আত্নহুতির ইচ্ছা প্রকাশ-শেষ পর্ব

এটা অপেক্ষা দুর্ভাগ্য আর কি থাকতে পারে? আমাদের উপরে আল্লাহ তায়ালা খুশী থাকলে কোনক্রমেই এরূপ হত না। জানি না তাঁর দরবারে কোন অন্যায় করেছি, কোন মহাপাপে তিনি আমাদের প্রতি নারাজ হয়েছেন আর তার জন্য আমাদের এই দুর্দশা ঘটেছে। এভাবে কেঁদে কেঁদে মোজাহাম পত্নী বিলাপ করতে লাগলেন।

মোজাহাম তখন ভগ্নকণ্ঠে পত্নীকে বললেন, আছিয়ার মাতা! আফসুস করিও না, প্রভু আল্লাহর ইচ্ছার উপরে নিজেদের সব মঙ্গল অমঙ্গল নির্ভর করে। আমরা কিছুই বুঝি না, কিছুই জানি না, আল্লাহর প্রতিটি কাজের মধ্যে নিগূঢ় উদ্দেশ্য আছে। তিনি কোন উদ্দেশ্য কি করেন তা কেবল তিনিই বলতে পারেন। বাহ্যতঃ যাহা মানুষের কাছে অশুভ কিংবা অকল্যাণকর রুপে অনুমিত হয় তারই ভিতরে হয়ত অসীম মঙ্গল রয়েছে। আছিয়ার মঙ্গল বিধান করা, তাকে উপযুক্ত পাত্রের কাছে সমর্পণ করা আমাদের এক মহা দায়িত্ব বটে, তবে অবস্থার গতি যা দেখছি তাতে মনে হয় আমরা সে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হব না।

তা যদি আল্লাহ তায়ালার মর্জী হয়ে থাকে আমাদের কি করার আছে বল? আছিয়া অবস্থা বুঝে নিয়েই আত্নাহুতির পথ বেছে নিতে চায়। তা যে আমার অন্তরে কত বেদনাদায়ক ঘটনা তা তুমি ভাল ভাবেই বুঝতেছ। কিন্তু তাকে বাধা দান করব না। আল্লাহ আমাদিগকে যে দিকে চালিত করবেন আমরা তাঁর উপরে ভরসা করে সে দিকেই চালিত হতে থাকব, অদৃষ্টের লিখা নিশ্চয় ঘটবে, উহা কোনরূপে খন্ডন হবে না।

স্বামীর এ নৈরাশ্যবাঞ্জক এবং দুর্বল বাক্য শুনে আছিয়ার মাতা হৃদয়ে বড়ই আঘাত পেলেন। তিনি কোন প্রকারেই মনকে প্রবোধ দিতে পারলেন না। তাই এক গুণবতী নারী হওয়া সত্ত্বেও তিনি মনের দুঃখে বলে ফেললেন, আছিয়ার এরুপ আত্নাহুতিদানের পূর্বে হে আল্লাহ আমাদের তুমি দুনিয়া হতে তুলে নিয়ে যাও! এ কথা আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার নির্দশন নয়, এটা একান্ত বিক্ষুব্ধ মনের চরম ক্ষেদোক্তি।

এটা আল্লাহর প্রতি অভিমান স্বরূপ। অতএব মোজাহাম তাঁর পত্নীকে ধমকের সাথে বললেন, এ তুমি কি বলতেছ? আল্লাহ এতে নারাজ হতে পারেন। আর কখনও এরূপ বাক্য মুখে আনিও না। স্বামীর কথায় তিনি নীরব হয়ে রইলেন; কিন্তু তাঁর দু চক্ষে অশ্রুর ধারা গড়িয়ে পড়তে লাগল।

আত্নহুতির ইচ্ছা প্রকাশ-প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।