কবরের আগুন
১৯৫৩ সালের কথা। আমি তখন এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এনাটমি বিষয়ে পড়ানোর জন্য আমাদের একটা কঙ্কাল দরকার ছিল। কলেজ ছিল নতুন। কঙ্কালের সংগ্রহ ছিল খুব কম। আমরা কয়েক বন্ধু নিশতার কলেজ সংলগ্ন কবরস্থানে গেলাম। সেই কবরস্থানকে বলা হত কিল্লাওয়ালা কবরস্থান। কবরস্থানের তত্ত্বাবধায়ককে একটি কঙ্কাল দেওয়ার অনুরোধ করা হল। সে কিছুতেই রাজি হল না। অনেক অনুরোধের পর বাইশ টাকায় একটি কঙ্কাল আমাদের দিতে রাজি হল। রাতের বেলা বাইশ টাকা নিয়ে চটে ঢাকা একটি কঙ্কাল আমাদের দিতে রাজি হল। তত্ত্বাবধায়ক এভাবে বেশ কিছু কঙ্কাল বিক্রি করেছিল।
কিছুদিন পর আমার একটি কঙ্কালের প্রয়োজন হল। আমি কবরের তত্ত্বাবধায়কের সাথে দেখা করলাম। সে মসজিদে বসেছিল। আমি অনেক অনুরোধ করলাম কিন্তু সে দিতে অস্বীকার করলো। তাঁর অস্বীকার করার কারণ জিজ্ঞাসা করায় সে আমাকে বলল, কিছু দিন আগে একটি কঙ্কাল তোলার জন্য কবর খুঁড়ছিলাম। সেই কবর থেকে একটি অগ্নিশিখা আমাকে তাড়া করছিল। ভয় পেয়ে আমি মসজিদে এসে প্রবেশ করলাম। মসজিদে প্রবেশ করার পর সেই অগ্নিশিখা ফিরে গেল। আমি তাওবা করছি আর কোনো দিন কবর থেকে কঙ্কাল চুরি করবো না।
আমি আরো কিছু জানতে চাইলে সে আমাকে বললো, টাকার লোভে কঙ্কাল চুরির জন্য একবার একটি কবর খুঁড়ে দেখি অনেক প্রশস্ত। কবর থেকে সুগন্ধি বের হচ্ছে। একজন বুজুর্গ ব্যাক্তি কবরের ভিতর বসে কোরআন তিলাওয়াত করছেন। এ দৃশ্য দেখে আমি কবরের মাটি চাপা দিয়ে দিলাম।