এক গাভীর ঘটনা
হাদিসে বর্ণিত, এক গাভীর উপর কিছু বোঝা চাপিয়ে দিলে সে বলে উঠল, বোঝা বহন করার জন্য আল্লাহ তায়ালা আমাকে সৃষ্টি করেনি। বরং আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে কৃষিকর্ম করার জন্য। গাভীর মুখে এ কথা শুনে উপস্থিত সকলে আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলল- সুবহানাল্লাহ! বোবা প্রাণী ও কথা বলতে পারে? পরে এ ঘটনা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে জানানো হলে তিনি বলেন- ঘটনা সম্পূর্ণ সত্য। আমি আবু বকর, উমর (রাঃ) এর সত্যায়ন করছি।
হাদিস শরীফে বর্ণিত আবু বকর (রাঃ) ও তাঁর মেহমানের খাবারের পাত্র হতে লোকমা গ্রহণের সাথে সাথে পাত্রের খাবার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। অবশেষে একে একে সকলে তৃপ্তির সাথে আহার করার পর এ ঘটনা সম্পর্কে হযরত আবু বকর (রাঃ) স্বীয় স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, এর রহস্য আমার জানা নেই, আমি শুধু এটুকু বলতে পারি যে, পূর্বেকার তুলনায় খাবার তিনগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলছেন, পূর্ববর্তী উম্মতদের মধ্যে যাদের উপর এলহাম নাযিল হত। আমার উম্মতের মধ্যে যদি এমন কেউ থাকে, তবে সে ওমর।
বর্ণিত আছে যে, হযরত ওমর (রাঃ) সারিয়ার নেতৃত্বে একদল মুজাহিদ প্রেরণ করেন কোন এক অভিযানে। যথা সময়ে রণাঙ্গনে তুমুল যুদ্ধ শুরু হল। শত্রুরা কৌশলে কয়েকজন সৈন্যকে পাহাড়ে লুকিয়ে রাখল, যেন তারা ধোঁকা দিয়ে মুসলিম বাহিনীর উপর অতর্কিতভাবে হামলা করতে পারে। মুসলমানরা কাফেরদের এ প্রতারণায় শিকার হওয়ার মুহূর্তে কে যেন বলে উঠল, হে সারিয়া! পাহাড়ের দিক থেকে সতর্ক থাক। ঐ কণ্ঠ ছিল হযরত ওমরের (রাঃ)। রণাঙ্গন হতে ফিরার পর যুদ্ধের বিবরণ দিয়ে এক ব্যক্তি বলল- শত্রু বাহিনী আমাদেরকে পিছু হটাতে শুরু করলে অদৃশ্য হতে কে যেন সেনাপতি সারিয়ার নাম নিয়ে যুদ্ধের কৌশলগত দিক নির্দেশনা করল। আমরা ঐ নির্দেশ অনুযায়ী পাহাড়কে পিছনে রেখে যুদ্ধ করতে লাগলাম। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের করুনা ও কৃপায় যুদ্ধে আমরা বিজয় লাভ করলাম।
উল্লেখিত ঘটনাটি হযরত ওমর (রাঃ) এর একটি কারামত তিনি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক দূরে খুৎবা দিচ্ছিলেন। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন স্বীয় কুদরতে যুদ্ধক্ষেত্রের দৃশ্য হযরত ওমরের চোখের সামনে তুলে ধরলেন। ঐ সময় তিনি মুসলিম বাহিনী পিছু হটার দৃশ্য দেখে তাঁর কারণ অবলোকন করে তাদেরকে সতর্ক করে দেন। আর আল্লাহর কুদরতে বাতাস তাঁর বাণীকে হযরত সারিয়া (রাঃ) এর কানে পৌঁছে দেয়।
হযরত খোবায়ের (রাঃ) সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, শত্রুদের জেলখানায় হাতে শিকল বাধা অবস্থায় আঙ্গুর খেতে দেখা গেছে। অথচ তখন আঙ্গুরের মৌসুম ছিল না।
কথিত আছে যে, হযরত আব্বাদ ইবনে বিশর এবং উসাইয়্যাদ বিন হুজাইর (রাঃ) এক রাতে রাসূলে আকরাম (সাঃ) এর খেদমতে হতে উঠে আপন আপন গৃহের দিকে রওয়ানা হলেন, রাতটি ছিল গভীর অন্ধকার। পথে বের হওয়া মাত্র তাঁরা দেখতে পেলেন, উজ্জ্বল বাতির মত দুটি বস্তু তাদের আগে আগে চলছিল। কিচু দূর অগ্রসর হবার পর তারা যখন পৃথক হয়ে যার যার পথ ধরলেন, তখন আলো দুটি ও পৃথক হয়ে দু’জনের সামনে সামনে চলতে লাগল। অবশেষে নিজ নিজ ঘরে পৌঁছাবার প ঐ আলো অদৃশ্য হয়ে যায়।