কারামত সম্পর্কে শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি

আল্লাহ ওয়ালাদের দ্বারা কারামত প্রকাশ হওয়া কোন অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। কারণ, আল্লাহ পাকের কুদরতের নিকট এটা একটি সাধারণ বিষয়। অতীতে আম্বীয়া (আঃ) দ্বারা বহু অলৌকিক ও অস্বাভাবিক ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। ঐ অলৌকিক ও স্বভাব বিরুদ্ধ ঘটনাকে শরীয়তের পরিভাষায় মুজিযা বলা হয় যা পয়গম্বরদের নবুওয়তের স্বপক্ষে অকাট্য প্রমাণ হিসেবে কাজ করেছে। এমনিভাবে ওলীদের হতে প্রকাশিত অস্বাভাবিক ঘটনাকে বলা হয় কারামত।

স্বাভাবিকভাবে নবীরা স্বেচ্ছায় মুজিযা প্রকাশ করতেন। পক্ষান্তরে ওলীরা তাদের কারামত গোপন রাখার চেষ্টা করেন। তবে ক্ষেত্রবিশেষে ওলীরা ও স্বীয় কারামত প্রকাশ করে থাকেন।

পবিত্র কোরআন হাদিসেও কারামতের উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন হযরত মারইয়াম (আঃ) এর একটি ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয়েছে-

كُلَّمَا دَخَلَ عَلَيْهَا زَكَرِيَّا الْمِحْرَابَ وَجَدَ عِندَهَا رِزْقًا ۖ قَالَ يَا مَرْيَمُ أَنَّىٰ لَكِ هَـٰذَا ۖ قَالَتْ هُوَ مِنْ عِندِ اللَّهِ ۖ إِنَّ اللَّهَ يَرْزُقُ مَن يَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ

অনুবাদঃ যখনই যাকারিয়া উক্ত প্রকোষ্ঠ আসতেন তখন তার নিকট পানাহারের বস্তুসমূহ পেতেন এবং বলতেন, হে মারইয়াম! এ খাদ্যসমূহ তোমার নিকট কোথা থেকে এসেছে? তিনি বলতেন, এটা আল্লাহর নিকট হতে এসেছে। নিশ্চয় আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন অধিকার বিনে রিজিক দান করেন। (সূরা আল ইমরানঃ ৩৭)

কোরআনুল কারীমের অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَهُزِّي إِلَيْكِ بِجِذْعِ النَّخْلَةِ تُسَاقِطْ عَلَيْكِ رُطَبًا جَنِيًّا

অনুবাদঃ এবং ঐ খেজুর বৃক্ষকাণ্ড নিজের দিকে ঝাঁকুন, আপনার নিকটে সদ্যপক্ক খেজুর ঝড়ে পড়বে। (সূরা মারইয়ামঃ ২৫)

এছাড়াও হযরত খিজির, জুলকারনাইন, আসিফ ও বিলকিসের বিস্ময়কর ঘটনাসমূহ পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে। তারা কেউই নবী ছিলেন না। সুতরাং ঐ সকল ঘটনা কারামত ছিল।

হাদিস শরীফে এক সন্যাসীর ঘটনা উল্লেখ করে বলা হয়েছে সে এক দুগ্ধপোষ্য শিশুকে জিজ্ঞেস করল, তোমার পিতা কে? সঙ্গে সঙ্গে সে বলে উঠল, অমুক রাখাল আমার পিতা।

এমনিভাবে গুহাবাসীদের ঘটনায় জানা যায়, কোথা হতে একটি পাথর এসে গুহার মুখ বন্ধ করে দিলে গুহাবাসীরা বিশেষ আমল করে তার উছিলায় আল্লাহ পাকের দরবারে দোয়া করলেন। সাথে সাথে পাথর সরে গেল তারা গুহা থেকে মুক্তি লাভ করলেন।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।