আছিয়ার স্বামীর নির্দেশ পালন
যথাযময় ফেরাউনের পত্র নিয়ে বাহক এসে আছিয়ার কাছে উপস্থিত হল। আছিয়া পত্র পেয়ে পরম ভক্তির সাথে তা চোখে মুখে স্পর্শ করলেন। অতঃপর তিনি মহা ভাবনার মাঝে নিপতিত হলেন যে, এখন তিনি কি করবেন! স্বামী বর্তমানে মিশর দেশের অধিপতি। তার সকাশে গমন করলে বিরাট প্রাসাদভবনে শত সহস্র দাসী পরিবেষ্টিত হয়ে মহাড়ম্বরে দিন কাটাতে হবে। বহু পার্থিকব ঝামেলা ও দায়িত্ব তাঁর মাথায় চেপে বসবে। এর ভিতরে সৃষ্টিকর্তার উপাসনা ও ধ্যান ধারণায় লিপ্ত হবার সময় মিলবে কি?
সাথে সাথে এ চিন্তাও তাঁকে ব্যাকুল করে তুলল যে, স্বামীর নির্দেশ তাকে পালন করতেই হবে। স্বামী নারীদের পরম শ্রদ্ধেয় জন। স্বামীর খুশী ও সন্তুষ্টিই নারীদের মুক্তিলাভের প্রধান উপায়। স্বামী জ্ঞানী, অজ্ঞান, ধার্মিক, অধার্মিক যাই হোক না কেন তা বিচারের অধিকার নারীদের নেই। নারীগণ শুধু স্বামীর আদেশ মেনে চলবে, তা যতই কঠিন কিংবা রূচিবিরুদ্ধ হোক।
ক্রমে এ চিন্তাই তাঁর হৃদয়ে প্রবল হয়ে উঠল। যদিও বা তিনি পার্থিব ঝঞ্চাট এড়াতে গিয়ে শ্বশুর প্রদত্ত সব সম্পদ নিঃস্ব লোকদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছিলেন আর ঠিক সে একই উদ্দেশ্যে বাদশাহ স্বামীর কাছে যেতে দ্বিধাগ্রস্থ হয়েছিলেন। তবু তাঁর মনে স্বামীর আদেশ রক্ষার প্রয়োজনীয়তা সর্বাপেক্ষা বড় হয়ে দেখা দিল। এবং তা সকল দ্বিধা সঙ্কোচ ও ভাবনা ও চিন্তার অবসান ঘটিয়ে দিল।
তখন আর তিনি বিলম্ব না করে স্বামী সন্নিধানে যাত্রার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত হয়ে গেলেন। অতঃপর যথাসময়ে আগন্তকগণের সাথে গিয়ে স্বামী সন্নিধানে উপস্থিত হলেন। এভাবে বহুদিন পরে আবার উভয়ের মিল ঘটল।