আছিয়ার মনোভাব-পর্ব ২
আছিয়ার মনোভাব-পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তোমার ঐ বদনখানায় হাসি না দেখলে আমার নিকট ঐগুলো সব মিথ্যা হয়ে যায়। আমার হৃদয় মধ্যে কঠিন বেদনার সঞ্চার হয়। মনের শান্তি একবারে লোপ পেয়ে থাকে। বল প্রিয়তমা! তোমার অন্তরে কোন দুঃখ জাগিয়েছে? বিশ্বাস কর তোমার সে দুঃখ মোচন করতে যদি আমার এ রাজ্য, সম্পদ সমস্ত কিছু বিলিয়ে দিতে হয় তবু আমি তাতে পিছ পা হব না।
আছিয়া বললেন, প্রিয় স্বামী! আমি জানি আমাকে আপনি প্রাণ দিয়ে ভালবাসেন, আমার খুশীর জন্য আপনি সকল কিছুই করতে চান তাও আমি বিশ্বাস করি। আর সে বিশ্বাসের জোরেই আজ আপনার কাছে বলছি, প্রিয়তমা! সত্যিই আপনি আমার হৃদয়ের দুঃখ দূর করবেন কি?
ফেরাউন বলল, প্রিয়তমা! এ তুমি কোন ধরণের কথা বলতেছ আমি যে কিছুই বুঝতেছি না। কোন লোক কি তোমাকে কুব্যবহার দ্বারা অপমান করেছে, না কোন কথা বা কাজের দ্বারা তোমার অন্তরে আঘাত দিয়েছে? যদি তা হয় শীঘ্রই প্রকাশ কর। সে যে কোন ব্যক্তি হোক না কেন তাকে আমি চরম শাস্তি প্রদান করতঃ তোমার সন্তুষ্টি বিধান করবো।
আছিয়া বললেন, স্বামী! না, আমাকে কেউ অপমান করে নাই, তবু আমি বড় দুঃখিনী। কেন তা শুনবেন? তবে শুনুন, প্রিয়তম! প্রকৃত সাধ্বী নারীরা স্বামীর বিপদ দেখতে পেলে চিন্তিতা না হয়ে পারে না। সে সময় তাদের মন কোন কিছুতেই প্রফুল্ল থাকে না এবং বদনেও কোনরূপ হাস্য ফুটে উঠে না। আমার অবস্থাও তদ্রুপ হয়েছে। আমাকে আপনি প্রফুল্ল দেখবেন কি করে?
ফেরাউন আছিয়ার কথার অর্থ বুঝতে না পেরে বলল, আছিয়া! তুমি প্রকাশ করে বল, তোমার স্বামীর কি বিপদ দেখতেছ?
আছিয়া বললেন, স্বামী! আপনি মহা জ্ঞানী ও বিচক্ষণ লোক, আপনি না বুঝেন এমন নহে। তবু সকল কিছুই বুঝে-শুনে কেন যে এমন বিপদের পথে পা বাড়াচ্ছেন আমি বুঝতেছি না।
ফেরাউন বলল, প্রিয়তমা! কথাটি খুলে বল। তোমার ইঙ্গিত আমার নিকট পরিষ্কার হচ্ছে না। কথার মধ্যে জড়তা রেখো না।
আছিয়া এবার পরম সাহসে ভর করে বলতে আরম্ভ করলেন, স্বামী! আপনি স্বীয় অসীম ক্ষমতা ও অদৃষ্টের জোরে আজ এক বিশাল সাম্রাজ্যের মহাপরাক্রমশালো সম্রাট। অফুরন্ত ঐশ্বর্যের অধিকারী।