আল্লাহর মোহাব্বত
হযরত জুন্নন মিশরী (রহঃ) বলেন, একদা বনী ইসরাঈলের এক মহিলার সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়। তার পরণে ছিল একটি বড় জোব্বা, মাথায় উড়নী এবং হাতে ছিল একটি লাঠি। আমি তাকে সালাম করলে সে আমাকে উত্তর দিয়ে বলল, মহিলাদের সাথে পুরুষদের কি প্রয়োজন? আমি বললাম, আমি তোমার দ্বীনি ভাই- জুন্নন। উত্তরে সে মারহাবা বলে আমাকে স্বাগত জানাল। আমি তার অবস্থা জিজ্ঞেস করলে সে বলল, আমি যখন কোন শহরে গমন করি তখন সেখানে আমার ।” মাহবুবে হাকীকীর” নাফরমানী হতে থাকলে আমি সেই শহর ত্যাগ করে অন্য কোন পবিত্র শহরে চলে যাই এবং মনের সকল আবেগ অনুভূতি নিয়ে আল্লাহ পাকের নিকট মোনাজাত করি। আমি পূনরায় তাকে জিজ্ঞেস করলাম। মোহাব্বতের হাকিকত কি? সে বলল, সুবহানাল্লাহ! তুমি একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি ও বিখ্যাত ওয়ায়েজ হয়েও আমার নিকট মোহাব্বতের হাকীকত জিজ্ঞেস করছ। শোন প্রেমিকের অন্তরে মোহাব্বত শুরু হবার সাথে সাথে সে নানাবিধ দুঃখ দুর্দশার আক্রান্ত হতে থাকে। মোহাব্বত বৃদ্ধির সাথে সাথে তার দুর্দশাও বৃদ্ধি পেতে থাকে।
এভাবে প্রেমের আগুনে জ্বলে পুড়ে দগ্ধীভূত হৃদয় যখন পবিত্রতা প্রাপ্ত হয় তখন আল্লাহ পাক তাকে স্বীয় মোহাব্বতের অমৃত সূধা পান করান। এ সময় বান্দা আল্লাহ পাকের মোহাব্বতের শরাবে অবগাহন করে তৃপ্ত হয়। এ কথা বলেই সে বিকট শব্দে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। দীর্ঘ সময়ের পর জ্ঞান ফিরে পেয়ে বলল, হে আমার মাহবুবে ইলাহী দু’কারনে তোমার সাথে আমার মোহাব্বতের সম্পর্ক । প্রথমঃ আমার নিজের প্রয়োজনে আমি তোমাকে ভালবাসি। সেই ভালবাসার স্বাভাবিক দাবি অনুযায়ী আমি তোমার জিকির করি। জিকির আমাকে তুমি ছাড়া অন্য সব বস্তু হতে পৃথক করে রেখেছে।
দ্বিতীয় কারণ হল, যেহেতু সেই ভালবাসা তোমার প্রাপ্য, সুতরাং এর বিনিময়ে তোমার ও আমার মধ্যস্থল হতে পর্দা উঠিয়ে ফেল যেন আমি তোমাকে দেখতে পায়। আর এই উভয় প্রকার মোহাব্বত ও ভালবাসার ব্যাপারে আমার নিজের কোন কৃতিত্ব নেই। এটা তোমার অনুগ্রহ ছাড়া আর কিছুই নয়।