খলীফা পুত্রের ঈর্ষান্বিত জীবন-৪র্থ পর্ব

খলীফা পুত্রের ঈর্ষান্বিত জীবন-৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

খলীফা জানতে চাইলেন সে কি কাজ করত? আমি বললাম, সে রাজ মিস্ত্রীর কাজ করত। খলীফা জিজ্ঞেস করলেন, তুমিও কি তার দ্বারা কোন কাজ করিয়েছ? আমি বললাম হ্যাঁ, তার দ্বারা আমিও কাজ করিয়েছি। খলীফা অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে বললেন, তোমার কি একবারও এ কথা স্মরণ হয়নি যে, নবী করীম (সাঃ) এর সাথে তার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল (খলীফা হারুনুর রশিদ) নবীজী (সাঃ)-এর চাচা হযরত আব্বাসের বংশধর ছিলেন) খলীফা এ কথা বলার পর আমি লজ্জিত হয়ে বললাম, হে আমীরুল মুমিনীন! তখন তো এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা ছিল না।

ইন্তিকালের পর আমি তার পরিচয় পেয়েছি। খলীফা পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি নিজ হাতে তার গোসল দিয়েছ? আমি বললাম, হ্যাঁ আমি নিজ হাতেই তার গোসল দিয়েছি। এ কথা শুনার সাথে সাথে খলীফা আমাকে তার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলেন। চোখের পানিতে তার বুক ভেসে যাচ্ছিল। এর পর খলীফা আমাকে নিয়ে বসরা যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন। বসরা পৌঁছে তিনি ভারাক্রান্ত হৃদয়ে পুত্রের কবর যিয়ারত করলেন। তখন কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সন্তানের উদ্দেশ্যে আরবিতে কয়েকটি কবিতা পাঠ করলেন।

যার অর্থ হলঃ

হে পরকালের মুসাফির!

তুমি দীর্ঘ যাত্রার পথ হতে আর কখনো ফিরে আসবে না

জীবনের শুরুতেই মৃত্যু তোমাকে কেড়ে নিয়েছে

আমার নয়নমনি তুমি আমার অন্তরের শান্তি তুমি

মৃত্যুর সে পেয়ালা পান করেছ

যা তোমার বৃদ্ধ পিতা অচিরেই পান করবে

দুনিয়ার সব অঞ্চলের সব মানুষকে তা পান করতে হবে

এটি মহান আল্লাহ তায়ালার বিধান যার কোন শরীক নেই।

আবু আমের বলেন, সে রাতে আমি স্বপ্নে দেখলাম নূরের এক বিরাট গম্বুজের চারদিকে নূরের অসংখ্য মেঘমালা ভেসে বেড়াচ্ছে। ছেলেটি সে নূরের মাঝ থেকে আমাকে ডেকে বলল, আবু আমের! আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন, তুমি আমার কাফন দাফনের ব্যবস্থা করেছ এবং আমার অসিয়ত রক্ষা করেছ।

 আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, প্রিয়! তুমি কি অবস্থায় আছ এবং তোমার সাথে কি রূপ ব্যবহার করা হয়েছে? জবাবে সে বলল, আমি এমন মালিকের কাছে এসেছি, যিনি অত্যন্ত দয়ালু এবং আমার ওপর সন্তুষ্ট। আমার মালিক আমাকে এমন বস্তু দান করেছেন যা কোন চোখ কোন দিন দেখেনি, কোন কান যার নাম শুনেনি, কোন মানুষ এর কল্পনাও করতে পারবে না। এরপর সে বলল আল্লাহপাক শপথ করে বলেছেন, যে ব্যক্তি দুনিয়া থেকে এমনভাবে বের হয়ে আসবে যেমনভাবে আমি এসেছি, তাকেও আল্লাহ তায়ালা আমার মত নিয়ামত প্রদান করবেন।

খলীফা পুত্রের ঈর্ষান্বিত জীবন-১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।