একটি জীন তাড়ানোর গল্প

আজকে আপানাদের সাথে একটি ছোট ঘটনা শেয়ার করবো। গল্প বলবো না। কারন এটি একটি সত্য ঘটনা। ঘটনাটা ঘটে আমার দাদার বাড়িতে।
একবার খবর পেলাম আমার চাচাতো ভাইকে নাকি জীনে ধরেছে। তাও যেনতেন জীন না। সে নাকি ভয়ঙ্কর আছর করেছে।
ছেলেটিকে এখন সারাদিন বেঁধে রাখা হয় রশি দিয়ে। এরই মাঝে সে সেইসব রশি ছিঁড়ে কয়েকবার করে মানুষকে আক্রমন করেছে।
আর রশিগুলো যেনতেন রশি নয়। ভারি রশি, যেইসব দিয়ে বড় বড় লঞ্ছ পাড়ে লাগানো হয় সে রকম।
খবর শুনে খারাপ লাগলো, পাশাপাশি কৌতূহল হল। ভাবলাম, আপাতত কোনও কাজ নেই।
গিয়ে কয়েকদিনের জন্য ঘুরে আশা যায়। আর ঘটনা যদি আসলেই সত্য হয় তাহলে তাকে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা উচিত।
আমার ধারণা ছিল এটা তেমন গুরতর কিছু নয়। মানুষ রঙ চং মাখিয়ে ছড়াচ্ছে। যাই হোক, বাড়িতে গেলাম বুধবার সকাল বেলা।
আমার চাচাতো ভাইয়ের অবস্থা যথেষ্ট করুন। অনধকার একটা ঘরের মধ্যে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা।
জানালার শিখ ধরে দাঁড়িয়ে বাইরে দেখছিল। আর সমানে জানালা ঝাকাচ্ছিল।
সাহস করে এগুলাম তার সাথে কোথা বলার জন্য। কিন্তু আমাকে দেখেই খেঁকিয়ে উঠলো।
কুৎসিত কিছু গালি দিয়ে উঠলো। ভ্যাবাচেকা খেয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
এমনিতেই এতো রাস্তা ভ্রমন করে এসেছি, তার উপর এমন অভ্যর্থনা, ঠিক যেনও মানিয়ে উঠতে পারছিলাম না।
জানতে পারলাম, আগামীকাল বৃহস্পতিবার এক হুজুর দিয়ে ওর জীন ঝারান হবে। যথাসময়ে হুজুর এলেন।
প্রথমে ভাবছিলাম, থাকবো না। কিন্তু কৌতূহলের কাছে হার মানলাম। গেলাম জীন তারানো দেখার জন্য।
প্রথমে আমার চাচাতো ভাইকে শক্ত রশি দিয়ে খাটের পায়ার সাথে বাঁধা হল। এরপর ধূপ জ্বালা হল ঘরটি পূর্ণ করে দেয়া হল ধুয়ায়।
আমার ভাই কিছুক্ষণের জন্য ঘোরের মধ্যে চলে গেলো। হুজুরের সাথে তার বাক্যালাপের কিছু অংশ তুলে ধরছি।
হুজুরঃ সাড়া দে। **********(গালি) {অন্য কেউ বলল, কারন সেহতা আমার ভাইয়ের গলা ছিল না} হুজুর (ঝারু দিয়ে বাড়ি লাগালেন) বললেনঃ এই দেহ তোর ছাড়তে হবে। ছারমু না।
আমি এরে ছারমু না। আমারে খেপাইস না। জানে বাছবি না। হুজুরঃ জানে বাছব নাকি পড়ে দেখা যাবে। এখুনি দেহ ছেড়ে বের হ।
সংলাপের পুরোটা উল্লেখের প্রয়োজন নেই। তবে কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছিল সেদিন।
• হটাত টিনের চালে ব্যাপক হারে ঢিল পড়তে লাগলো, সেই সাথে যেনও এক সাথে শত শত সিংহ গর্জন করে উঠলো।
• আমার চাচাতো ভাই হটাত দাঁড়িয়ে পড়লো। কিন্তু তাকে যেই অবস্থায় বাঁধা হয়েছিলো, তাতে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।
• ঘরের মধ্যে অদ্ভুত কিছু একটা ঘটছিলো। কারন সবাই খুব অশস্থি বোধ করছিলাম। শুধু একা আমি নই, অনেকেই বলল, শরীর ভার ভার ঠেকছে।
• প্রায় ২ ঘণ্টা নানা কসরত করার পর জীন তারান সম্ভব হয়। ঠিক সেই সময় আমার ভাই এবং হুজুর একি সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
• জীন যাওয়ার সময় আমাদের বারিরি পাশের একটা গাছ উপড়ে দিয়ে যায়। এতো বড় গাছ যে উপ্রান সম্ভব টা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।
• এরপর আমার ভাই সুস্থ হয়ে উঠে, কিন্তু তাকে অনেক তাবিজ এবং সুতো পড়তে হয়। বাক্তিগত স্বার্থে নাম, জায়গার নাম দেয়া সম্ভব নয়। কারন, ঘটনাটা আমরা ছড়াতে চাচ্ছি না।

বাঁদর আর পাতিহাঁস

চাবুক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *