উস্তাদজীর কান্না
বর্তমান যুগে উন্নতি মানে হলো একজনের উন্নতি এবং তার উন্নতির কারণে দশ জনের অবনতি। এ ব্যাপারে একটি ঘটনা বলছি।
এক উস্তাদ এক লোকের বাড়িতে ছেলে-মেয়েকে আরবী পড়াতেন। বাড়িওয়ালা বিদেশে গিয়ে বিরাট এক চাকুরী পেলো। অনেক টাকা বেতন। এ সুসংবাদ জানিয়ে সে বাড়িতে চিঠি লিখলো। চিটি কেউ পড়তে পারে না। চিঠি পড়ে শোনাবার জন্য অবশেষে তারা উস্তাদজীর কাছে গেল। উস্তাদজী চিঠি পড়ে কাঁদতে লাগলেন। বাড়ির সবাই উস্তাদজীকে কাঁদার কারণ জিজ্ঞেস করলো। তিনি বললেন, তোমরাও কাঁদ- পরে বলবো।
কান্নার আওয়াজ শুনে পাড়ার সবাই ছুটে আসলো। কান্নার কারণ কি জিজ্ঞেস করলো। উস্তাতজী বললেন, তোমরাও কাঁদ।
কাঁদতে কাঁদতে যখন সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এবং কান্নার আওয়াজ স্তিমিত হয়েছে তখন সবাই উস্তাদজীকে জিজ্ঞেস করলো, হুজুর এ, কান্নার কারণ কি? উস্তাদজী বললেন, বাড়িওয়ালার চিঠি এসেছে। তিনি বড় ধরনের একটা চাকুরী পেয়েছেন এবং অনেক টাকা বেতন।
লোকেরা বলল, এটাতো আনন্দের কথা। কান্নার তো কোন কারণ দেখছি না।
উস্তাতজী বললেন, তোমরা বুঝতে চেষ্টা কর না! যখন এত টাকা বেতন হয়েছে তখন তিনি ছেলেদেরকে আর আরবী পড়াতে পারবেন না। বাড়িতে ইংরেজি মাষ্টার রাখবেন। আমার চাকুরী যাবে। তাই আমি কেঁদেছি।
মহল্লায় এসে যখন তিনি বসবাস করবেন তখন তার আরবী ঘোড়া এবং মটরগাড়ী রাখার জন্য লোকদের উচ্ছেদ হবে। তার বাড়িটি বিরাট হবে। আর পাড়ার লোক হবে ভিটা ছাড়া, রাস্তা ছাড়া। সুতরাং পাড়ার সবাই না কেঁদে পারে না।
বিশেষ ব্যক্তির যে ধারণা যে সাধারণ মানুষের অবনতির কারণ ঘটনাটি তার একটু সুন্দর উদাহরণ। (আল- এফযাতুল য়্যাওমিয়্যাহ খন্ড-৮ পৃষ্ঠা-২৯)