আরুণির কর্তব্যনিষ্ঠা

অনেক অনেক কাল আগের কথা। শিক্ষার্থীরা গুরুগৃহে গিয়ে থাকত। লেখাপড়া শেষ করে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেত। শিক্ষার্থীরা গুরুগৃহকে নিজেদের বাড়ির মতোই মনে করত। গুরুও শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তানের মতোই ভালবাসতেন। এমনি এক শিক্ষার্থী ছিলেন আরুণি। তাঁর গুরু ছিলেন ঋষি ধৌম্য। তখন বর্ষাকাল। বর্ষার জলের তোড়ে মাঠে ঋষি ধৌমের একখন্ড জমির আল ভেঙে গিয়েছিল। ঋষি ধৌম্য আরণিকে বললেন, ‘যাও জমিটার আল বেঁধে এসো।

আরুণি মাঠে গেলেন জমির আল বাঁধতে। কিন্তু জলের কী তীব্র বেগ! কিছুতেই আরুণি আল বাঁধতে পারলেন না। তখন নিজেই শুয়ে পড়ে জলের তোড় ঠেকালেন। এদিকে দিন পেরিয়ে নামল সন্ধা। ঋষি ধৌম্যের অন্য শিক্ষার্থীরা সব ফিরে এসেছেন। কিন্তু আরুণির দেখা নেই। চিন্তিত ঋষি ধৌম্য। তিনি অপর দুই শিষ্য উপমন্যু আর বেদকে নিয়ে গেলেন সেই জমির কাছে। আরুণির নাম ধরে চিৎকার করে ডাকতেই আরুণি উঠে এলেন।

জানালেন, তিনি নিজে শুয়ে পড়ে জমির ভেতরে জল ঢোকা বন্ধ করেছেন। আরুণির যে-কাজ দেওয়া হয়েছিল, আরুণি তা যত্নের সঙ্গে পালন করেছে। আরুণির কাজের প্রতি এই যে মনোযোগ, এরই নাম কর্তব্যনিষ্ঠা। ঋষি ধৌম্য খুব খুশি হলেন। আরুণিও তাঁর কর্তব্যনিষ্ঠার গুণে বিখ্যাত হয়ে রইলেন। আমরাও আরুণির মতো হব। অর্জন করব কর্তব্যনিষ্ঠার মতো নৈতিক গুণ।

আরো পড়তে পারেন...

রান্না করলেন রাজপুত্র — যশোধরা রায়চৌধুরী

রাজা, রানি, রাজপুত্র, রাজকন্যা কে নিয়ে এক সুখের সংসার। কোন গোলমাল নেই,আবার গোলমাল আছেও বলা…

ঘ্যাঁঘাসুর-২য় অংশ

‘তাই হোক’ বলিয়া একহাত লম্বা মানুষ চলিয়া গেল। যদুও নৌকা গড়িতে লাগিল। কিন্তু সে যত…

বুড়ী আর তার খড়ের ষাঁড় (উক্রেইনের উপকথা)

কোন এক সময়ে এক গাঁয়ে এক বুড়ো আর বুড়ি থাকত। বুড়ি ঘরে বসে চরখাতে সুতো…