একটি অদ্ভুত ঘটনা

আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার জীবনে ঘটে যাওয়া এক আর্শ্চয ঘটনা। তখন গ্রামে থাকতাম, বয়সও খুব বেশী একটা হয়নি। ক্লাস থ্রি তে পড়ছি। থাকতাম যৌথ পরিবারে। দাদু, ছোট আব্বুরা, এবং আমরা। আমরা তিন ভাই, এবং আমার দুই চাচাতো বোন একসাথে ঘরের সামনের বারান্দায় পড়তাম। আমার বড় ভাই পড়ত ক্লাস সিক্সে, মেজ ভাই ফাইভে। রাতের বেলা সবাই একসাথে সুর করে পড়তাম। ছোট ছিলাম বলে সবার মাঝে ভুতের ভয় কাজ করতো, তাই দরজা, জানালা ভালো করে বন্ধ করে আমরা পড়তে বসতাম।

তো একদিন রাত্রিবেলা সবাই পড়তেছি। আব্বুরা সবাই রান্নাঘরে গল্প করতেছেন। দরজা খিল এবং হুড়কো দিয়ে আটকানো। আমরা শব্দ করে পড়তেছি, দরজাটা আমাদের পড়ার টেবিলের একদম পাশেই। আমরা পড়তেছি এমন সময় সবাই হঠাৎ খেয়াল করলাম দরজার খিল, হুড়কো এক এক করে খুলে যাচ্ছে, এ এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। কেউ যেন রিমোট এর মাধ্যমে দরজাটা খুলে দিচ্ছে। একসময় দরজাটা সম্পূর্ণ খুলে গেল। এবং বাহিরেও দেখা গেল কেউ নেই। আমরা প্রচণ্ড ভয় পেলাম।

ভয়ে আমরা এক দৌড়ে সবাই রান্নাঘরে চলে গেলাম যেখানে আব্বুরা ছিলেন। আমরা তাদেরকে সব কথা খুলে বললাম। তারা আমাদের কথা বিশ্বাস করলেন না, উল্টো আমাদের বকা দিলেন পড়া না পড়ে সবাই এখানে চলে আসার জন্য। আমরা কি করব কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। দোয়া, দরুদ যা জানি সব পড়ে বুকে ফু দিলাম সবাই। এবং নিশ্চিত হলাম আমরা সবাই এই ঘটনাটা দেখেছি, এবং দরজা এখনো খোলা।

আমরা ভয়ে কেউ পড়ার টেবিলে বসতে পারছিলাম না। শেষে সবাই সাহস করে গেলাম সেখানে। আমার মাথায় একটা আইডিয়া খেলে গেল। বড় ভাইয়াকে বললাম উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে আযান দিতে। সে চেয়ারের উপর দাঁড়িয়ে আজান দিতে শুরু করল।

সবচেয়ে আর্শ্চয্যের বা ভৌতিক ঘটনাটা ঘটল ঠিক তখনই, যেই না বড় ভাই “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলে আজান শেষ করলেন অমনি দরজা আগের মতো খিল, হুড়কো লেগে বন্ধ হয়ে গেল। নিজের চোখে বিশ্বাস করতে পারলাম না। পৃথিবীতে এমন ঘটনাও ঘটে! আমার একজোড়া চোখ এ ঘটনাকে হ্যালুসিনেশন বলে চালিয়ে দিতো, কিন্তু পাঁচ জোড়া চোখ তো আর ভুল দেখে নাই।

অন্য কেউ হলে চাপা বলে বিশ্বাস করতাম না, কিন্তু এতগুলো লোক আমরা! ঘটনাটা এখনো মনে পড়লে গা শিউরে উঠে। এর কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা আমি আজো দাঁড় করাতে পারি নি। ঐদিন আর কেউ পড়তে বসতে পারি নাই অজানা আতঙ্কে।

চড়াই রানীর গল্প

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *