কবর আযাবের একটি বাস্তব ঘটনা

কয়েক বছর আগে আমি একবার তাবলীগে জামাতে গিয়েছিলাম। মানচেয়ার কিছু সামনে একটি গ্রামে আমরা পৌঁছলাম। মসজিদে সামান রেখে তালীম শুরু করলাম। মসজিদের বাইরে বেশ কিছু লোক এখানে ওখানে বসেছিলেন। আমাদের কয়েকজন তাঁদের নিকট গিয়ে তাঁদেরকে মসজিদে এসে তালিমে অংশগ্রহণে, অনুরোধ জানালাম। কয়েকজন তখনি মসজিদে আসতে তৈরি হল। একজন বললো, আমি যোহরের নামাজের সময় যাবো এবং কবর আযাবের একটি ঘটনা শুনাবো।

যোহরের নামাজের সময় তিনি এলেন। পরিচয় দিয়ে বললেন, আমি সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত জওয়ান। ১৯৬৫ সালে পাক ভারত যুদ্ধের সময় একটি কবরস্থানে অস্ত্রসস্ত্রের একটি সামরিক সংরক্ষণশালা গড়ে তোলা হয়েছিল। অন্য কয়েকজনের সাথে আমিও সেখানে পাহারার ডিউটিতে ছিলাম। কাজের তেমন চাপ না থাকায় কবরস্থান ঘুরে দেখতে লাগলাম। হাতে বন্দুক ছিল। একটি কবরের পাশে যাওয়ার পর হাড় ভাঙ্গা শব্দ শুনতে পেলাম। বন্দুকের বাঁট দিয়ে কবরের ইট মাটি সরিয়ে ভিতরে তাকালাম। ভয়ে সারা শরীর শিউরে উঠলো। দেখি ভিতরে একটি কঙ্কাল পড়ে আছে। কঙ্কালের উপর ইঁদুরের মত একটি প্রাণী বসে আছে এবং কিছুক্ষণ পর পর কঙ্কালে ঠোকর দিচ্ছে। তাঁর ঠোকর দেওয়ার সাথে সাথে কঙ্কাল নড়ে উঠছে এবং হাড় ভাঙ্গার মত শব্দ হচ্ছে। আমি ইঁদুরের মত প্রাণীটিকে আঘাত করতে চাইলে সে একদিকে সরে গেল। কিছুক্ষণ পর সেটি কবরের বাইরে বের হয়ে আমার দিকে ছুটে এলো। প্রচণ্ড ভয়ে আমি তীব্র গতিতে দৌড়াতে লাগলাম। বেশ কিছু দূর যাওয়ার পর পিছনে তাকিয়ে দেখি সেই প্রাণী তখনও আমাকে তাড়া করছে। কাছে দেখি একটা জলাশয়। আমি সেই জলাশয়ে নেমে পড়লাম।

পিছনে তাকিয়ে দেখি সেই প্রাণী জলাশয়ের কিনারায় এসেছে এবং কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে জলাশয়ের পানিতে মুখ লাগিয়েছে। সাথে সাথে জলাশয়ের পানি আগুনের মত গরম হয়ে গেল। আমি জলাশয়ের বাইরে চলে এলাম। আমার দুই পা জ্বলছিল। হাটা সম্ভব হচ্ছিল না। দুই পা লাল হয়ে গেল। চিৎকার করে সাথীদের ডাকলাম। আমাকে এটোবাবাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হল। সেখান থেকে রাওয়ালপিন্ডির কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হল। আমার দুই পায়ের গোসত পঁচে গেল। সব সময় গোশত থেকে রক্ত এবং পুঁজ বের হত। সেসবে ছিল তীব্র দুর্গন্ধ। চিকিৎসায় কোন কাজ হল না। উন্নত চিকিৎসায় জন্য আমাকে আমেরিকায় পাঠানো হল। কিন্তু কোন ঔষধে কাজ হল না। দুই পায়ের গোশত খসে পড়তে লাগলো। পা থেকে সব সময় মরে পঁচে যাওয়া মানুষের দুর্গন্ধ বের হত। দুই পায়ের গোশত খসে পড়ে শুধু হাড় অবশিষ্ট রইলো। এ কথা বলে সেই জওয়ান আমাদেরকে ব্যান্ডেজ বাঁধা তাঁর দুই পা দেখালো।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।