গায়েবী সাহায্যে মূল্য পরিশোধ
হযরত আবূ আব্দুল্লাহ ক্বারাশী (রহঃ) বলেন, একবার আমি বদর এলাকা হতে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম। বদর এলাকার এক ফল বিক্রেতা হাজীদের নিকট এই শর্তে ফল বিক্রয় করছিল যে, হাজীরা মক্কায় গিয়ে তার মূল্য পরিশোধ করলেই চলবে। ঐ ফল বিক্রেতা আমাকেও কিছু ফল নেওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল। আমি তা নিতে অস্বীকার করলাম। সে বলল- এখনই আমাকে এর মূল্য পরিশোধ করতে হবে না। মক্কায় পৌঁছে দিলেই হবে। আর মক্কায় যাবার পূর্বে যদি তুমি মারা যাও তাহলে আমি এর দাবী ত্যাগ করবো।
অবশেষে তার পীড়াপীড়িতে আমাকে কিছু ফল কিনতে হল। কিন্তু ঘটনাক্রমে ফল বিক্রেতার আমার পূর্বেই মক্কায় যাবার প্রয়োজন পড়ল। তখন সে আমার নিকট ফলের দাম চাইল। আমি বললাম- আগেই তোমাকে বলেছি যে, আমার নিকট কোন পয়সা নেই তু্মিও বলেছ মক্কায় গিয়ে দিলেই চলবে। এখন কি করে পয়সা দাবী করছ? কিন্তু লোকটি আমার কোন কথাই শুনল না। পয়সা নেওয়ার জন্য নানাভাবে আমাকে বিরক্ত করতে শুরু করল। অবশেষে গালমন্দও করতে লাগল।
পরে আমি কোন উপায় না পেয়ে বদরের এক মসজিদে গিয়ে আল্লাহর নিকট এ বিষয়ে সাহায্য প্রার্থনা করে কান্নাকাটি শুরু করলাম। কিছুক্ষন পর আমি মসজিদ থেকে বের হয়ে এক বেদুঈন ব্যক্তির সাক্ষাত পেলাম। সে ছিল আরব প্রবাসী। এবং এহরাম বাধা অবস্থায়। লোকটি কোন কথা না বলে আমার কাছে এসে কিছু দিরহাম দিয়ে নীরবে চলে গেল। আমি দিরহামগুলো নিয়ে ফলবিক্রেতার নিকট গিয়ে তার ঋণ পরিশোধ করে দিলাম। কিন্তু লোকটি আমাকে পূর্বের চেয়ে অধিক গালমন্দ করতে লাগল এই বলে যে, তুমি মিথ্যুক। তোমার নিকট পয়সা থাকা সত্ত্বেও আমাকে শপথ করে বলছে যে, তোমার কাছে কোন পয়সা নেই ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি কোন প্রকার উত্তর না দিয়ে নীরব রইলাম।
শায়েখ আবু আব্দুল্লাহ কারাশী বলেন- যে ব্যেক্তি কোন কাজের শুরুতেই তার ফলাফল কামনা করতে থাকে সে ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, তুমি যে কাজই কর না কেন ওটার নিয়ম- পদ্ধতি ও আদব রক্ষা করে চলবে। আর কোন কাজেই অনর্থক বিতর্ক সৃষ্টি না করে আল্লাহ পাকের ইবাদতে মশগুল থাকবে। অল্প এবাদতেই যদি নিয়মিত ও গুরুত্বের সাথে করা হয়, তবে এর ফল পাওয়া যায়।