাটাতে না দেয়ার অপরাধে ! চা বাগানের আশেপাশে অনেক ছোট ছোট ঝর্ণা আছে । স্থানীয় ভাষায় ওগুলোকেছরা বলে । অনেকেই নাকি রাতের বেলা দেখেছে যে, এক হিন্দু বউ, কপালে সিঁদুর, লাল পাড় দেয়া সাদা শাড়ী পড়ে ছরার একপাশ থেকে অন্যপাশে পার হয় এবং তারপর সাথে সাথে অদৃশ্য হয়েযায় ! চা বাগানে রাতের বেলা কারো হেটে বেড়ানোর শব্দ পাওয়া যায় । অনেকেই কোন নির্দিষ্ট আকৃতি নেই , এমন ধরনের ছায়া কে চা বাগানে ঘুরে বেড়াতে দেখেছে । অন্ধকারে তাদের দেখা যায় না । চাঁদের আলো থাকলে মাটিতে এসব ছায়া কে দেখা যায় । প্রায়ই গভীর রাতে চা বাগান থেকে চিত্কার ভেসে আসে,” সাআআআবধান !!” কাকে সাবধান করে দেয়া হয় ? কি জন্য? কেউ জানে না ।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।